ঝিনাইগাতীর মহারশি নদীর বৈধ বালু মহালের বালু উত্তোলন বন্ধ থাকায় শত শত শ্রমিক বেকার
মুহাম্মদ আবু হেলাল, ঝিনাইগাতী (শরেপুর) প্রতনিধি: শেরপুরের ঝিনাইগাতী উপজেলার মহারশী নদীর বৈধ বালু মহালের বালু উত্তোলন গত ৫ মাস যাবত বন্ধ হওয়ায় শত শত হত দরিদ্র শ্রমিক বেকার হয়ে পড়েছে। এতে করে দরিদ্র শ্রমিক পরিবারগুলোর মাঝে নেমে এসেছে দারুন অভাবের ছায়া ও হতাশা। জানা গেছে, ২০০৪ সালে ঝিনাইগাতীর তামাগাঁও গ্রামের ছামিউল হক ফকির নামে জনৈক বালু ব্যবসায়ী খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয় থেকে মহারশি নদী থেকে বালু উত্তোলনের ইজারা গ্রহণ করে। পরবর্তীতে সরকারী এক সিদ্ধান্তে ওই বালু মহাল ইজারা ভূমি সম্পদ মন্ত্রণালয়ের উপর ন্যস্ত করা হয়। পরবর্তীতে ইজারাদার ছামিউল হক ফকির খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয়ের ওই লীজের সমর্থনে হাইকোর্টে একটি রিট পিটিশন দায়ের করেন। পরে হাইকোর্ট সরকারী খাতে বালু মহালের রয়েলটি প্রদান সাপেক্ষে বালু উত্তোলনের অনুমতি প্রদান করেন। মহারশি নদীর বালু মহালগুলো সীমান্ত এলাকায় হওয়ায় স্থানীয় বিজিবি সদস্য কর্তৃক অজ্ঞাত কারণে বালু উত্তোলন বন্ধ হয়ে যাওয়ায় বিপাকে পড়েছেন অবহেলিত ঝিনাইগাতী উপজেলার হত দরিদ্র শত শত শ্রমিক। এতে করে সীমান্তবর্তী এলাকায় শ্রমিকদের কাজের কোন উৎস না থাকায় এসব বেকার শ্রমিকরা গারো পাহাড়ে অবৈধ ভাবে গাছ কাটার অপরাধে জড়িয়ে পড়ছে। এলাকার অভিজ্ঞ মহল মত ব্যক্ত করেছেন, ওই সব বেকার শ্রমিকরা কাজ না পেয়ে বিভিন্ন অপরাধে জড়িয়ে পড়ার আগেই পুনরায় বালু মহালটি চালু করার দাবী জানিয়েছেন। বিভিন্ন স্পটের বালুর শ্রমিক আব্দুল মান্নান, শাহজাহান আলী, চাঁন মিয়া, ফারুক, লাল মিয়ার সাথে সরেজমিনে সাক্ষাতকার নিয়ে জানা যায়, উজান থেকে প্রতিনিয়ত আসা বালু তারা অপসারণ করে পরিবহণ উপযোগী স্থানে জমা করে সারা দিনে ৩/৪শ টাকা রোজগার করে, যা দিয়ে তারা স্বাচ্ছন্দে পরিবার পরিজন নিয়ে চলতে পারেন। বালু উত্তোলনের এলাকা হিসেবে নলকুড়া ইউপি চেয়ারম্যান খলিলুর রহমানের সাথে কথা হলে তিনি জানান, সরকারী ভাবে নিয়ম মাফিক এবং হাইকোর্টের রিট থাকায় বালু সঠিক জায়গা থেকে উত্তোলন করা হয়ে থাকে। বালু উত্তোলনের ফলে নলকুড়া ইউনিয়নের শত শত শ্রমিকের জীবিকা নির্বাহের কর্মসংস্থান সৃষ্টি হয়েছে। এতে এলাকায় দরিদ্রের সংখ্যা অনেকাংশেই হ্রাস পেয়েছিল। বর্তমানে বালি উত্তোলন বন্ধ থাকায় শত শত শ্রমিক বেকার সহ পাহাড়ী বনাঞ্চলের সরকারী গাছ চুরি বৃদ্ধি পেয়েছে। বালু উত্তোলন অব্যাহত থাকলে গারো পাহাড়ের ঐতিহ্য টিকিয়ে রাখা সম্ভব হবে বলে তিনি জানান।