রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয় : জাল সনদের সত্যতা মিলেছে, শিক্ষক চাকরিচ্যুত
রংপুরে বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ে জাল সনদ দিয়ে আবু জাফর মো. ইমরান নামের এক শিক্ষকের চাকরি পাওয়ার অভিযোগের সত্যতা মিলেছে। এ কারণে প্রভাষক পদ থেকে তাঁকে চাকরিচ্যুত করা হয়েছে। ওই শিক্ষকের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়ার সিদ্ধান্ত হয়েছে। আজ শনিবার বিশ্ববিদ্যালয়ের ৪০তম সিন্ডিকেটের সভায় এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। বিশ্ববিদ্যালয় সূত্র জানায়, গত বছরের ৩ নভেম্বর ফিন্যান্স অ্যান্ড ব্যাংকিং বিভাগের প্রভাষক নিয়োগের জন্য বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা হয়। চলতি বছরের ৩ ফেব্রুয়ারি রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের ফিন্যান্স অ্যান্ড ব্যাংকিং বিভাগ থেকে পাস করার সনদ জমা দিয়ে আবু জাফর মো. ইমরান নিয়োগ পান। ১১ মার্চ তিনি প্রভাষক পদে যোগ দেন।
আবু জাফর মো. ইমরানের নিয়োগের পর ক্যাম্পাসে ব্যাপক গুঞ্জন ছড়িয়ে পড়ে—সনদ জালিয়াতি করে তিনি শিক্ষক হিসেবে নিয়োগ পেয়েছেন। ওই শিক্ষকের বিবিএ ও এমবিএর সনদ জালিয়াতির অভিযোগ এনে বেনামে একটি চিঠি ফিন্যান্স অ্যান্ড ব্যাংকিং বিভাগে পাঠানো হয়। এ ঘটনার পর ২৩ এপ্রিল আবু জাফর মো. ইমরান ব্যক্তিগত কারণ দেখিয়ে শিক্ষকের পদ থেকে পদত্যাগ করেন। এর পর থেকে তিনি লাপাত্তা হয়ে যান।
২৮ এপ্রিল প্রথম আলোর বিশাল বাংলায় ‘রংপুরে বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়: জাল সনদে শিক্ষকতা, জানাজানির পর চম্পট’ শিরোনামে একটি খবর প্রকাশিত হয়।
এরপর বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের পক্ষ থেকে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার বরাবর আবু জাফর মো. ইমরানের প্রকৃত তথ্য জানতে চেয়ে চিঠি পাঠানো হয়। চিঠির উত্তরে জানানো হয়, প্রভাষক পদে আবেদনের সময় আবু জাফর মো. ইমরান রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের বিবিএর ফলাফলে সিজিপিএ দেখানো হয়েছে ৩ দশমিক ৬৩ এবং এমবিএর ফলাফল ৩ দশমিক ৫৪।
তবে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের ফিন্যান্স অ্যান্ড ব্যাংকিং বিভাগের ফলাফলে ২০০১-০২ শিক্ষাবর্ষে ভর্তি হয়ে ২০০৫ সালে বিবিএ ফাইনাল পরীক্ষায় (২০০৭ সালে অনুষ্ঠিত) সিজিপিএ পান ২ দশমিক ৭৩। ২০০৬ সালের এমবিএ প্রথম সেমিস্টার পরীক্ষায় (২০০৮ সালে অনুষ্ঠিত) সিজিপিএ পান ২ দশমিক ৬০।
তাঁর এমবিএ ফাইনাল পরীক্ষার ফলাফল পাওয়া যায়নি।
বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের জনসংযোগ কর্মকর্তা মোহাম্মদ আলী ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, এ ঘটনায় উপাচার্য এ কে এম নূর-উন-নবীর সভাপতিত্বে সিন্ডিকেটের ৪০তম সভায় ভুয়া সনদ দিয়ে শিক্ষক নিয়োগ হওয়ায় তাঁকে চাকরিচ্যুত করা হয়েছে। তাঁর বিরুদ্ধে প্রতারণার মামলা করার সিদ্ধান্ত হয়েছে।
উপাচার্য এ কে এম নূর-উন-নবী ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, খুব শিগগির আবু জাফর মো. ইমরানের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।