প্রধানমন্ত্রী, স্বাস্থ্যমন্ত্রীর নির্দেশনা অমান্য ; ডাক্তার শূন্য শ্রীবরদী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স
রোম্মান আরা পারভীন রুমী:ডাক্তার শূন্যতায় শেরপুরের শ্রীবরদী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স এখন নিজেই রুগী হয়ে পড়েছে। প্রায় ৪ লক্ষ মানুষের জন্য নেই একজনও ডাক্তার। মেডিকেল এ্যাসিসটেন্ট ও ওয়ার্ড বয়দের দিয়ে চলছে চিকিৎসাসেবা।ফলে মানুষের মৌলিক অধিকার থেকে বঞ্চিত হচ্ছে এ উপজেলাবাসী।জানা গেছে, ১৯৬৬ সালে প্রায় ৩ একর জমির উপর নির্মিত হয় ২৯ শয্যার শ্রীবরদী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সটি। পরবর্তীতে এ সরকারের সময়ে ৪ কোটি ৬৫ লক্ষ টাকায় হাসপাতালটি ৫০ শয্যার উন্নীতকরণের জন্য প্রয়োজনীয় ভবন নির্মাণ কাজও শেষ। কিন্তু ৫০ শয্যার সেবা তো দূরে থাক একমাত্র কর্মরত উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ছাড়া আর কোন ডাক্তার নেই শ্রীবরদী হাসপাতালে। তাকে অধিকাংশ সময় প্রশাসনিক কাজে ব্যস্ত থাকায় হাসপাতালের চিকিৎসাসেবা দিচ্ছে মেডিকেল এ্যাসিসটেন্ট ও ওয়ার্ড বয়রা। এছাড়া ১৯৯২ সালে রাণীশিমুল ইউনিয়ন স্বাস্থ্য উপকেন্দ্রটি চালু করা হলেও এখনও কোন ডাক্তারের পদধূলি পড়েনি ওই উপস্বাস্থ্য কেন্দ্রে।হাসপাতাল সূত্রে জানা গেছে, এ উপজেলা কমপ্লেক্সটিতে ডেন্টাল সার্জন, এ্যানেসথেসিয়াসহ মেডিকেল অফিসারের পদ রয়েছে ১১ টি। এছাড়া ১০টি ইউনিয়নে আরও ১০ জন সহকারী সার্জনের পদ রয়েছে। এর মধ্যে ডাঃ বিথিকা রায় ২০১২ সালের ১৭ সেপ্টেম্বর থেকে ডিজির অনুমোদনে মিটফোর্ট হাসপাতালে কর্মরত। ডাঃ কাউসারুল ইসলাম একইভাবে গত ২০১০ সালের মার্চ ও ডাঃ ফরিদ আল হাসান ২০১২ সালের ১৫ নভেম্বর থেকে শেরপুর সদর হাসপাতালে কর্মরত আছেন। আর ডাঃ সুবির কুমার নন্দী প্রেষণে কিশোরগঞ্জ মেডিক্যাল কলেজে প্রভাষক হিসাবে যোগ দিয়েছেন। ডাঃ রেবেকা সুলতানা সপ্তাহে ১ দিন আবার কোন সপ্তাহে আসেন না। ডাঃ জিয়াউল হক, ডাঃ ফরিদ, ডাঃ নিলয় কুমার পাল অদৃশ্য কারণে যোগদানের পর থেকেই অনুপস্থিত। অথচ এসকল ডাক্তাররা মাস শেষে শ্রীবরদী হাসাপাতাল থেকেই বেতন ভাতাদি উত্তোলন করছেন।সরজমিনে বৃহস্পতিবার শ্রীবরদী হাসপাতালে গিয়ে দেখা গেছে আইটডোরে শতাধিক রোগীর ভীড়। বিভিন্ন রুমে রোগী দেখছেন মেডিকেল এ্যাসিসটেন্সরা। আর জরুরী বিভাগ চালাচ্ছে ওয়ার্ড বয়রা। চিকিৎসা নিতে আসা উপজেলার ধাতুয়া গ্রামের শাহিন, কলাকান্দা গ্রামের আমের আলী, তারাকান্দি গ্রামের রিয়াজুল ইসলাম ফারাজী জানান, হাসপাতাল থেকে কোন ওষুধ দেয়া হয়না। সব বাইরে থেকেক কিনতে হয়। প্রধানমন্ত্রী, স্বাস্থ্যমন্ত্রীর কঠোর নির্দেশনা উপেক্ষা করে ডাক্তারদের ডেপুটেশন, কর্মস্থলে অনুপস্থির কারণে সৃষ্ঠ ডাক্তার সংকটে সীমান্তবর্তী এ উপজেলার প্রায় ৪ লক্ষাধিক মানুষ তাদের অন্যতম মৌলিক অধিকার স্বাস্থ্য সেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে। শ্রীবরদী উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডাঃ এফ.এম কামরুজ্জামান জানান, জনবল সংকটে প্রায় ৪ লক্ষ মানুষের স্বাস্থ্য সেবা দিতে তিনি নিজেই প্রায়ই অসুস্থ্য হয়ে পড়ছেন।সিভিল সার্জন ডাঃ নারায়ন চন্দ্র দে এ ব্যাপারে বলেন, স্থানীয় কর্তৃপক্ষ ডাক্তারদের অনুমতি না দিলেই তো তারা ওয়ার্কিং ডেপুটেশন বা অনুপস্থিত থাকতে পারেন না।