রাষ্ট্রপতি জনগণের সঙ্গে বিশ্বাসঘাতকতা করেছেন: ফখরুল

Fakhrul-4354rসংলাপ ও নির্বাচন নিয়ে জাতিসংঘের মহাসচিবকে আশ্বস্ত করে রাষ্ট্রপতি যে বক্তব্য দিয়েছেন, তার মাধ্যমে তিনি জনগণের সঙ্গে বিশ্বাসঘাতকতা করেছেন বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। তাঁর মতে, রাষ্ট্রপতির এই বক্তব্য ‘আওয়ামী লীগের নেতাদের ভার্সন’। আজ শনিবার সকালে রাজধানীতে আলাদা দুটি অনুষ্ঠানে মির্জা ফখরুল এসব কথা বলেন। গত বৃহস্পতিবার রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদ জাতিসংঘের সদর দপ্তরে সংস্থাটির মহাসচিব বান কি মুনকে বলেন, ৫ জানুয়ারির নির্বাচনের ফলাফল বাংলাদেশের জনগণ মেনে নিয়েছে। রাষ্ট্রপতির এই বক্তব্যের নিন্দা জানিয়ে মির্জা ফখরুল বলেন, রাষ্ট্রপতি সংলাপ, নির্বাচন নিয়ে যে তথ্য দিয়েছেন, তাতে জনগণের আশা ভঙ্গ হয়েছে। জনগণ দ্রুত একটি গ্রহণযোগ্য নির্বাচন চায়।

রাষ্ট্রপতি আস্থার জায়গা রাখেননি মন্তব্য করে ফখরুল বলেন, রাষ্ট্রপতি দল-মতের ঊর্ধ্বে উঠে দেশ ও জনগণের জন্য কাজ করবেন বলে তাঁরা আশা করেন।

রাজধানীর একটি হোটেলে বিএনপির রাজনৈতিক কর্মশালা উদ্বোধনকালে ফখরুল এসব কথা বলেন।

পরে জাতীয় প্রেসক্লাবে এক আলোচনা সভায় মির্জা ফখরুল বলেন, রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদকে আওয়ামী লীগের নেতাদের মধ্যে ‘বেটার’ মনে করা হয়। যখন তিনি রাষ্ট্রপতির শপথ নেন, তখন নিরপেক্ষ থাকার শপথ নেন। এখন বিদেশে গিয়ে জাতিসংঘের মহাসচিবকে বলছেন, ৫ জানুয়ারির নির্বাচন গ্রহণযোগ্য হয়েছে।

রাষ্ট্রপতির উদ্দেশে মির্জা ফখরুল প্রশ্ন রাখেন, ‘কোথায় দেখলেন ৫ জানুয়ারির নির্বাচন গ্রহণযোগ্য হয়েছে? গোটা দেশের মানুষ নির্বাচন বর্জন করেছে।’

মির্জা ফখরুল বলেন, নির্বাচনের আগে আওয়ামী লীগ জাতিসংঘের মহাসচিব বান কি মুনকেও বলেছিল, এটি সাংবিধানিক ধারা রক্ষার নির্বাচন। এখন রাষ্ট্রপতি যে বক্তব্য দিয়েছেন, তা আওয়ামী লীগ নেতাদের ভার্সন।

সরকারের উদ্দেশে ফখরুল বলেন, ‘ক্ষমতার স্বাদ নিচ্ছেন, সুইস ব্যাংকে টাকা পাঠাচ্ছেন, কানাডা-মালয়েশিয়ায় বাড়ি করছেন, এত সহজে কেউ ক্ষমতা ছাড়তে চায় না। কিন্তু জনগণ ঝেঁটিয়ে বিদায় করবে। প্রস্তুতি নিন।’

বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচনের বৈধতা নিয়ে রিট প্রসঙ্গে ফখরুল বলেন, এর সঙ্গে রাজনৈতিক কোনো সম্পর্ক নেই। তাঁরা চান রাজনৈতিক বিষয়ের রাজনৈতিক সমাধান। আদালতের নির্দেশে সব হলে শেখ হাসিনা প্রধানমন্ত্রী হতে পারতেন না। কারণ আদালত তাঁকে ‘রং হেডেড’ বলেছিলেন। আইন করে ৫জানুয়ারির নির্বাচনের বৈধতা দেওয়া যাবে না।

আওয়ামী লীগের সমালোচনা করে মির্জা ফখরুল বলেন, ‘কত বলব, বলতে বলতে আমরা ক্লান্ত হয়ে গেছি। শুনতে শুনতে আপনারা ক্লান্ত।’

বিএনপির এই নেতা বলেন, তবে হতাশার কোনো স্থান নেই। ৫ জানুয়ারির নির্বাচন সফল হয়েছে। এবারও তীব্র আন্দোলন গড়ে তোলা হবে।

বিএনপি সমর্থক পেশাজীবীদের মোর্চা সম্মিলিত পেশাজীবী পরিষদ ‘ভোটাধিকার ও আইনের শাসন পুনঃপ্রতিষ্ঠা, মানবাধিকার রক্ষা ও মাহমুদুর রহমানের নিঃশর্ত মুক্তির দাবিতে’ ওই সমাবেশের আয়োজন করে।

অন্যদের মধ্যে পরিষদের ভারপ্রাপ্ত আহ্বায়ক রুহুল আমীন গাজী, সদস্যসচিব এ জেড এম জাহিদ হোসেন প্রমুখ বক্তব্য দেন।

 

WP2Social Auto Publish Powered By : XYZScripts.com
Send this to a friend