কেমন আছেন প্রতাপশালী সেই সেনানায়ক?
কেমন আছেন, কোথায় আছেন সাবেক সেনাপ্রধান জেনারেল মঈন উ আহমেদ, এই নিয়ে বাংলাদেশের মানুষের আগ্রহের শেষ নেই। সম্প্রতি মঈন উ আহমেদের বর্তমান অবস্থা এবং পারিপার্শ্বিক বিষয় নিয়ে একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে যুক্তরাষ্ট্র ভিত্তিক বাংলা সাপ্তাহিক ঠিকানা। প্রতিবেদনটি খবর বাংলা২৪.কমপাঠকদের জন্য প্রকাশিত হলো।
জেনারেল মঈন উ আহমেদ। সাবেক সেনাপ্রধান। বিগত তত্ত্বাবধায়ক সরকারের আমলের আলোচিত নাম এটি। বর্তমানে ক্যান্সারের সঙ্গে যুদ্ধ করছেন তিনি। এখন অনেকটাই সুস্থ। ক্যান্সার জয়ে যন্ত্রণাময় কেমোথেরাপি নিতে হয়েছে দুই বছর। এর পর অবস্থার বেশ খানিকটা উন্নতি হওয়ায় দুই মাস আগে থেকে চিকিৎসকরা তাকে ওরাল ওষুধ দিয়েছেন। এখন নিয়ম করে ওষুধ সেবন করছেন প্রতাপশালী সাবেক সেনানায়ক। বাকি জীবনও তাকে ওষুধনির্ভর থাকতে হবে। বর্তমানে নিউইয়র্ক শহরের প্রাণকেন্দ্রেই থাকেন জেনারেল মঈন। সঙ্গে থাকেন তার স্ত্রী। ছেলে থাকে ফ্লোরিডাতে। এ দুই সিটির মধ্যেই তার আসা-যাওয়া। অনেকটা নীরবেই সময় কাটান তিনি। জেনারেল মঈন কোনো ধরনের আলোচনায় থাকতে চান না। এ কারণে কারও সঙ্গে দেখা করেন না, কথাও বলেন না। জেনারেল মঈন বলেন, আমি চাই না আমাকে নিয়ে কোনো আলোচনা হোক। এজন্য আমি তেমন কোথাও যাই না। গণমাধ্যমকে কোনো সাক্ষাৎকার দিই না। এখানে অনেকেই আমাকে মিডিয়ায় কথা বলার জন্য অনুরোধ করেন, কিন্তু আমি বলি না। কারণ একটা বললে আরেকটা কথা ছড়াবে। এতে সমস্যা আরও বাড়বে। তাই এসব আমি এড়িয়ে চলি।
মঈন উ আহমেদ বলেন, মাঝে অনেক অসুস্থ থাকলেও এখন অনেক ভালো আছি। ক্যান্সার থেকে বেঁচে উঠতে পারব- এটা ভাবতে পারিনি।
মঈন বলেন, ২০১১ সালের শেষ দিকে যখন নিউইয়র্কে আসি, তখন সুস্থই ছিলাম। তবে আসার কয়েক দিনের মধ্যে বুঝতে পারলাম, কী ভয়ানক রোগ শরীরে বহন করে চলছি। ক্যান্সারের কথা শুনে ভয় পেয়ে গিয়েছিলাম; তবে ভেঙে পড়িনি।
মঈন বলেন, ক্যান্সারকে এখনও পুরোপুরি জয় করতে পারিনি। নিরন্তর লড়াই চলছে। তবে এখন আগের চেয়ে অনেক ভালো আছি। ক্যান্সার জয়ে দুই বছর নিয়মিত কেমো নিতে হয়েছে। এখনও চিকিৎসা চলছে। কবে চিকিৎসা নেয়া শেষ হবে, সেটাই জানি না। তাই আপাতত দেশে ফিরে যাওয়ার কথা ভাবছি না।
১/১১-এর পর কখনও প্রেসিডেন্ট হওয়ার কথা ভেবেছেন কিনা প্রশ্নের উত্তরে মঈন বলেন, কখনও ভাবিনি। কোনোদিন প্রেসিডেন্ট হতে চাইনি। তারপরও অনেকেই এসব কথা ছড়িয়েছেন। মানুষের জানার মধ্যে সবচেয়ে বড় ভুল হলো আমি নাকি দেশের প্রেসিডেন্ট হতে চেয়েছিলাম। কিন্তু এর কোনো ভিত্তি ছিল না। এটা শতভাগ মিথ্যা ও বানোয়াট একটা প্রপাগান্ডা ছিল। আমি কোনো দিন দেশের প্রেসিডেন্ট হতে চাইনি। আমি যে প্রেসিডেন্ট হতে চাইনি, সে কথা সাবেক প্রেসিডেন্ট ড. ইয়াজউদ্দিন আহম্মেদ জীবিত থাকতেই একটি জাতীয় দৈনিককে জানিয়েছিলেন।
তিনি স্পষ্ট করেই বলেছিলেন, জেনারেল মঈন কোনোদিন প্রেসিডেন্ট হওয়ার কথা আমাকে বলেননি। এমনকি তার ইচ্ছের কথাও আমাকে জানাননি।
জেনারেল মঈন বলেন, ইয়াজউদ্দিন সাহেব ঠিক কথাটিই বলেছিলেন। আমি প্রেসিডেন্ট হতে চাইলে আর কাউকে না বললেও ড. ইয়াজউদ্দিনকে তো আমার মনের কথাটা বলতে হতো। আসলে ওই ধরনের কোনো পরিকল্পনাই আমার মনের মধ্যে ছিল না।
মঈন বলেন, ওই সময় অনেকে তাদের স্বার্থসিদ্ধির জন্য আমাকে পরামর্শ দিয়েছিলেন, যেন আমি ওই দায়িত্ব নিই। অনেকে আমাকে অনুরোধও করেছেন। কিন্তু যখন দেখেছেন আমি দায়িত্ব নেইনি, তখন তাদের ভালো লাগেনি। তারাই সেসব প্রপাগান্ডা ছড়িয়েছেন।