পদ্মা সেতুর কার্যাদেশের চুক্তি সই
চায়না মেজর ব্রিজ ইঞ্জিনিয়ারিং কোম্পানি লিমিটেডের সঙ্গে পদ্মা সেতুর কার্যাদেশের চুক্তি সই হয়েছে। চায়না মেজর ব্রিজ ইঞ্জিনিয়ারিং কোম্পানি লিমিটেডের পক্ষে চুক্তিতে সই করেন লিও ডিমিং এবং পদ্মা সেতুর পক্ষে প্রকল্প পরিচালক শফিকুল ইসলাম। মঙ্গলবার রাতে হোটেল রূপসী বাংলা হোটেলে এ চুক্তি সই হয়। চুক্তি সই অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন যোগাযোগ মন্ত্রী ওবায়দুল কাদের, পরিকল্পনামন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল, অর্থ ও পরিকল্পনা প্রতিমন্ত্রী এম এ মান্নান এবং চায়না মেজর ব্রিজ ইঞ্জিনিয়ারিং কোম্পানি লিমিটেডের কর্মকর্তারা।
এর আগে গত ২ জুন পদ্মাসেতু প্রকল্পে মূল সেতু নির্মাণের জন্য কার্যাদেশ অনুমোদন দেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। ওই দিন বিশ্বব্যাংকের প্রি-কোয়ালিফাইড চীনের ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান চায়না মেজর ব্রিজ ইঞ্জিনিয়ারিং কোম্পানি লিমিটেডকে ওয়ার্ক অর্ডার বা কার্যাদেশ দেওয়া হয়।
সর্বনিম্ন দরদাতা হিসেবে ১২ হাজার ১৩৩ কোটি ৩৯ লাখ টাকা মূল্যের কার্যাদেশ চীনের এ কোম্পানিটি পেয়েছে।
গত ২২ মে চায়না মেজর ব্রিজ ইঞ্জিনিয়ারিং কোম্পানি লিমিটেডকে দেয়া পদ্মা সেতু প্রকল্পের মূল সেতু নির্মাণের দরপত্র প্রস্তাব অনুমোদন দেয় সরকার।
নির্মাতা প্রতিষ্ঠানকে মোট ব্যয়ের ২৫ দশমিক ৬০ শতাংশ (৩ হাজার ১০৬ কোটি ১৫ লাখ টাকা) দেশীয় অর্থে ও অবশিষ্ট ৭৪ দশমিক ৪০ শতাংশ (৯ হাজার ২৭ কোটি ২৪ লাখ টাকা) বৈদেশিক মুদ্রায় (ডলারে) পরিশোধ করতে হবে।
২০১০ সালের ১১ মে পদ্মাসেতুর মূল অবকাঠামো নির্মাণে প্রাথমিক দরপত্র আহ্বান করা হয়। চূড়ান্ত মূল্যায়ন শেষে ২০১১ সালের মাঝামাঝি ঠিকাদার নিয়োগ দেওয়ার কথা ছিল। সে সময় মূল সেতুর ব্যয় প্রাক্কলন করা হয়েছিল ৯ হাজার ১২৭ কোটি ১৭ লাখ টাকা।
তবে বিশ্বব্যাংকের আপত্তিতে ২০১১ সালের আগস্টে প্রকল্পের কার্যক্রম স্থগিত করা হয়। নানা জটিলতায় প্রায় ২ বছর বন্ধ থাকার পর ২০১৩ সালের ২৬ জুন চূড়ান্ত দরপত্র আহ্বান করা হয়। আর গত ২৪ এপ্রিল মূল সেতুর আর্থিক প্রস্তাব জমা পড়ে।
মূল সেতু নির্মাণে ১০টি প্রতিষ্ঠান প্রাক-যোগ্যতা বাছাই দরপত্রে অংশ নেয়। সেখান থেকে পাঁচটি প্রতিষ্ঠান প্রাথমিকভাবে যোগ্য বলে বিবেচিত হয়। পরে বিশ্বব্যাংক কালোতালিকাভুক্ত করায় চায়না কমিউনিকেশন কনস্ট্রাকশন কোম্পানিকে বাতিল করা হয়।
গত বছর ২৬ জুন চারটি প্রতিষ্ঠানের কাছে চূড়ান্ত দরপত্র আহ্বান করা হয়। এতে তিনটি প্রতিষ্ঠান অংশ নিলে সবগুলোই কারিগরিভাবে যোগ্য বিবেচিত হয়। অপর দুই প্রতিষ্ঠান হচ্ছে দক্ষিণ কোরিয়ার স্যামসাং সিএ্যান্ডটি কর্পোরেশন এবং ডেলিম-এলএ্যান্ডটি জেভি।
তিন প্রতিষ্ঠানের মধ্যে সর্বনিম্ন দরদাতা হিসেবে চায়না মেজর ব্রিজকে ঠিকাদার হিসেবে নিয়োগ দেওয়ার সুপারিশ করা হয়।
সেতু বিভাগ জানায়, এরইমধ্যেই পদ্মা সেতু প্রকল্পের অপর তিন অংশ জাজিরা সংযোগ সড়ক, মাওয়া সংযোগ সড়ক ও সার্ভিস এলাকা-২-এর নির্মাণ কাজ এরইমধ্যে শুরু হয়েছে। এ তিন অংশের ঠিকাদার হিসেবে কাজ করছে মালয়েশিয়া ও বাংলাদেশের
যৌথ বিনিয়োগের প্রতিষ্ঠান এএমএল-এইচসিএম। অংশ তিনটির পরামর্শক হিসেবে কাজ করছে বাংলাদেশ সেনাবাহিনী ও বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয় (বুয়েট)।
আর প্রকল্প এলাকার নিরাপত্তার দায়িত্ব পালন করছে বাংলাদেশ সেনাবাহিনী।