এক হাতেই তালি বাজাচ্ছেন শ্রীনিবাসন

nnn_0

২৮ জানুয়ারি দুবাইয়ে আইসিসির বৈঠকে ‘তিন মোড়লের’ (ভারত, ইংল্যান্ড এবং অস্ট্রেলিয়ান ক্রিকেট বোর্ড) প্রস্তাবে সরাসরি বিরোধিতা করে বাংলাদেশ, পাকিস্তান, শ্রীলংকা এবং দক্ষিণ আফ্রিকান ক্রিকেট বোর্ড। ফলে ভারত, ইংল্যান্ড এবং অস্ট্রেলিয়াকে অধিকতর ক্ষমতা দিয়ে প্রণীত খসড়া প্রস্তাবটি পাশ হয়নি। কারণ ১০ সদস্যের আইসিসিতে কোনো প্রস্তাব পাশ করতে হলে সাতটি ভোটের প্রয়োজন পড়ে।

তিন মোড়লের এমন প্রস্তাবে প্রথমে বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড (বিসিবি) চুপ থাকলেও এমন হঠকারি প্রস্তাবের বিপক্ষে ক্ষোভ জানায় বাংলাদেশের ক্রিকেট পাগল মানুষ। হয় মানববন্ধনসহ তীব্র প্রতিবাদ। শেষ পর্যন্ত বাংলাদেশসহ টেস্ট প্লেয়িং আরো তিনটি দেশের বিরোধিতায় টেকেনি ক্রিকেটকে বিভক্ত করার প্রস্তাব।

সাবেক বিসিসিআই সভাপতি শ্রীনিবাসন আন্তর্জাতিক ক্রিকেট কাউন্সিলের (আইসিসি) চেয়ারম্যান বনে যাওয়ায় আবারও নতুন করে শুরু হয়েছে ক্রিকেট নিয়ে ভাবনার। নিজ দেশ ভারতের সাম্প্রতিক পারফরম্যান্স চিন্তায় ফেলেছে শ্রীনিবাসনকে। ২০১০ সালের পর উপমহাদেশের বাইরে খেলতে গিয়ে মাত্র দুটি সিরিজে জয় পেয়েছে মহেন্দ্র সিং ধোনিরা। সেটিও দুই নিচু সারির দল ওয়েস্ট ইন্ডিজ আর জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে। দুই দফায় দক্ষিণ আফ্রিকা সফরে গিয়ে হেরেছে টেস্ট ও ওয়ানডে সিরিজ। ২০১১ ও ২০১২ সালে ইংল্যান্ড ও অস্ট্রেলিয়া সফরে গিয়ে হয়েছিল হোয়াইটওয়াশ। এ বছরের শুরুতে নিউজিল্যান্ড সফরে গিয়েও ভারতকে ফিরতে হয়েছে খালি হাতে।

তাইতো নিজ ক্ষমতার (আইসিসি চেয়ারম্যান) গুনে বড় বড় সব আসর নিজ দেশে আয়োজনের বন্দোবস্ত করে ফেলেছেন শ্রীনিবাসন। আইসিসিতে ক্ষমতা অনেকটা নির্ভর করে নিজ দেশের পারফরম্যান্সের উপর। আর শীর্ষ তিনের মধ্যে না থাকতে পারলেতো মাতুব্বুরি করার নৈতিক ক্ষমতা হারিয়ে ফেলবেন। অঘোষিত এই সত্য ভালোভাবেই জানেন তিনি। আর তাইতো ভারতের অবস্থানকে টিকিয়ে রাখতে আইসিসির সব বড় আসরের আয়োজক এখন ভারত। অনেকে বলেন, শীর্ষে থাকার জন্য সম্ভব হলে অ্যাওয়ে সিরিজগুলোও ভারত নিজেদের মাঠেই করতো। তবে সেটি সম্ভব না হলেও আগামী বড় তিনটি আইসিসি টুর্নামেন্ট নিজেদের মাঠেই আয়োজন করতে চলেছে ভারত। ক্রিকেট দলের সাফল্যের পাশাপাশি অর্থনৈতিকভাবে লাভবান হওয়ারও বিষয় তো আছেই।

আইসিসির ভবিষ্যত সফরসূচি অনুযায়ী ২০১৫ সালের পর আইসিসির তিনটি বড় প্রতিযোগিতা এককভাবে আয়োজন করবে ভারত। ২০১৬ সালের টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ, ২০২১ সালের চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি ও ২০২৩ সালের বিশ্বকাপ। এর আগে উপমহাদেশের কোনো দেশ এককভাবে বিশ্বকাপ আয়োজনের সুযোগ পায়নি। ১৯৮৭, ১৯৯৬ ও ২০১১ সালে বিভিন্নভাবে ভারতের সঙ্গী ছিল পাকিস্তান, শ্রীলঙ্কা ও বাংলাদেশ। ২০২৩ সালের বিশ্বকাপেও সহ-আয়োজক হওয়ার দেন-দরবার চালিয়েছিল বাংলাদেশ। কিন্তু এই প্রস্তাব গ্রাহ্য করেনি ভারত।

আইসিসির চেয়ারম্যান এন শ্রীনিবাসন বেশ দম্ভের সঙ্গে বলেছেন, ‘এর আগে ভারত ১৬-১৮ বছরে একবার সুযোগ পেত আইসিসির একটি প্রতিযোগিতা আয়োজনের। আমরা ২০১১ সালে বিশ্বকাপ আয়োজন করেছি ১৫ বছর পর। আর সেটাও আমাদের ভাগ করে নিতে হয়েছে অন্য দেশগুলোর সঙ্গে। এখন তিনটা বড় প্রতিযোগিতাই ভারতে অনুষ্ঠিত হবে আট বছরের মধ্যে। আর এটা খুবই তাত্পর্যপূর্ণ।’

আইসিসি চেয়ারম্যান এখন শ্রীনিবাসন। কিন্তু আইসিসির প্রেসিডেন্ট তো বাংলাদেশেরই। তাতে লাভ হলো কই? আইসিসি সভাপতিকে যে এশিয়ার প্রতিনিধি হিসেবে অলংকার বানিয়ে রাখা হয়েছে-তা স্পষ্ট। আবর্তন রীতি অনুযায়ী, ২০৩৫ সালের আগে বাংলাদেশে বিশ্বকাপ আয়োজনের কোনো সম্ভাবনা থাকলো না। ক্রিকেটে ভারতের ‘দাদাগিরি’ তাই বাংলাদেশের জন্য বড় হুমকির।

– See more at: http://www.priyo.com/2014/08/11/94774sz.html#sthash.q8NG8oXG.dpuf

WP2Social Auto Publish Powered By : XYZScripts.com
Send this to a friend