চট্টগ্রামে ২১৪ সড়ক দুর্ঘটনায় ১৭৭ জনের প্রাণহানি
চলতি বছরের প্রথম ৬ মাসে চট্টগ্রামে ২১৪টি সড়ক দুর্ঘটনায় ১৭৭ জনের প্রাণহানি ঘটেছে। এসব ঘটনায় আহত হয়েছেন ৭৯৩ জন। চলতি বছরের জানুয়ারি থেকে জুন পর্যন্ত ৬ মাস সড়ক দুর্ঘটনা মনিটরিং করে বাংলাদেশ যাত্রী কল্যাণ সমিতি চট্টগ্রাম আঞ্চলিক কমিটির সড়ক দুর্ঘটনা মনিটরিং সেল সোমবার এ রিপোর্ট প্রকাশ করে। রিপোর্টের তথ্য অনুযায়ী, চলতি বছরের জানুয়ারি মাসে ৩৯টি সড়ক দুর্ঘটনায় ৩৪ জন নিহত ও ১৩৪ জন আহত হন। ফেব্রুয়ারিতে ২৮টি দুর্ঘটনায় ১৩ জন নিহত ও ৫৬ জন আহত, মার্চে ২৭ দুর্ঘটনায় ১৯ জন নিহত ও ১৪২ জন আহত, এপ্রিলে ৩৯ দুর্ঘটনায় ৪১ জন নিহত ও ১০৯ জন আহত, মে মাসে ৪৬ দুর্ঘটনায় ৩৯ জন নিহত ও ১৫৮ জন আহত এবং জুনে ৩৫ দুর্ঘটনায় ৩১ জনের প্রাণহানি ও ১৯৪ জন আহত হন। এর মধ্যে ৬৬ জন চালক, ১৬ জন পরিবহন শ্রমিক, ৫৬ জন পথচারী, ৫ জন সেনা সদস্য, ২৭ জন পুলিশ সদস্য, ৭১ জন ছাত্র, ২৩ জন বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতাকর্মী, ৫২ জন নারী, ৩৫ জন শিশু, ৩ জন চিকিৎসক, ২ জন শিক্ষক সড়ক দুর্ঘটনার শিকার হন। চট্টগ্রামে সংঘটিত এসব সড়ক দুর্ঘটনার ৬৫ শতাংশই বেপরোয়া গাড়ি চালানোর কারণে ঘটেছে বলে বাংলাদেশ যাত্রী কল্যাণ সমিতির প্রতিবেদনে উঠে এসেছে। এছাড়া ১৫ শতাংশ সড়কের ওপর হাট-বাজার, ২০ শতাংশ দুর্ঘটনা যানবাহনে ক্রটির কারণে সংঘটিত হয়েছে। চালকদের প্রশিক্ষণের পাশাপাশি সচেতনতা বৃদ্ধি ছাড়া সড়ক দুর্ঘটনা রোধ করা সম্ভব নয় বলে মনে করেন বাংলাদেশ যাত্রী কল্যাণ সমিতি চট্টগ্রাম আঞ্চলিক শাখার সভাপতি মো. মোজাম্মেল হক চৌধুরী। তিনি বাংলানিউজকে বলেন, দুর্ঘটনার মূল কারণ চালকদের বেপরোয়া গাড়ি চালনা। এছাড়া তারা প্রতিযোগিতা করতে গিয়ে দুর্ঘটনা ঘটাচ্ছেন। এসব বিষয়ে তাদের সচেতন করে তুলতে হবে। পাশাপাশি সড়কের পাশ থেকে বাজার উচ্ছেদ করে পথচারীদের জন্য ফুটপাত উন্মুক্ত করে দিতে হবে।
তিনি জানান, এসব দুর্ঘটনার অধিকাংশই ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের সীতাকুণ্ড-মিরসরাই অংশে বেপরোয়া গতির ট্রাক ও কাভার্ড ভ্যান এবং চট্টগ্রাম কক্সবাজার মহাসড়কের পটিয়া, চন্দনাইশ, দোহাজারী, চকরিয়া অংশের বেপরোয়া বাস ও মাইক্রোবাসের কারণে সংঘটিত হয়েছে।
দুর্ঘটনার শিকার যাত্রী ও চালককে যানজট ও উদ্ধারকর্মী সংকটের কারণে দ্রুততম সময়ে চিকিৎসা কেন্দ্রে পাঠাতে না পারায় প্রাণহানির সংখ্যা উদ্বেগজনক হারে বাড়ছে ওই রিপোর্টে উল্লেখ করা হয়েছে।
এদিকে একই সময়ে ট্রেনে কাটা পড়ে চট্টগ্রাম-সীতাকুণ্ড সড়কে ১৪ জন নিহত হন। এর মধ্যে সীতাকুণ্ডে ৬ জন, মিরসরাইয়ে ২ জন, বায়েজিদে ২ জন, চট্টগ্রাম রেলওয়ে স্টেশনে ১ জন, পাহাড়তলীতে ২ জন এবং চান্দগাঁওয়ে ১ জন নিহত হন।
মো. মোজাম্মেল হক চৌধুরী বলেন, ট্রেনে কাটা পড়ার ঘটনা মনিটরিংয়ে দেখা গেছে, রেললাইনের ওপর দিয়ে মোবাইল ফোনে কথা বলতে বলতে পথ চলতে গিয়ে বেশিরভাগ দুর্ঘটনা সংঘটিত হচ্ছে। এ বিষয়েও সাধারণ মানুষকে সচেতন করে তুলতে হবে।