বিহারি হত্যায় জড়িতরা শনাক্ত হলেও গ্রেফতার নেই
মিরপুরের কালশি ক্যাম্পে নয় বিহারিকে আগুনে পুড়িয়ে এবং একজনকে গুলি করে হত্যার ঘটনার এক সপ্তাহ পার হলেও হত্যাকারিদের গ্রেফতার করতে পারেনি পুলিশ। তবে এ সংক্রান্ত একাধিক ভিডিও ফুটেজ রয়েছে পুলিশের হাতে। যা দেখে ইতিমধ্যেই কয়েকজনকে শনাক্ত করেছে পুলিশ। এখন চলছে তাদের গ্রেফতারে অভিযান। গত ১৪ জুন ভোরে কালশি রোডস্থ নতুন রাস্তা মোড় এলাকায় পুলিশের সঙ্গে বিহারিদের সংঘর্ষে একই পরিবারের ৮ জনসহ ১০ জন নিহত হয়। এতে ৫ শিশুও রয়েছে। পবিত্র শবে বরাতের রাতে আতশবাজি ফোটানোকে কেন্দ্র করে এই সংঘর্ষের সূত্রপাত হয় বলে পুলিশসহ বিভিন্ন মহল দাবি করেছে। কিন্তু বিহারিদের পক্ষ থেকে অভিযোগ করা হয় তাদের জায়গা দখল করতে পরিকল্পিতভাবে এই হামলা চালানো হয়েছে। আর এতে নেতৃত্ব দিয়েছেন স্থানীয় সংসদ সদস্য ইলিয়াস মোল্লা।
ঘটনার পর পল্লবী থানায় এ ব্যাপারে পৃথক ছয়টি মামলা দায়ের করা হয়। তিনটি মামলা কুর্মিটোলা বিহারি ক্যাম্পের এবং অন্য তিনটি মামলা মিরপুর ১১ নম্বর ক্যাম্পের। এর মধ্যে ১০ জন হত্যার জন্যে পুলিশ বাদি হয়ে একটি, পুলিশের ওপর হামলার ঘটনায় একটি। বিহারি ক্যাম্পে অগ্নিসংযোগ, হামলা ও সংঘর্ষের ঘটনায় বাকি চারটি মামলা করেছেন স্থানীয়রা।
স্থানীয়দের দায়েরকৃত মামলা চারটি হলো- মামলা নং ২৭ থেকে যথাক্রমে ৩০ এবং পুলিশের পক্ষ থেকে দায়েরকৃত মামলা দুটি হলো ৩১ ও ৩২।
সবকটি মামলাই মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) কাছে হস্তান্তর করা হয়। বর্তমানে তারাই মামলা তদন্ত করছে।
কিন্তু ডিবির কাছে মামলা হস্তান্তর হলেও তদন্তে দৃশ্যমান কোন অগ্রগতি দেখতে পাচ্ছে না বিহারিরা। এ নিয়ে তাদের মধ্যে ক্ষোভ ছড়িয়ে পড়ছে। ঘটনার পর প্রতিদিনই তারা দোষীদের ধরতে পুলিশের ওপর চাপ প্রয়োগ করার জন্য আন্দোলন করছে। এমনকি হত্যাকারিদের ধরতে বিহারিরা স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল বরাবর স্মারকলিপিও প্রদান করেছে। তারপরও আসামিরা গ্রেফতার না হওয়ায় তারা আশঙ্কা করছে আদৌ কি হত্যাকারিরা বিচারের মুখোমুখি হবে কি না।
এ বিষয়ে উর্দু স্পিকিং পিপলস ইয়ুথ রিহ্যাবিলিটেশন মুভমেন্ট (ইউএসপিওয়াইআরএম) এর জেনারেল সেক্রেটারি মো. সাইদ আলী বাবলু জানান, আমরা প্রশাসনকে সহযোগিতা করতে চাই। কিন্তু প্রশাসন আমাদের কথায় কান দিচ্ছেন না। তাদের বার বার বলা সত্ত্বেও কোন আসামিকে এখনো গ্রেফতার করতে পারেনি পুলিশ। এতে আমাদের সন্দেহ হচ্ছে তাদের আন্তরিকতা নিয়ে।
এদিকে এ বিষয়ে ডিএমপির উপ-পুলিশ কমিশনার (মিডিয়া) মাসুদুর রহমান জানান, ভিডিও দেখে আসামিদের শনাক্ত করা হয়েছে। তদন্তের স্বার্থে তাদের নাম প্রকাশ করা হচ্ছে না। তাদের শিগগিরই গ্রেফতার করা হবে। আর আসামিদের ধরতে পুলিশের অভিযান অব্যাহত রয়েছে বলেও জানান তিনি।