জামালপুরে হাইব্রিড জাতের সবজি আবাদে ঝুঁকছেন চাষিরা

Jamalpur-1-220x145জামালপুরের নান্দিনা ও চরাঞ্চলে উচ্চ ফলনশীল হাইব্রিড জাতের সবজি আবাদে চাষিরা ক্রমান্বয় ঝুঁকে পড়ছেন। উন্নত সড়ক যোগাযোগ, স্বল্প উত্পাদন খরচ, চাহিদা বেশি, অধিক ফলন, সন্তোষজনক মূল্য পাওয়ায় কৃষকরা এই জাতের সবজি চাষে মনোযোগী হচ্ছেন। সরেজমিনে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, পুরাতন ব্রহ্মপুত্র নদের বিস্তৃর্ণ বালুর চরে বিশেষ করে লক্ষ্মীরচর, তুলশীরচর, রানাগাছা, শরিফপুর ও নরুন্দি ইউনিয়নের বিভিন্ন গ্রামে প্রায় এক হাজার হেক্টর জমিতে চিচিঙ্গা, ঝিঙ্গে, পটল, বরবটি, মরিচ, করলা, মিষ্টি কুমড়া, চাল কুমড়া,মূলা, লাউ শাক, ডাঙ্গা (ডাটা), লাল শাক, শসা, ঢেঁরস ইত্যাদি আবাদ হয়েছে। লক্ষ্মীরচর এলাকার সবজি চাষি কৃষক গোলাম মোস্তফার সাথে কথা হলে তিনি বলেন, আগে আমরা সামান্য জমিতে নিজের ও স্থানীয় চাহিদা মেটানোর জন্য এসব সবজি আবাদ করতাম। কিন্তু রাজধানীসহ দেশের নানা প্রান্তে এসব সবজির চাহিদা বেশি থাকায় সম্পূর্ণ বাণিজ্যিক ও লাভের চিন্তা মাথায় রেখে গত প্রায় ৩বছর ধরে চাষ করছি। তিনি আরও জানান, আমি এবার দেড় বিঘা জমিতে চিচিঙ্গা ও এক বিঘা জমিতে ঝিঙ্গে আবাদ করেছি। প্রতি ৪ শতাংশ জমিতে ১০ গ্রাম ওজনের হাইব্রিড বীজ ব্যবহারের প্রয়োজন। দশ গ্রাম ওজনের চিচিঙ্গা ও ঝিঙ্গে বীজের খুচরা মূল্য ১১০-১২০ টাকা। জাঙ্গলা, কামলাসহ ৪ শতাংশ জমি আবাদ করতে সব মিলিয়ে খরচ হয় ৮শ’ থেকে ১হাজার টাকা। এভাবে এক বিঘা (৩০ শতাংশ) খরচ প্রায় ৭ থেকে ৮ হাজার টাকা। প্রতি সপ্তাহে ক্ষেত থেকে চিচিঙ্গা তুলে বিক্রি করা যায়। আবহাওয়া অনুকুলে ও ফলন ভালো হলে খরচ বাদে প্রতি বিঘায় ১৫ থেকে ২০ হাজার টাকা মুনাফা পাওয়া যায়। এলাকার চাষি আব্দুল মোতালেব ও আক্তার হোসেন জানান, প্রতি বিঘা জমিতে ঝিঙ্গে আবাদ করতে চিচিঙ্গার মত একই টাকা খরচ হয়। তবে বাজারে ঝিঙ্গের দাম বেশি পাওয়া যায় বলে কৃষকরা জানান। চলতি মে মাসের প্রথম দিকে প্রতিমণ ঝিঙ্গে পাইকারী বিক্রি হয়েছিল ১২শ’টাকা মণ। এখন দাম কমে ৫থেকে ৬শ’ টাকায় নেমে এসেছে। এক বিঘা ঝিঙ্গে আবাদ করে খরচ বাদে ২০ থেকে ২৫ হাজার টাকা লাভ করা সম্ভব। গত প্রায় এক মাস আগে থেকে রাজধানীসহ দেশের নানা স্থান থেকে সবজি পাইকাররা জামালপুরে আসছে। ঐতিহ্যবাহী নান্দিনা বাজার, ফেরিঘাট এলাকায় সবজির পাইকারী হাট বসানো হয়েছে। এই হাটে বর্তমানে চিচিঙ্গা পাইকারীর মূল্য প্রতি মণ ৩শ’থেকে ৪শ’টাকা, শসা ২ থেকে আড়াই শ’টাকা, কাঁচা মরিচ ১৪শ থেকে ১৬শ’ টাকা, মিষ্ঠি লাউ প্রতিশ’ দেড় হাজার থেকে আড়াই হাজার টাকা, চাল কুমড়া প্রতি শ’ এক হাজার টাকা থেকে দেড় হাজার টাকায় বিক্রি হচ্ছে। জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক আবুল কাশেম বলেন, আবহাওয়া অনুকুলে থাকায় চলতি মৌসুমে হাইব্রিড জাতের সবজির ফলন অত্যন্ত ভালো হয়েছে। তিনি আরও বলেন, সবজি আবাদে সকল ধরণের সার,কীটনাশকের কোন সংকট ছিলনা।

WP2Social Auto Publish Powered By : XYZScripts.com
Send this to a friend