হাতীবান্ধায় প্রেমিকার আত্মহত্যা, প্রেমিকের মা-ভাই গ্রেফতার
প্রেমিকের সঙ্গে বিয়ে না হওয়ায় প্রেমিকা লতা আক্তার নিশি’র(১৮) আত্মহত্যা করেছেন। আর এ আত্মহত্যায় প্ররোচনার অভিযোগে প্রেমিকের মা ও ভাইকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। লতা আক্তার নিশি লালমনিরহাটের হাতীবান্ধা উপজেলার বড়খাতা ইউনিয়নের পশ্চিম সারডুবী গ্রামের সিরাজুল ইসলামের মেয়ে। গ্রেফতারকৃতরা হলেন- লালমনিরহাটের হাতীবান্ধা উপজেলার বড়খাতা ইউনিয়নের পশ্চিম সারডুবী গ্রামের জমির উদ্দিনের স্ত্রী জাহেরা বেগম(৪১) ও তার ছেলে সুমনকে(১৫)।
শুক্রবার দুপুরে তাদের নিজ বাড়ি থেকে গ্রেফতার করা হয়।
থানা পুলিশ ও এলাকাবাসী বাংলানিউজকে জানান, লতা আক্তার নিশি’র সঙ্গে দীর্ঘদিন ধরে প্রেম করে আসছিলেন উপজেলার বড়খাতা ইউনিয়নের পশ্চিম সারডুবী গ্রামের জমির উদ্দিনের ছেলে রাবিউল ইসলাম(২৩)। বিয়ের প্রলোভন দেখিয়ে প্রেমের সম্পর্ক গড়ায় দৈহিক সম্পর্কে।
এ সম্পর্কের বিষয়টি জানাজানি হলে নিশি বিয়ের জন্য রবিউলকে চাপ প্রয়োগ দেয়। কিন্তু রাজি হয়নি প্রভাবশালীর আদরে সন্তান প্রেমিক রবিউল ইসলাম।
উপান্তর না পেয়ে লতা আক্তার নিশি গত ১৫ দিন আগে রবিউলকে আসামি করে হাতীবান্ধা থানায় একটি অভিাযোগ দায়ের করেন। পরে বিষয়টি নিয়ে স্থানীয় পর্যায়ে সালিশ বসলে প্রেমিকার নিশির বিয়ের দাবি উপেক্ষিত হয়। শুরু হয় টাকার দেনদরবার।
সালিশে নিশির ইজ্জতের মূল্য ৫২ হাজার টাকা নির্ধারণ করেন মাতবররা। টাকার কাছে হেরে যায় নিশির দীর্ঘদিনের প্রেম। আর অপমান সইতে না পেরে বৃহস্পতিবার মধ্য রাতে বাড়ির পাশে গলায় রশি দিয়ে আত্মহত্যা করেন নিশি।
শুক্রবার সকালে স্থানীয়রা তার ঝুলন্ত লাশ দেখে পুলিশে খবর দিলে লাশ উদ্ধার করে মর্গে পাঠানো হয়।
এ ঘটনায় শুক্রবার সকালে নিশির বাবা সিরাজুল ইসলাম বাদী হয়ে হাতীবান্ধা থানায় আত্মহত্যায় প্ররোচনার অভিযোগ একটি মামলা দায়ের করেন। এ প্ররোচনার অভিযোগে প্রেমিক রবিউলের মা জাহেরা বেগম ও ছোট ভাই সুমনকে গ্রেফতার করেছে থানা পুলিশ।
বড়খাতা ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান আবু হেনা মোস্তফা জামাল সোহেল জানান, বিচার না পেয়ে মেয়েটি আত্মহত্যার পথ বেছে নেয়। এ মৃত্যুর দায় কেউ এড়াতে পারে না।
নিশির ফুপাতো ভাই জাদু’র দাবি, তার বোন বিচার না পেয়ে আত্মহত্যা করেছে।
হাতীবান্ধা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা(ওসি) আনোয়ার হোসেন জানান, আত্মহত্যার প্রচারণার অভিযোগে একটি মামলায় দু’জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। তবে, নিশির করা অভিযোগের বিষয়টি অস্বীকার করেন ওসি।