ধর্ষণের পর অন্তসত্ত্বা মহিলাকে হত্যার চেষ্টা
দিনাজপুর জেলার বীরগঞ্জ’র একটি ধানক্ষেতে অজ্ঞাত এক মহিলাকে রক্তাক্ত ও অচেতন অবস্থায় দেখতে পেয়ে স্থানীয় লোকজন পুলিশকে সংবাদ দেয়। বীরগঞ্জ পুলিশ গত ২৫ মে, সকালে মহিলাকে উদ্ধার করে অজ্ঞাতনামা হিসেবে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করেন। তার অবস্থার আরও অবনতি হলে দিনাজপুর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। ধর্ষণের পর অন্তসত্ত্বা মহিলাকে হত্যার চেষ্টা থানায় মামলা দায়ের করেছেন। দিনাজপুর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল সূত্রে জানা যায়, গত ২৯ মে, আহত মহিলাটি জ্ঞান ফিরে আসে এবং তাঁর পরিচয় জানাতে সক্ষম হয়। তাঁর নাম মোছাঃ রুপালী (৩৫)।
সে নিলফামারী জেলার ডিমলা উপজেলার পশ্চিম ছাতনাই ইউনিয়নের ঠাকুরগঞ্জ গ্রামের মৃত গোলাম মোস্তফার মেয়ে। তাঁর সাথে একই এলাকার হাফিজুল ইসলাম নামে একজনের সাথে বিয়ে হয়। তাদের একটি ছেলে সন্তান হবার পরে তার স্বামী হাফিজুল ইসলাম তাকে ফেলে পালিয়ে যায়।
একমাত্র সন্তানকে নিয়ে কাজের সন্ধানে পাড়ি জমায় ঠাকুরগাঁওয়ে। এখানে মানুষের বাড়িতে ঝিয়ের কাজ জোগায়। সন্তান মিনহাজুলকে ঠাকুরগাঁও পুলিশ লাইন স্কুলে ভর্তি করায়। সন্তানকে নিয়ে পুলিশ লাইন স্কুলের পিছনেই মিলন নগর এলাকায় একটি ঝুঁপড়ি ভাড়া করে থাকেন।
আহত রুপালী সাংবাদিকদের জানান, ঠাকুরগাঁও জেলা জামায়াতের সাবেক আমির মিলন নগর গ্রামের বাসিন্দা আঃ মজিদের বাড়ীতে ৫/৬ বছর ধরে কাজ করছে সে। তারঁ ছেলে মিনহাজুল হঠাৎ অসুস্থ্য হলে আমি মজিদের ছেলে রফিকুল্লাহ কাছে ছেলের চিকিত্সার জন্য কিছু টাকা চাই। সে আমাকে টাকা দেওয়ার কথা বলে জোড়পূর্বক ধর্ষন করে। ঘটনার কথা কাউকে বললে তাকে মেরে ফেলা হবে বলে হুমকি দেয়।
এ ঘটনার ২ মাস পর আমার অন্তসত্ত্বার বিষয়টি ধরা পড়ে। তখন বিষয়টি রফিকুল্লাহকে জানালে সে চিকিত্সার মাধ্যমে বাচ্চা নষ্টের প্রস্তাব দেয়। তাদের চাপের মুখে ভয়ে ভীত হয়ে রকিবুল্লাহ সহ তার লোকজনের সাথে বাচ্চা নষ্ট করার জন্য গত ২৪ মে রাতে ঠাকুরগাঁও থেকে দিনাজপুরের উদ্দেশ্যে একটি মাইক্রোবাসে রওয়ানা হয়। রাত ২ টার দিকে তারা দিনাজপুরের বীরগঞ্জের আমতলি নামক স্থানে এসে এক বন্ধুর সাথে দেখা করে টাকা নেওয়ার কথা বলে। এখানে নেমে অন্ধকারের মধ্যে বেশকিছুদুর একটি ধানক্ষেতে জোড় পূর্বক নিয়ে যায়। সেখানে তাকে বেদম প্রহার করার সময় সে জ্ঞান হারিয়ে ফেলে। একপর্যায়ে তাঁরা মৃত ভেবে তাকে সেখানেই ফেলে রেখে যায়।
এ ব্যাপারে আহত মহিলা বাদী হয়ে গত ৩ জুন মঙ্গলবার রাতে রকিবুল্লাহ (৩০)কে আসামী করে বীরগঞ্জ থানায় একটি মামলা দায়ের করেছেন বলে জানিয়েছেন তদন্তকারী অফিসার এস আই মোঃ শফিকুজ্জাজান। মামলা নম্বর-৩।
দিনাজপুর পুলিশ সুপার রুহুল আমিন সাংবাদিকদের জানান, ঘটনাটি অবহিত হওয়ার পর বীরগঞ্জ থানার অফিসার ইনচার্জ মোঃ আরমান হোসেনকে ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য নির্দেশ প্রদান করা হয়েছে। ওই মহিলা ও তার ছেলেকে নিরাপত্তাসহ সব রকম আইনগত সহায়তা দিতেও আমরা ব্যবস্থা গ্রহণ করেছি।
তবে আঃ মজিদের ছেলে রকিবুল্লাহ বিষয়টি অস্বীকার করেন সাংবাদিকদের জানান, তিনি এ ঘটনার জন্য মোটেও দায়ী নন। বিষয়টির তিনি কিছুই জানেন না বলে জানান।
বীরগঞ্জ থানার বীরগঞ্জ থানার অফিসার ইনচার্জ আরমান হোসেন পিপিএম জানান, বিষয়টি নিয়ে তদন্ত অব্যাহত রয়েছে। আমরা খুব অল্প সময়ের মধ্যে প্রকৃত ঘটনা উদঘাটন করে অপরাধীকে গ্রেফতার করতে সক্ষম হবো।