কেন আত্মহত্যার চেষ্টা করেছিলেন স্বস্তিকা?

swastika-mukherjee-03কিছু ঘটা মানেই যে শুধু তা কিন্তু বার বার নাও হতে পারে। এমনটাও হতে পারে, কোনো ঘটনার সঙ্গে অন্য অনেক ঘটনাকে মিলিয়ে নতুন করে ঘটনাকে নতুন রূপ দেওয়া। আর সেই ঘটনার কেন্দ্রবিন্দু যদি হয় টালিউডের বিতর্কে থাকা স্বস্তিকা মুখোপাধ্যায় তাহলে তো কথাই নেই। কিন্তু তাই বলে আত্মহনন? কব্জিতে কাঁটাছেড়া? রাতভর হাসপাতালের বিছানায়? নায়িকাকে নিয়ে এখন তোলপাড় টালিপাড়া থেকে শহরের অলিগলি আড্ডার ঠেক- সবার মুখেই একটাই কথা, স্বস্তিকা কি তাহলে আত্মহত্যা করতে গিয়েছিলেন? ব্যক্তিগত জীবন নাকি অসফল সিনে কেরিয়ার? কোনটা কারণ, নাকি নিছকই এটা গুজব। বরং আর পাঁচটা মানুষের মতোই দুর্ঘটনায় কবলে স্বস্তিকা।

‘টেক ওয়ান’ তখন মুক্তির প্রতীক্ষায়। সাংবাদিকদের হাজার প্রশ্নের মুখে স্বস্তিকা। কেউ বলছে, ছবিটা নাকি স্বস্তিকার নিজের গল্প। কেউ বলছেন পাওলি দামের ‘ছত্রাক’ ভিডিও ফুটেজ কাণ্ডকেই সিনেমা বানিয়েছেন পরিচালক মৈনাক। তবে স্বস্তিকা কিন্তু সাংবাদিকদের কথায় সহজ সরল ভাবে বলেই যাচ্ছেন ‘বির্তককে ভয় পাই। সে আমার সবসময়ের সঙ্গী। আমি অভিনয়ের জন্য সব কিছু করতে পারি। যা করেছি বেশ করেছি। এর পরেও করব।’ এরকম সাহসী মেয়েরা আত্মহত্যা করতে পারেন না। অন্তত স্বস্তিকা নয়।

যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ে ইতিহাসের ছাত্রী ছিলেন তিনি। খুব অল্প বয়সেই বিয়ে হয়, তারপর কন্যা সন্তানের জন্ম। স্বামীর সঙ্গে নানা অশান্তির জেরে সংসার টেকে না স্বস্তিকার। শেষমেশ বিচ্ছেদ হয়। মেয়েকে নিয়ে বাপের বাড়িতে চলে আসেন তিনি। শুরু হয় নিজের কেরিয়ার গোছানো। টেলিপর্দা থেকেই শুরু হয় অভিনয় যাত্রা। ‘এক আকাশের নীচে’, ‘এই তো জীবন’। তারপর ঋতুপর্ণ ঘোষের ‘উৎসব’ ছবি।

ধীরে ধীরে বাংলা সিনেমায় স্বস্তিকা হয়ে ওঠেন নতুন নায়িকা। তখন ইন্ডাস্ট্রিতে ঋতুপর্ণা সেনগুপ্ত, কোয়েল মল্লিক, রচনা বন্দ্যোপাধ্যায়রা দাপিয়ে অভিনয় করছেন। টিকে থাকার জন্য, নিজেকে একেবারে বদলে নিয়ে এলেন সিনে জগতে। বরাবরই সোজাসাপটা স্বস্তিকা তখন থেকেই প্রিয় উঠলেন বির্তকের। তার আদবকায়দা চক্ষুশূল হয়ে উঠল সমাজ থেকে সিনেমহলের। বিতর্কের মাঝে পড়েও হার মানেনি স্বস্তিকা। বরং সমাজকে পাত্তা না দিয়ে এগিয়ে গিয়েছেন তিনি।

একবার সাক্ষাৎকারে বলেছিলেন ‘আলাদ বলেই তো লোকের নজরে পড়েছি। একরকম হলে লোকে তো পাত্তাই দিত না। সবাই পাত্তাকে পাত্তা দিতে চায়। তা স্বস্তিকার বেলাতেই কেন দোষ হয়।’

‘ভূতের ভবিষ্যত’ ছবির কদলীবালা কুড়িয়েছিল প্রচুর জনপ্রিয়তা। সেই সময় দেয়া এক সাক্ষাৎকারে অন্য এক স্বস্তিকাকে চোখে পড়ছিল। যে মেয়ের সঙ্গে খুনসুটি করে, বাড়িতে কদলীবালা হয়ে একদিকে সিনেমার রির্হাসাল অন্যদিকে সবার মন জয়। এরকম খুশি খুশি মেয়েরা কি আত্মহত্যা করতে পারে?

স্বস্তিকা অনেক ওঠাপড়া দেখেছেন জীবনে। তা ব্যক্তিগত হোক বা সিনে কেরিয়ারে। পার্টিতে রেড ওয়াইনের গ্লাস ভেঙে কব্জি আহত হলেও মরার চেষ্টা তিনি করেননি বলেই মনে হয়। আসলে বিতর্কের কেন্দ্র থাকা টালিপাড়ার এই পাত্রী যাই করুন না কেন। সেটাই খবর। তা আত্মহত্যার হলে তো আর কথা নেই। সবার নজর তো পড়বেই পড়বে। তিনি সুস্থ হয়ে উঠুন তাড়াতাড়ি। কারণ স্বস্তিকার ঝুলিতে আপাতত, প্রচুর ছবি। যা দেখার জন্য অধীর প্রতীক্ষায় তার দর্শক।

WP2Social Auto Publish Powered By : XYZScripts.com
Send this to a friend