ছাত্রীকে জোর করে তালাক, ছাত্রলীগকে গণধোলাই
নারায়ণগঞ্জ সদরের ফতুল্লায় স্কুলছাত্রীকে বিয়ের পর তালাক দেয়া শিক্ষকের বিরুদ্ধে এলাকাবাসীর বের করা মিছিলে হামলা চালায় ছাত্রলীগ। এসময় দুই পক্ষের মধ্যে ধাওয়া-পাল্টাধাওয়া হয়। খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি শান্ত করে।
মঙ্গলবার দুপুর ১২টায় ফতুল্লার মুসলিমনগর এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।
এলাকাবাসী জানায়, মুসলিমনগর উচ্চ বিদ্যালয়ের শিক্ষক তাহারুল ইসলাম রবিন চার বছর আগে তার বিদ্যালয়ের ষষ্ঠ শ্রেণীর ছাত্রী মেহেরুন নেছা স্বর্ণাকে বিয়ে করেন। বর্তমানে স্বর্ণা নবম শ্রেণীতে পড়ছে। তার মা মারা গেছেন অনেক আগে। বাবাও অন্যত্র বিয়ে করে চলে গেছেন। এরপর থেকে মুসলিমনগর নয়া বাজারে নানীর বাসায় থেকে পড়াশুনা করছে স্বর্ণা।
চার বছর আগে বিয়ে হলেও মাত্র কয়েক মাস আগে স্বামী তাহারুল ইসলামের বাড়িতে এক সঙ্গে থাকা শুরু করে সে। এর মধ্যে গত ২৮ মে স্বর্ণাকে কাজি অফিসে নিয়ে যায় রবিন। সেখানে জোর করে তালাকনামায় স্বাক্ষর নেয়া হয়। রবিনের সহযোগী হিসেবে ছিলেন তার বোন জামাতা মাহাবুবুর রহমান শেখ কামাল, সাহিদুল্লাহ সাহিদ, শিক্ষক সাইফুল ইসলাম ও হান্নান মিয়া।
তালাক দেয়ার পর স্বর্ণাকে নানীর বাসায় পাঠিয়ে দিলে ঘটনা জানাজানি হয়। এ ব্যাপারে স্বর্ণা ফতুল্লা মডেল থানায় সাধারণ ডায়েরি করে।
মা হারা মেয়েটিকে জোর করে তালাক দেয়ার ঘটনায় ক্ষুব্ধ হয়ে ওঠে এলাকাবাসী। এক পর্যায়ে মঙ্গলবার সকাল ১০টার দিকে মসুলিমনগর উচ্চ বিদ্যালয়ের সামনে অবস্থান নিয়ে শিক্ষকের অপসারণ ও সহযোগীদের বিচার চেয়ে বিক্ষোভ মিছিল শুরু করে।
এ সময় মিছিলকারীদের ওপর হামলা চালায় ফতুল্লা থানা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক এমএ মান্নান ও তার বাহিনীর ক্যাডাররা। এলাকাবাসী ক্ষিপ্ত হয়ে মিছিলে বাধা দেয়া ছাত্রলীগ ক্যাডারদের গণধোলাই দিলে দুই পক্ষের মধ্যে দফায় দফায় সংঘর্ষ চলে। পরে পুলিশ গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।
এ ব্যাপারে শিক্ষক রবিনের বোন জামাতা মাহাবুবুর রহমান শেখ কামাল দাবি করেন, স্বর্ণার সঙ্গে দশম শ্রেণীর এক ছাত্রের অবৈধ সম্পর্ক থাকায় তাকে তালাক দেয়া হয়েছে।
তবে স্বর্ণার দাবি, ওই ছাত্র তাকে প্রায় উত্ত্যক্ত করতো। বিষয়টি স্বামীকে জানানোর পর তাকে তালাক দেয়া দেয়া হয়।