মেসিতে সওয়ার হয়ে দ্বিতীয় রাউন্ডে আর্জেন্টিনা
নির্ধারিত ৯০ মিনিটেও গোলের দেখা পায়নি আর্জেন্টিনা। ইরানের বিপক্ষে গোলশূণ্য ড্র নিয়ে মাঠ ছাড়তে হবে, এমন শঙ্কাই হয়তো চেপে বসেছিল আর্জেন্টিনার সমর্থকদের মনে। বারবার আক্রমণ চালালেও ইরানের জমাট রক্ষণভাগে কোনো ফাটলই ধরাতে পারছিলেন না আলেসান্দ্রো সাবেলার শিষ্যরা। কিন্তু অতিরিক্ত সময়ে সত্যিকারের অধিনায়কের ভূমিকায় অবতীর্ণ হয়েছেন লিওনেল মেসি। দুর্দান্ত এক গোল করে আর্জেন্টিনাকে উদ্ধার করেছেন এসময়ের অন্যতম সেরা এই ফুটবলার। ১-০ গোলের ঘামঝড়ানো জয় দিয়ে দ্বিতীয় রাউন্ডও নিশ্চিত করে ফেলেছে আর্জেন্টিনা।
প্রথম ম্যাচের মতো আজ আর কোনো পরীক্ষা-নিরীক্ষার মধ্যে যাননি আর্জেন্টিনার কোচ আলেসান্দ্রো সাবেলা। প্রথম একাদশেই ছিলেন গঞ্জালো হিগুয়েইন আর ফার্নান্দো গ্যাগো। প্রতিশ্রুতি অনুযায়ী ইরানের বিপক্ষে শুরু থেকে আক্রমণাত্মক ফুটবলই খেলেছেন মেসি-আগুয়েরোরা। পুরো ম্যাচের ৭৭ শতাংশ সময়ই বলের দখল ছিল আর্জেন্টিনার কাছে। কিন্তু ইরানের অতি রক্ষণাত্মক কৌশলের কারণে কাঙ্ক্ষিত লক্ষ্যে বল পাঠাতে পারেননি সাবেলার শিষ্যরা।
ইরান শুরু থেকেই নিজেদের রক্ষণটা সামলেছে খুব ভালোভাবে। প্রথমার্ধে আর্জেন্টিনা খুব বেশি ভীতিও ছড়াতে পারেননি ইরানের রক্ষণভাগে। দুই তিনটি সুযোগ তৈরি করলেও সেগুলো থেকে গোল পায়নি মেসিরা। ২১ মিনিটের মাথায় আগুয়েরোর একটি শট রুখে দিয়েছেন ইরানের গোলরক্ষক আলিরেজা হাজিজি। ৩৬ মিনিটে মেসির ফ্রি-কিক থেকে মাথা ছুঁইয়েছিলেন এজেকিয়েল গারাই। কিন্তু আর্জেন্টাইন এই ডিফেন্ডারের হেড চলে যায় ইরানের গোলপোস্টের কিছুটা উপর দিয়ে।
দ্বিতীয়ার্ধের শুরুতে ইরানও পেয়েছিল ভালো একটি গোলের সুযোগ। কিন্তু ৫৩ মিনিটের মাথায় সেই সুযোগ কাজে লাগাতে পারেননি ইরানের স্ট্রাইকার রেজা ঘুচান্নেজাদ। দুই মিনিট পরে পেনাল্টির আবেদনও উঠেছিল ইরান শিবির থেকে। ফাউল করেছিলেন জাবালেতা। কিন্তু সেই আবেদনে সাড়া দেননি সার্বিয়ান রেফারি। ৬৬ মিনিটে আরও একটি গোলের সুযোগ পেয়েছিল ইরান। আসখান দেজাগেহের দুর্দান্ত একটি শট রুখে দিয়েছিলেন আর্জেন্টিনার গোলরক্ষক সার্জিও রোমেরো।
ইরানের বিপক্ষে মেসির একটা ট্রেডমার্ক দৌড় দেখা গিয়েছিল ৬০ মিনিটের মাথায়। আর্জেন্টিনার সমর্থকেরা হয়তো অনেক আশাবাদীও হয়েছিলেন। কিন্তু আর্জেন্টাইন অধিনায়কের শট চলে যায় গোলপোস্টের কিছুটা বাইরে দিয়ে। ম্যাচের শেষ ১৫ মিনিট ইরানের রক্ষণভাগে একের পর এক আক্রমণ করে গেছেন আর্জেন্টিনার খেলোয়াড়েরা। ইরানও সেসব আক্রমণ ঠেকাতে নিয়োগ করেছিল নিজেদের সর্বোচ্চ শক্তি। সফলও হয়েছিল তারা। কিন্তু অতিরিক্ত সময়ের প্রথম মিনিটে মেসি ম্যাজিকে বদলে যায় ম্যাচের ফলাফল। ইরানের পেনাল্টি বক্সের বাইরে থেকে দুর্দান্ত একটি শটে বল জালে জড়িয়েছেন আর্জেন্টিনার এই তারকা ফরোয়ার্ড।