‘নষ্টা’ বলেই গৃহবধূকে চর-থাপ্পড়-লাথি
বিচার চাইতে গিয়ে সালিস বৈঠকেই নির্যাতনের শিকার হলেন এক গৃহবধূ। তাকে ‘নষ্টা’ বলে চর-থাপ্পড়-লাথি মেরে চুলের মুঠি ধরে টেনে হেঁচড়ে বের করে দেয়া হয়েছে বৈঠক থেকেই। আর এসব করা হয়েছে তার ছেলে ও মেয়ের সামনেই।
ঘটনাটি ঘটেছে গত শুনবার পার্বতীপুর উপজেলার পলাশবাড়ী ইউনিয়নের মধ্যে আটরাই গ্রামে। এ ঘটনায় পলাশবাড়ী ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মোফাখখারুল ইসলাম ফারুকের বিরুদ্ধে সোমবার রাতে থানায় এজাহার দাখিল করেছেন নির্যাতিতা গৃহবধূ সায়মা খাতুন (৩৮)।
সূত্র জানায়, গৃহবধূ সায়মা খাতুন প্রতিবেশি মো. নূর আলমের ছেলে মুদি দোকানদার সাগরকে (২৮) চার দফায় মোট ৬৭ হাজার টাকা ধার দেন।
পরবর্তীতে ওই গৃহবধূ টাকা ফেরত চাইতে গেলে সাগর টাল-বাহানা করতে থাকে। নিরুপায় হয়ে গৃহবধূ বিষয়টি থানা ও চেয়ারম্যানকে লিখিতভাবে জানান।
চেয়ারম্যান গত বুধবার ইউনিয়ন পরিষদ কার্যালয়ে উভয়পক্ষকে সালিসে ডাকলেও সাগর না আসায় গত শুক্রবার চেয়ারম্যানের নিজ বাড়ি চকবোয়ালি ধোবাকল গ্রামে সালিস বৈঠকের ডাক দেয়।
গৃহবধূ নির্দিষ্ট দিনে বৈঠকে উপস্থিত হলেও রহস্যজনক কারণে চেয়ারম্যান পুনরায় শনিবার বৈঠকের দিন ঠিক করেন।
গৃহবধূ সায়মা খাতুন জানানা, চেয়ারম্যান বিবাদী পক্ষের লোকজনের কাছ থেকে প্রায় আধঘন্টা ঘটনার আদ্যপান্ত শোনেন। কিন্তু তাকে সময় দেন মাত্র দুই মিনিটি। সাক্ষী উপস্থাপন করতে চাইলেও চেয়ারম্যান বলেন, ‘তুমি ৫০ জন সাক্ষী আনলেও তোমার কথা আমি বিশ্বাস করি না। তোমার মতো নষ্টা ও পতিতা মেয়ের বিচার আমি করব না।’
প্রতিবাদ করলে এক পর্যায়ে চেয়ারম্যান তাকে লাথি মেরে বারান্দা থেকে নিচে ফেলে দেন। চর-থাপ্পড় মেরে চুলের মুঠি ধরে টেনে হেঁচড়ে সালিস থেকে বের করে দেন।
চেয়ারম্যানের নির্দেশে সাগর, সুলতান, মনসুর, বক্করসহ বেশ কয়েকজন তা ছেলে সায়মুন (২৪), ভাই ফজলু (৬৭) ও রওশন আলীকে (৪৩) মারধর করে।
এব্যাপারে অভিযুক্ত চেয়ারম্যান মোফাখখারুল ইসলাম ফারুক বলেন, ‘সালিস বৈঠকে আমি কাউকে মারধর করিনি। রাজনৈতিকভাবে হেয়প্রতিপন্ন করতে আমার বিরুদ্ধে মিথ্যা অভিযোগ করা হয়েছে।’
পার্বতীপুর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা(ওসি) নাসিরউদ্দিন মণ্ডল জানান, নির্যাতিত গৃহবধূর লিখিত এজাহার পেয়েই তদন্ত শুরু করা হয়েছে। তদন্তের পর মামলা দায়ের হবে।