উস্কানিমূলকভাবে বিজিপি সদস্যরা হামলা চালায়: বিজিবি মহাপরিচালক
বর্ডার গার্ড বাংলাদেশের (বিজিবি) মহাপরিচালক মেজর জেনারেল আজিজ আহমেদ বলেছেন, সম্পূর্ণ উস্কানিমূলকভাবে মায়ানমারের বিজিপি সদস্যরা বিজিবির টহল দলের ওপর হামলা চালায়।
মায়ানমারের সীমান্তরক্ষী বাহিনী বর্ডার গার্ড পুলিশের (বিজিপি) হামলায় বিজিবি সদস্য নায়েক সুবেদার মিজানুর রহমান নিহত হওয়ার প্রেক্ষিতে শনিবার রাজধানীর পিলখানায় বিজিবি সদরদপ্তরে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এ কথা বলেন মে. জেনারেল আজিজ।
তিনি বলেন, ‘আমরা পাইনছড়ির ৫২ নং পিলারের কাছে গিয়ে দেখি, সেখানে গুলি লেগে নষ্ট হওয়া একটি মোবাইল ফোন পড়ে আছে। আর রক্তের ধারা চলে গেছে মায়ানমারের দিকে।’ বাংলাদেশের ভূখণ্ড ব্যবহার করে প্রতিবেশী দেশে হামলা চালানোর কোনো সুযোগ নেই বলে দৃঢ়ভাবে উল্লেখ করেন তিনি।
বাংলাদেশে মায়ানমারের রোহিঙ্গাদের বিচ্ছিন্নতাবাদী সংগঠন রোহিঙ্গা সলিডারিটি অর্গানাইজেশনের (আরএসও) ঘাঁটি থাকার ব্যাপারে মায়ানমারের অভিযোগ নাকচ করে দিয়ে তিনি বলেন, আমাদের ভূখণ্ডে আশ্রয় নিয়ে প্রতিবেশী দেশে হামলা চালানোর কোনো সুযোগ নেই। আমরা তাদের বলেছি, দেশে আরএসও কোনো ক্যাম্প থাকলে তথ্য দেন। আমরা তাদের বিতাড়িত করবো।
সন্ধ্যা সাড়ে ছয়টায় ওই সংবাদ সম্মেলনে বিজিবি মহাপরিচালক এ সময় নাইক্ষ্যংছড়িতে বাংলাদেশ-মায়ানমার সীমান্ত সংঘাতের বিস্তারিত বিবরণ তুলে ধরেন।
আজিজ আহমেদ আরও বলেন,‘ মায়ানমারের অভিযোগের প্রেক্ষিতে শুধু বিজিবিই নয়, সেনাবাহিনীর সহায়তায় নাইক্ষ্যংছড়িতে অপারেশন পরিচালনা করি। কিন্তু আরএসওর কোনো ক্যাম্প পাইনি’।
তিনি বলেন, ‘এমনকি ওই দিক দিয়ে রোহিঙ্গাদের অনুপ্রবেশ ঠেকাতে প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশে ছয়টি বিপিও (সীমান্ত চৌকি) স্থাপন করি।’
বুধবার নায়েক মিজানের নিখোঁজ ও তার নিহত হওয়ার বিষয়ে বিজিবি মহাপরিচালক বলেন, নিয়মিত টহলের অংশ হিসেবে বিজিবির একটি টহল দল পাইনছড়ি এলাকার ৫২ নং বর্ডার পিলার (বিপি) এলাকায় টহল দেয়ার সময় কোনো প্ররোচনা ছাড়াই মায়ানমার থেকে গুলি চালানো হয়।’
এ সময় দলের অন্যান্য সদস্যরা পিছু ফিরে আসলেও নিখোঁজ হয় নায়েক মিজান। আমরা পাইনছড়ির ৫২ নং পিলারের কাছে গিয়ে দেখি, সেখানে গুলি লেগে নষ্ট হওয়া একটি মোবাইল ফোন পড়ে আছে, আর রক্তের ধারা চলে গেছে মায়ানমারের দিকে।
এরপর মায়ানমার কর্তৃপক্ষের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে নিখোঁজ নায়েক মিজানকে ফেরত চাওয়া হয়।
গত পরশুদিন তারা জানায় তাদের কাছে ডেডবডি আছে। তারা লাশ ফেরত দিতে চাইলে শুক্রবার বেলা তিনটার দিকে ৫২ নং পিলারের কাছে যায় বিজিবির একটি দল। কিন্তু তাদের ওপর এ সময় স্বয়ংক্রিয় অস্ত্র দিয়ে গুলি ছোঁড়ে তারা। জবাবে অামরাও পাল্টা গুলি চালাই।
এ সময় চারজন বিজিবি সদস্য হারিয়ে যায়।অবশ্য পরে তাদের উদ্ধার করা হয়।
অবশেষে উচ্চ পর্যায়ের যোগাযোগের পর বেলা পৌনে ৬টার দিকে নায়েক মিজানের লাশ ফেরত দেয় মায়ানমারের সীমান্তরক্ষী বাহিনী।