মেলান্দহে চাঁদা বন্ধের দাবীতে শ্রমিক ধর্মঘট
জামালপুরের মেলান্দহে চাঁদা বন্ধের দাবীতে দু’দিন যাবৎ শ্রমিক ঘর্মঘট চলছে। বর্ষার দিনে এমন শ্রমিক ধর্মঘটের কারণে সাধারণ মানুষসহ যাত্রীদের বাড়ছে দুর্ভোগ। শ্রমিকদের অভিযোগ প্রতিদিন ১৮জায়গায় চাঁদা দিতে হয়। শ্রমিকরা জানিয়েছেন-গত এক সপ্তাহ যাবৎ মেলান্দহ পৌরসভার স্লিপ সিস্টেমে প্রতিটি সিএনজি, অটো, বাস, ট্রাকসহ সকল ধরনের যানবাহনে চাঁদা বাজি চলছে। গত দু’দিন যাবৎ ড্রাইভারদের মারধরসহ লাঞ্চিত করে অতিরিক্ত চাঁদার টাকা নেয়া হচ্ছে। ২২জুন সকাল থেকে চাঁদাবাজি শুরু করায় দ্বিতীয় দফায় ধর্মঘটের ডাক দেয়া হয়। এরআগে ২১জুন সকাল থেকে যানবাহন বন্ধ রাখা হয়। উপজেলা প্রশাসন আমাদের সাথে কথা বলে চাঁদা বন্ধের আশ্বাস দিলে ধর্মঘট প্রত্যাহার করা হয়েছিল। শ্রমিক খলিল, আলফাজ জানান-প্রতিদিন ১৮জায়গায় চাঁদা দিতে হয়। এরমধ্যে সবচে’ বেশী চাঁদা দিতে হয় ঝিনাই ব্রিজের টোল আদায়ের নামে। একটা সিএনজি ড্রাইভারকে দৈনিক কমপক্ষে ১৫০-২০০ টাকা চাঁদা দিতে হয়। যা বিশ্বের কোথাও নেই। মন্ত্রী-প্রশাসনকে জানিয়েও কোন কাজে আসছেনা। প্রশাসন, নামধারী, শ্রমিক, রাজনীতিকসহ আপার লেভেলের অনেকেই এ ব্যাপারে নি:রব। বহু আন্দোলন হয়েছে। তাতেও ফল পাওয়া যাচ্ছে না। শ্রমিকরা চাঁদা আদায়ে কাউন্সিলর ফজলুল হককে দায়ী করেছেন।
চাঁদা আদায় সমর্থিত পৌর কাউন্সিলর ও শ্রমিক দল নেতা ফজলুল হক জানান- আমি চাঁদা আদায়কারী নই। আমাদের লোজনই চাঁদা আদায় করছেন। পৌর সভার সকল যানবাহনের উপর কর আরোপ করা হয়েছে। কাউন্সিলরদের নিয়ে সিদ্বান্ত গৃহিত হয়েছে। স্থানীয় সরকারের একটি পরিপত্রের আলোকে সিএনজি-মাহিন্দ্র দৈনিক ৫টাকা, ট্রাক-বাস ২০টাকা, ভটভটি-লেগুনা ১০টাকা এবং ইজিবাইক বাৎসরিক ৫০০ টাকা পৌরকর ধার্য্য করা হয়েছে। শ্রমিকরা আরো জানান-পৌরসভার নির্দিষ্ট যানবাহনের বাইরে এ শর্ত প্রযোজ্য হবার কথা না থাকলেও মহাসড়কসহ বিভিন্ন রোড-মোড়ে বসে প্রতিদিন কমপক্ষে ২সহস্রাধিক ড্রাইভারকে অতিরিক্ত চাঁদা দিতে বাধ্য করা হচ্ছে। অপর কাউন্সিলর ও উপজেলা শ্রমিক দলের সভাপতি সোলায়মান জানান-এমন পৌর কর আরোপের বিষয়ে আমি বিরোধী অবস্থানে ছিলাম।
এ ব্যপারে পৌর মেয়র হাজী দিদার পাশা জানান-আমাদের নির্দিষ্ট নিয়মের বাইরে কেও চাঁদাবাজি করলে আমরা দায়ী নই। মারধর ও অনিয়মের বিষয়ে অভিযোগ প্রমাণিত হলে ব্যবস্থা নেয়া হবে। চাঁদা নির্ধারণের আগেই শ্রমিকদের সাথে কথা বলা হয়েছে। যার স্বাক্ষরিত কাগজপত্র প্রশাসনের বিভিন্ন দপ্তরে অনুলিপি জমা দেয়া আছে। ২২জুন বিকেল ৪টার দিকে সর্বশেষ চাঁদা আদায় নিয়ে নানা অনিয়মের অভিযোগ ওঠায় শ্রমিকদের সাথে কথা বলে টোলআদায়কারী ঠিকাদারকে চাঁদা বন্ধের নির্দেশ দেয়া হয়েছে। তিনি অভিযুক্তদের বিরুদ্বে ব্যবস্থা গ্রহণেরও আশ্বাস দেন। মেয়র হাজী দিদার পাশা আরো জানান-১৮জায়গায় চাঁদাবাজি করছেন-শ্রমিকরাই। আমি বিরোধী দল হওয়ায় আমার বিরুদ্বে অনেকেই অপ-প্রচার করছেন।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা রেজাউল করিম জানান-শ্রমিকদের কষ্টের কথা বিবেচনা করেছি। কিন্ত তাদের কোন সুনির্দিষ্ট অভিযোগ না থাকায় ব্যবস্থা নিতে পারছিনা। অভিযোগ পেলে কড়া ব্যবস্থা নেয়া হবে।