মাদারগঞ্জের খাল খননে কৃষকের মুখে হাসি
জামালপুরের মাদারগঞ্জ উপজেলায় দুধিয়াগাছা জোড়খালীঘাট খাল পুনঃখননে কৃষকের মুখে হাসি ফুটেছে। এছাড়াও বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধ নির্মাণের ফলে প্রায় ৯০০ হেক্টর জমির ফসল রক্ষা পাবে এবং ১৩টি গ্রামের প্রায় ৫০ হাজার মানুষ বিভিন্নভাবে উপকৃত হবেন।
সরেজমিন ঘুরে জানা গেছে, ২০১০ সাল থেকে বিভিন্ন জরিপ ও সমীক্ষার পর জাইকা ও দুধিয়াগাছা জোড়খালীঘাট পানি ব্যবস্থাপনা সমবায় সমিতি লিমিটেড’র অংশগ্রহণমূলক অর্থায়নে দুধিয়াগাছা জোড়খালীঘাট উপ-প্রকল্পের আওতায় জামালপুরের মাদারগঞ্জ উপজেলার আদারভিটা ইউনিয়নের দুধিয়াগাছায় দুইটি স্লুইচ গেইট, সাড়ে ৫ কি.মি. বাঁধ ও ৫.৮ কি.মি খাল পুনঃখননের কার্যক্রম গৃহীত হয়। ইতোমধ্যে খাল পুনঃখননের কাজ সম্পন্ন হয়েছে এবং বাঁধ নির্মাণের কাজ শেষ পর্যায়ে। এছাড়াও স্লুইচ গেইট কাজের টেন্ডার প্রক্রিয়া শেষ হয়েছে। জামালপুর ও মাদারগঞ্জ এলজিইডি এসব কাজের তদারকি করছে। ১৯৬৫ সালে প্রথম খাল খননের পর সরকারিভাবে চারবার খালটি পুনঃখনন করা হয়েছে। এ উপ-প্রকল্পের কাজ শেষ হলে প্রত্যক্ষভাবে প্রায় ৯০০ হেক্টর জমির প্রায় ২০ কোটি টাকার ফসল অগ্রিম ও বিলম্বিত বন্যার কবল থেকে রক্ষা পাবে। পানি ব্যবস্থাপনার সুবাদে প্রকল্পভুক্ত জমিতে বছরে দুই ফসলের পরিবর্তে চার ফসল চাষাবাদ সম্ভব হবে। অন্যদিকে পরোক্ষভাবে ১৩টি গ্রামের প্রায় ৫০ হাজার মানুষ বিভিন্নভাবে উপকৃত হবেন। জনস্বার্থে গৃহীত এ কাজকে বাধাগ্রস্ত করছে কতিপয় স্বার্থান্বেষী ও অবৈধদখলদার ব্যক্তি। এ ব্যাপারে গত ২৬ এপ্রিল মাদারগঞ্জ থানায় একটি সাধারণ ডায়েরী করা হয়েছে।
এদিকে দুধিয়াগাছা গ্রামের ফিরোজ আহাম্মেদ ও সামছুল হক জানান, খাল পুনঃখনন, বাঁধ ও স্লুইচ গেইট নির্মাণের মাধ্যমে সকলেই নিঃসন্দেহে উপকৃত হবেন। কতিপয় ব্যক্তি নিজের স্বার্থের জন্য এসব কাজের বিরোধীতা করে অপতৎপরতা চালাচ্ছেন।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক ব্যক্তি জানান, শুস্ক মওসুমে খালে ধানের চারা রোপন করা হয়। খাল পুনঃখননের কারণে তা আর সম্ভব হবে না। এরপরও খাল পুনঃখনন, বাঁধ ও স্লুইচ গেইট নির্মাণে সুবিধাই বেশী হবে। কাজ কেমন হয়েছে এমন প্রশ্নের জবাবে তারা জানান, কাজ খুব ভালো হয়েছে। কোন অনিয়ম লক্ষ্য করা যায়নি। অন্যদিকে খালের পার দিয়ে রাস্তা হওয়ায় যাতায়াতে সুবিধা হবে। তারা আরও জানান, অনেকেই খালে ধান চাষ করেছিলেন। পুনঃখাল খননের জন্য তাদের ধান কাটতে হয়েছে। কিন্তু তাদের ক্ষতিপূরণ প্রদান করেছে সংশ্লিষ্ট সমিতির কর্তৃপক্ষ।
এ ব্যাপারে দুধিয়াগাছা জোড়খালীঘাট পানি ব্যবস্থাপনা সমবায় সমিতি লিমিটেড’র সভাপতি রফিকুল ইসলাম ইরফান জানান, এ উপ-প্রকল্পের কাজ শেষ হলে কৃষক উপকৃত হবেন। এছাড়াও খালে মৎস্য চাষ করে গ্রামবাসী আর্থিকভাবে সচ্ছল হবেন। তিনি আরও জানান, দুধিয়াগাছা জোড়খালীঘাট পানি ব্যবস্থাপনা সমবায় সমিতি লিমিটেড’র প্রায় সাড়ে চারশত সদস্যের দীর্ঘদিনের সপ্ন এ উপ-প্রকল্পের মাধ্যমে বাস্তবায়ন হতে যাচ্ছে।