দুর্ধর্ষ খুনীদের মুখে একরামুল হত্যার বর্ণনা
ফেনীর সোনাগাজী উপজেলা চেয়ারম্যান ও আওয়ামী লীগ নেতা একরামুলের নির্মম হত্যাকাণ্ডে জড়িত আটজনকে আটকের পর শনিবার সংবাদ সম্মেলন করেছে র্যাব।
শনিবার দুপুরে র্যাব সদর দপ্তরে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, জিজ্ঞাসাবাদে ‘খুনীরা’ বর্ণনা দিয়েছে কিভাবে একরামুল হককে হত্যা করা হয়েছে।
তারা জানিয়েছে, কয়েকটি গ্রুপে ভাগ হয়ে কিলিং মিশনে মোট ৪০-৫০জন হত্যাকাণ্ডে অংশ নেয়। ১৯মে রাতে স্থানীয় সালাম জিমনেসিয়ামে জিহাদ চৌধুরী ও শিবলুর নেতৃত্বে হত্যাকাণ্ডের পরিকল্পনা হয়। ২০মে সকালে একটি গ্রুপ একরাম চেয়ারম্যানের বাসার সামনে অবস্থান নেয়। একরামুল হক বাসা থেকে উপজেলা পরিষদের দিকে রওয়ানা হলে সিনেমা হলের সামনে উপস্থিত গ্রুপকে তারা সংবাদ পৌছে দেয়।
সিনেমা হলের সামনে একরাম চেয়ারম্যানের গাড়ি পৌছালে সেখানে অবস্থানরত গ্রুপটি নসিমন ও রিকশার সাহায্যে গাড়িটির গতিরোধ করে। এসময় তারা ককটেল ফাটিয়ে স্থানীয় জনতার মধ্যে আতঙ্কের সৃষ্টি করে। ইতিমধ্যে জিহাদ চৌধুরী ৫টি পিস্তল আবিদ, সানী, সালাম, সিফাত ও সৈকতের হাতে তুলে দেন এবং শিবলী তাদের পিস্তলের ব্যবহার শিখিয়ে দেন।
গাড়িটির পথরোধের কারণে সেটি ডিভাইডারের উপর উঠে বেকায়দায় পড়ে যায়। এসময় অস্ত্রধারীরা ইকরাম চেয়ারম্যানকে লক্ষ্য করে গুলি করে। গাড়ির মধ্যে থাকা একজন পিস্তল দিয়ে প্রতিরোধ করার চেষ্টা করে ব্যর্থ হন। একপর্যায়ে গাড়ির মধ্যে থাকা সবাই বের হয়ে আসলেও একরাম চেয়ারম্যান আটকা পড়ে যান। একটি গ্রুপ এই সুযোগে পেট্রোল দিয়ে গাড়িতে অগ্নিসংযোগ করে। ফলে গুলিবিদ্ধ একরাম চেয়ারম্যান সেখানেই অগ্নিদগ্ধ হয়ে মারা যান। আতঙ্ক সৃষ্টির জন্য অস্ত্রধারীরা ফাঁকা গুলি ছুঁড়তে থাকে। হত্যাকান্ডের পর হেলাল উদ্দিন ‘খুনীদের’ আশ্রয় দিয়েছিলেন।
র্যাব সদর দপ্তরে সাংবাদিকদের সামনে ব্রিফিং করেন র্যাবের মিডিয়া উইংয়ের পরিচালক হাবিবুর রহমান।
এর আগে বিভিন্নস্থানে অভিযান চালিয়ে একরামুল হক হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত আটজনকে গ্রেপ্তার করে র্যাব।
গ্রেপ্তারকৃতরা হলেন, আবিদুল ইসলাম, কাজী শাহহান মাহমুদ, জাহিদুল ইসলাম সৈকত, মো. জিহাদ, শাহজালাল উদ্দিন শিপন, চৌধুরী নাফিজউদ্দিন অনীক, সাজ্জাদুল ইসলাম পাটোয়ারি সিফাত ও হেলালউদ্দিন।
গ্রেপ্তারকৃত আবিদ ফেনী সদর আসনের সংসদ সদস্য নিজাম উদ্দিন হাজারীর আত্মীয়। তার মা ফেনী জেলা মহিলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক।