চীনের যোগাযোগ নীতি প্রতিবেশী দেশগুলোর সঙ্গে সার্বিক বন্ধন জোরদার করবে: প্রধানমন্ত্রী

pm news titleচীনের চমৎকার যোগাযোগ নীতিকে স্বাগত জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, এটি প্রতিবেশী সকল দেশের সঙ্গে অর্থনৈতিক সহযোগিতা সম্প্রসারণ ও সার্বিক বন্ধন জোরদার করবে।

প্রধানমন্ত্রী শুক্রবার কুনমিং আন্তর্জাতিক সম্মেলন ও প্রদর্শনী কেন্দ্রে দ্বিতীয় চীন-দক্ষিণ এশিয়া প্রদর্শনীর উদ্বোধন অনুষ্ঠানে ভাষণে এ কথা বলেন।

বাংলাদেশ-চীন-ভারত-মায়ানমার অর্থনৈতিক করিডোরকে (বিসিআইএম-ইসি) এবং অত্যন্ত আশাব্যঞ্জক অগ্রগতি হিসেবে অভিহিত করে শেখ হাসিনা বলেন, এটি বাস্তবায়িত হলে আমাদের দুই দেশের জনগণ আরো ঘনিষ্ঠ হবে এবং এটি দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কের সকল ক্ষেত্রে দুই দেশের মধ্যে বৃহত্তর সহযোগিতা সম্প্রসারণে সহায়ক হবে।

চীনের সঙ্গে দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোর যোগাযোগ বৃদ্ধির ওপর গুরুত্ব আরোপ করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, এতে অর্থনৈতিক সহযোগিতা বেড়ে এ অঞ্চলের দেশগুলোর উন্নয়ন কর্মকাণ্ড আরো গতিশীল হবে। বাংলাদেশ-চীন-ভারত-মিয়ানমার অর্থনৈতিক করিডোর (বিসিআইএম-ইসি) বাংলাদেশ ও চীনের দ্বিপক্ষীয় সম্পর্কের ক্ষেত্রে সহযোগিতার নতুন দ্বার খুলে দেবে বলেও আশা প্রকাশ করেন প্রধানমন্ত্রী।

তিনি বলেন, বিসিআইএম-ইসি বাস্তবায়ন করা গেলে অর্থনৈতিক সহযোগিতা বৃদ্ধির মাধ্যমে তা আমাদের দুই দেশের জনগণকে আরো কাছাকাছি নিয়ে আসবে। দক্ষিণ এশিয়ার সঙ্গে যোগাযোগ ব্যবস্থা গড়ে তুলতে অবকাঠামোগত উন্নয়নে চীনের বিশাল বিনিয়োগের প্রশংসা করেন শেখ হাসিনা।

কুনমিং-এ আন্তর্জাতিক প্রদর্শনীর বাংলাদেশ প্যাভিলিয়ন পরিদর্শনে প্রধানমন্ত্রী

তিনি বলেন, এতে অর্থনৈতিক সহযোগিতা বৃদ্ধির পাশাপাশি চীনের সঙ্গে আমাদের প্রতিবেশী দেশগুলোর সম্পর্ক আরো উন্নত হবে।আঞ্চলিক যোগাযোগ প্রতিষ্ঠার এই উদ্যোগ অর্থনৈতিক সহযোগিতা বৃদ্ধির পাশাপাশি সড়ক ও রেল যোগাযোগকে আরো উন্নত করবে বলে আশা প্রকাশ করেন তিনি।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, সিল্ক রুটের মাধ্যমে কয়েক দশক ধরে বাংলাদেশের সঙ্গে চীনের ইউনান প্রদেশের যোগাযোগ রয়েছে।এখন ঢাকা-কুনমিং সরাসরি ফ্লাইট চালু হয়েছে।চীন-দক্ষিণ এশিয়া এক্সপো ইউনানের সঙ্গে বাংলাদেশের ওই ঐতিহাসিক সম্পর্ককে একটি নতুন মাত্রায় নিয়ে এসেছে বলে মন্তব্য করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

