দেওয়ানগঞ্জে সুগারমিল কর্মচারীর অর্ধকোটি টাকার সম্পদ বেদখল

jamalpur mapদেওয়ানগঞ্জ জিলবাংলা সুগার মিলের নিরীহ কর্মচারী শাহজাহান’র পরিবারকে চরভবশুর পূর্বপাড়া গ্রামের নিজ বাড়ী থেকে একই এলাকার তারা মিয়ার স্ত্রী আফরোজা গংরা উচ্ছেদ করে প্রায় অর্ধকোটি টাকা মুল্যের পৌনে ৯ শতাংশ জমিসহ একটি টিনসেড বিল্ডিং বাড়ী বেদখল করে নেওয়ার চাঞ্চল্যকর খবর পাওয়া গেছে। এতে ওই পরিবারটি মানবেতর জীবন যাপন করলেও দীর্ঘদিনেও এর কোন প্রতিকার পায়নি তারা। সরেজমিন ঘুরে জানাগেছে, দেওয়ানগঞ্জ সুগার মিল কর্মচারী শাহজাহান ২০০৫ সালে দেওয়ানগঞ্জ পৌরসভাধীন চরভবশুর মৌজার ১১৩৮ নং খতিয়ানের ১০৯১ ও ১০৯২ নং দাগে সোয়া আট শতাংশ জমি একই গ্রামের সফিউজ্জামান ওরফে অনু মিয়ার নিকট থেকে সাব কবলা দলিল মূলে ক্রয় করে। পরে সেখানে তারা বসত:ভিটা নির্মান পূর্বক বসবাস শুরু করে। এ অবস্থায় গত ০৯.০৮.২০১০ ইং তারিখে একই গ্রামের তারা মিয়ার স্ত্রী আফরোজা দেওয়ানগঞ্জ থানায় লিখিত অভিযোগ দিয়ে পুলিশের সতর্কীকরণ নোটিশে জানান দেয় যে শাহজাহানের ভোগ দখলীয় জমির মধ্যে আফরোজার সাড়ে তিন শতাংশ জমি দাবী রয়েছে। এ নিয়ে দু’পক্ষের মাঝে দফায় দফায় ঝগড়া বিবাদ চলাকালে দেওয়ানগঞ্জ পৌর মেয়রের নির্দেশে গত ২২.০৪.২০১২ তারিখে ৭নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর শামছুল আলম দুলা দুই পক্ষের বিরোধ মেটাতে সালিশ বৈঠকের আয়োজন করে। ওই সালিশ বৈঠকে নালিশী ভূমিটি বসতভিটা বিবেচনায় বৈঠকের মাতাব্বররা আফরোজার দাবীকৃত ৪শতাংশ জমির মুল্য ১লাখ টাকা ধার্য করে জমিটি শাহজাহানকে সাফ কবলা দেয়ার সর্বসম্মত সিদ্ধান্ত জানায়। ওই সিদ্ধান্ত মেনে নিয়ে আফরোজা ওইদিনই শাহজাহানের কাছ থেকে নগদ ৫০ হাজার টাকা নেয় এবং পরবর্তী সময়ে বাকী ৫০হাজার টাকা নিয়ে সাব কবলা দলিল সম্পাদন করে দিবে মর্মে ষ্ট্যাম্পে বায়না পত্র দলিল সম্পাদন করে দেয়। কিন্তু বায়নার মেয়াদ শেষ হওয়ার আগেই গত ২৪.০৪.১২ তারিখে আফরোজা বায়নার অবশিষ্ট টাকা না নিয়ে শাহজাহানের সাথে প্রতারণা করে আফরোজা ওই নালিশী জমিটি তার নিজ কন্যার নামে হেবা দলিল সম্পাদন করে। এরপর গত ০৮.০৪.১৩ তারিখে স্থানীয় ভারাটে গুন্ডা-মাস্তান লেলিয়ে দিয়ে শাহজাহানের পরিবারকে তাদের ভোগদখলীয় বাড়ীসহ নালিশী ভূমি থেকে উচ্ছেদ করে নিজেদের দখলে নেয়। এঘটনায় শাহজাহান দেওয়ানগঞ্জ পৌর সভায় আবারও অভিযোগ করলে আফরোজা গংরা পৌর সভায় হাজির না হয়ে উল্টো টালবাহানা শুরু করে। এতে পৌর মেয়র বিষয়টি নিস্পত্তি করতে না পেরে ন্যায় বিচার প্রাপ্তি নিশ্চিত করতে শাহজাহানকে জামালপুর আদালতে মামলা দায়ের করার পরামর্শে এক লিখিত প্রতিবেদন দেন। এরপর নিরুপায় হয়ে গত ২৮.০৩.২০১৩ তারিখে শাহজাহান জামালপুর আদালতে ১০৭/১৩ নং মোকদ্দমা দায়ের করেন যাহা বিচারের প্রক্রিয়ায় রয়েছে। এ অবস্থায় নিরীহ পরিবারটি অন্যত্র মানবেতর জীবন যাপন করলেও আফরোজা গংদের লালিত সন্ত্রাসীরা মামলা তুলে নিতে শাহজাহানকে দফায় দফায় প্রাণনাশের হুমকি প্রদান করে। এতে গত ০৮.০৪.১৩ তারিখে দেওয়ানগঞ্জ থানায় ওই সন্ত্রাসীদের বিরুদ্ধে জিডি এন্ট্রি করলেও দীর্ঘদিনেও কোন প্রতিকার পায়নি বলে নিরীহ সুগারমিল কর্মচারী শাহজাহান জানিয়েছেন।

এব্যপারে আফরোজা বেগমের সাথে মুঠো ফোনে কথা বললে তিনি শাহজাহানের জমি বেদখল করার বিষয়টি অস্বীকার করেন। তবে তার জমিতে টিনসেড বিল্ডিং বাড়ী করায় তিনি শাহজাহানকে সেখান থেকে উচ্ছেদ করে নিজেদের দখলে নিয়েছেন বলে জানান।
এব্যপারে দেওয়ানগঞ্জ উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান আবুল কালাম আজাদ জানান, তিনি পৌর মেয়র থাকাকালীন ওই নালিশী ভুমির বিরোধ নিস্পত্তির জন্য আফরোজাকে বার বার নোটিশ দেওয়ার পরও পৌর সভায় হাজির হয়নি। তিনি আরও জানান শাহজাহানের বায়না দলিল ও ক্রয়কৃত জমির কাগজপত্র সঠিক থাকার পরও শাহজাহানের সাথে প্রতারণা করে আফরোজা অন্যায়ভাবে নালিশী ভুমি তার কন্যার নামে হেবা দলিল সম্পাদন করেছেন।

 

WP2Social Auto Publish Powered By : XYZScripts.com
Send this to a friend