নারায়ণগঞ্জ-ফেনীর দায় সরকার এড়াতে পারে না: যোগাযোগমন্ত্রী
যোগাযোগমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেছেন, নারায়ণগঞ্জ ও ফেনীর লোমহর্ষক দুটি হত্যাকাণ্ডের দায় সরকার এড়াতে পারে না। তাই সরকার এ ঘটনার সত্য উদঘাটনে ব্যস্ত। এই হত্যাকাণ্ড দুটি মধ্যযুগীয় বর্বরতাকেও হার মানিয়েছে। এই হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত ব্যক্তিদের আইনের আওতায় আনা হচ্ছে।
আজ শনিবার সকালে কক্সবাজারের উখিয়া উপজেলার সমুদ্রসৈকতের ইমামেরডেইল গ্রামে যোগাযোগমন্ত্রী সাংবাদিকদের এসব কথা বলেন। এর আগে তিনি সমুদ্রের তীরে নির্মীয়মাণ কক্সবাজার-টেকনাফ মেরিন ড্রাইভ সড়ক পরিদর্শন করেন।
পরিকল্পনামন্ত্রী আ হ ম মোস্তফা কামাল, সেনাবাহিনীর প্রকৌশল বিভাগের প্রধান মেজর জেনারেল মো. আবদুল কাদির, ব্রিগেডিয়ার জেনারেল সাইফুর রহমান ও আবদুল ওয়াহাব, ১৬ ইসিবির অধিনায়ক লে. কর্নেল নুর হোসেন, কক্সবাজার সড়ক ও জনপদ বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী নূর-ই আলম, উখিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. সাইফুল ইসলাম, সহকারী পুলিশ সুপার (উখিয়া সার্কেল) জসিম উদ্দীন মজুমদার প্রমুখ এ সময় উপস্থিত ছিলেন।
মেরিন ড্রাইভের জন্য বরাদ্দ ২১০ কোটি টাকা
যোগাযোগমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেন, আগামী ২০১৫ সালের মধ্যে মেরিন ড্রাইভ সড়কের নির্মাণকাজ শেষ করবে সরকার। মেরিন ড্রাইভের অবশিষ্ট কাজ শেষ করতে সরকার আরও ২১০ কোটি টাকা বরাদ্দ দিচ্ছে। এই সড়কের নির্মাণকাজ সম্পন্ন হলে কক্সবাজারের পর্যটনশিল্পের পাশাপাশি মত্স্য, কৃষিতে ব্যাপক উন্নতি হবে। ঝড়-জলোচ্ছ্বাসে উপকূলীয় মানুষ এই সড়ক কাজে লাগাতে পারবে। বাংলাদেশ-মিয়ানমারের মধ্যে সামরিক, রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক সম্পর্কের ক্ষেত্রে এই সড়ক গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে।
ওবায়দুল কাদের আক্ষেপ করে বলেন, ২২ বছর ধরে এই মেরিন ড্রাইভ সড়কের নির্মাণকাজ ঝুলে থাকা অত্যন্ত লজ্জাজনক। তাই প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশে যত দ্রুত সম্ভব এই সড়কের নির্মাণকাজ সম্পন্ন করা হবে।
সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, যোগাযোগ মন্ত্রণালয়ের সড়ক ও জনপদ দপ্তরের পরামর্শে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর ১৬ ইসিবি কক্সবাজার থেকে টেকনাফ পর্যন্ত ৮৪ কিলোমিটার দীর্ঘ মেরিন ড্রাইভ সড়কটি বাস্তবায়ন করছে। ১৯৯৩-৯৪ অর্থবছরে শুরু হওয়া কক্সবাজারের কলাতলী থেকে উখিয়া উপজেলার ইনানী পর্যন্ত ২৪ কিলোমিটার সড়কের নির্মাণকাজ শেষ হয় ২০০৮ সালে।
২০০৮ থেকে শুরু হওয়া দ্বিতীয় পর্যায়ে ইনানী থেকে শীলখালী পর্যন্ত ২৪ কিলোমিটার এবং তৃতীয় পর্যায়ে শীলখালী থেকে টেকনাফ পর্যন্ত আরও ৩৬ কিলোমিটার সড়ক নির্মাণকাজ শেষ হওয়ার কথা রয়েছে ২০১৬ সালের জুনের মধ্যে।
মোস্তফা কামাল বলেন, সরকার ২০১৫ সালের মধ্যে কক্সবাজার, পার্বত্য চট্টগ্রামের বিভিন্ন আকর্ষণীয় পর্যটন কেন্দ্র নিয়ে টুরিজম ভিলেজ গড়ে তোলার পরিকল্পনা নিয়েছে। এর অংশ হিসেবে মেরিন ড্রাইভ সড়কটির বাস্তবায়ন হচ্ছে।
পরিকল্পনামন্ত্রী বলেন, ‘স্পেন তিন কিলোমিটারের সৈকত দিয়ে ৬০ ভাগ রাজস্ব আয় করছে। কিন্তু আমাদের ১২০ কিলোমিটার সৈকত থাকা সত্ত্বেও আমরা রাজস্ব থেকে বঞ্চিত হচ্ছি।’ মন্ত্রী মেরিন ড্রাইভ সড়কের আশপাশে অবৈধ স্থাপনা দেখে ক্ষোভ প্রকাশ করেন এবং এসব স্থাপনা দ্রুত উচ্ছেদ করতে প্রশাসকে নির্দেশ দেন।