চীনের সঙ্গে দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোর ব্যবসা-বাণিজ্য ও পর্যটন বৃদ্ধি এবং সংস্কৃতি বিনিময়ের ক্ষেত্রে এই এক্সপো গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছে বলেও মনে করেন তিনি।চীনকে বাংলাদেশের ভালো বন্ধু ও উন্নয়ন সহযোগী অভিহিত করে প্রধানমন্ত্রী বলেন,দক্ষিণএশিয়ার সঙ্গে সম্পর্কোন্নয়নের ক্ষেত্রে দক্ষিণপশ্চিমাঞ্চলীয় ইউনান প্রদেশ বড় ধরনের ভূমিকা রাখছে।

প্রধানমন্ত্রী কুনমিং আন্তর্জাতিক সম্মেলন ও প্রদর্শনী কেন্দ্রে গেলে ইউনান প্রদেশের উপগভনর্র গাও সুজুন তাকে সেখানে স্বাগত জানান।এক্সপোর আনুষ্ঠানিক উদ্বোধনের পর সম্মেলন ও প্রদর্শনী কেন্দ্রের সভাকক্ষে শেখ হাসিনার সঙ্গে সাক্ষাত করেন ওয়াং ইয়াং।পরে প্রধানমন্ত্রী বাংলাদেশ প্যাভিলিয়ন পরিদর্শন করেন।

চীনের উপপ্রধানমন্ত্রী ওয়াং ইয়াং-এর সাথে সাক্ষাতে প্রধানমন্ত্রী

ওই অনুষ্ঠানে আরো বক্তব্য রাখেন নেপালের প্রধানমন্ত্রী সুশীল কৈরালা, চীনের ভাইস প্রেসিডেন্ট ওয়াং ইয়াং,মালদ্বীপের ভাইস প্রেসিডেন্ট মো. জামিল আহমেদ, লাওস-এর ভাইস প্রাইম মিনিস্টার সোমসাভেট লেংসাভাদ, শ্রীলংকার ডেপুটি স্পিকার চন্দ্রিমা ভিরাক্কুদি ও সার্কের মহাসচিব অর্জুন বাহাদুর থাপা।

সম্মেলন ও প্রদর্শনী কেন্দ্রে থেকে প্রধানমন্ত্রী ইন্টার কন্টিনেন্টাল কুনমিং হোটেলে ইউনান প্রদেশের গভর্নর লি জিহেংয়ের দেওয়া নৈশভোজে যোগ দেন। এর আগে সকাল ৭টা ৩৫ মিনিটে বাংলাদেশ বিমানের একটি ফ্লাইটে ঢাকা থেকে যাত্রা করে স্থানীয় সময় বেলা সাড়ে ১১টায় কুনমিং পৌঁছান প্রধানমন্ত্রী।

প্রধানমন্ত্রীর সফরসঙ্গীদের মধ্যে রয়েছেন বাণিজ্যমন্ত্রী তোফায়েল আহমেদ, পররাষ্ট্রমন্ত্রী এএইচ মাহমুদ আলী, প্রধানমন্ত্রীর উপদেষ্টা এইচ টি ইমাম, ইকবাল সোবহান চৌধুরী, পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার আলম, পররাষ্ট্র সচিব সহিদুল হক এবং প্রধানমন্ত্রীর প্রেস সচিব এ কে এম শামীম চৌধুরী। এছাড়া ৭০ সদস্যের একটি ব্যবসায়ী প্রতিনিধি দলও রয়েছেন প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে।

চীনের প্রধানমন্ত্রী লি কেকিয়াংয়ের আমন্ত্রণেশেখ হাসিনার এই সফরে দুই দেশের প্রধানমন্ত্রীর আনুষ্ঠানিক বৈঠক হবে। পরে বাংলাদেশ-চীনের মধ্যে যৌথ ইশতেহার স্বাক্ষরিত হওয়ার কথা রয়েছে। সফর শেষে ১১ জুন দেশে ফিরবেন শেখ হাসিনা।

WP2Social Auto Publish Powered By : XYZScripts.com
Send this to a friend