বাংলাদেশের সম্প্রচার নীতিমালার উপর নজর রাখছে কানাডা: কানাডিয়ান হাইকমিশনার
বাংলাদেশের সম্প্রচার নীতিমালার ওপর গভীর নজর রাখছে কানাডা। ভবিষ্যতেও এ নজরদারি বহাল থাকবে বলে জানিয়েছেন ঢাকায় নিযুক্ত কানাডার হাইকমিশনার হিদার ক্রুডেন।
সোমবার সকালে জাতীয় প্রেসক্লাবে সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তরে হিদার এ অভিমত দেন। এর আগে হিদার ক্রুডেন আজ ডিপ্লোমেটিক করেসপনডেন্টস অ্যাসোসিয়েশন, বাংলাদেশ (ডিকাব) আয়োজিত ‘ডিকাব টক’ অনুষ্ঠানে সংগঠনের সদস্যদের সঙ্গে মতবিনিময় করেন। ডিকাব সভাপতি মাইনুল আলমের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য দেন সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক আঙ্গুর নাহার।
এই নীতিমালার মধ্য দিয়ে গণমাধ্যমের স্বাধীনতা ক্ষুন্ন হবে কি না- প্রশ্ন করা হলে কানাডার হাইকমিশনার বলেন, এ বিষয়ে আমরা গভীর নজর রাখছি এবং রাখব। এখন পর্যন্ত আমি যতটা জেনেছি, তা এটির বাংলা সংস্করণের ভিত্তিতে। গণমাধ্যমে যা বেরিয়েছে, তা থেকে জেনেছি। নীতিমালার ইংরেজি সংস্করণটি যখন পাওয়া যাবে, তখন সেটি দেখে বা পড়ে এ ব্যাপারে বিস্তারিত মন্তব্য করা যাবে।
গত ৫ জানুয়ারির নির্বাচনে বিএনপি রেনতৃত্বাধীন ১৯-দলীয় জোট অংশ না নেওয়ায় কানাডাসহ পশ্চিমা বিশ্ব দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচন নিয়ে সমালোচনামুখর ছিল।
নির্বাচনের সাত মাস পর সুশাসন, সরকারের কাজের মূল্যায়ন ও বাংলাদেশের রাজনৈতিক পরিস্থিতি কীভাবে দেখছেন এমন প্রশ্নের উত্তরে হিদার ক্রুডেন বলেন, সহিংসতার অবসান হওয়ায় সবাই হাঁফ ছেড়ে বেঁচেছেন। আমি আশা করি, ফের সহিংসতা শুরু হবে না। বিএনপি আন্দোলনের ঘোষণা দিয়েছে। আশা করব এ আন্দোলন সহিংসতামুক্ত হবে।
সহিংসতাপ্রবণ আন্দোলনের বিরোধিতা করে কানাডার হাইকমিশনার হিদার ক্রুডেন বলেন, আমি মনে করি, সহিংসতা বাংলাদেশ ও বাংলাদেশের জনগণের জন্য সহায়ক নয়। দুই দলকে সংলাপে বসার ব্যাপারে আমরা অব্যাহতভাবে আহ্বান জানিয়ে যাচ্ছি। আমাদের প্রত্যাশা, কোনো একপর্যায়ে গিয়ে দুই দল আলোচনায় বসবে। তবে এই আলোচনা শুধু আগামী নির্বাচন নয়, পাঁচ বছর পর কোন প্রক্রিয়ায় নির্বাচন হবে, সেটি ঠিক করতে এ আলোচনা হবে।
বাংলাদেশ ও তার অর্থনীতির জন্য ঘন ঘন নির্বাচন অনুষ্ঠানকে প্রতিবন্ধক হিসেবে মনে করেন হিদার ক্রুডেন। তিনি বলেন, ‘নির্বাচনের আয়োজন শুরু হলে প্রবৃদ্ধি ব্যাহত হয়, লোকজন হতাহত হয়, লোকজন বাড়ির বাইরে বের হতে পারেন না আর সহিংসতা হয়। তাই আমরা চাই এ চক্র বন্ধ হোক।
কানাডার হাইকমিশনার বলেন, বাংলাদেশে প্রধান দুই রাজনৈতিক দলের মাঝে আমরা আস্থার সংকট দেখতে পাই। আমরা চাই রাজনৈতিক এ সংস্কৃতির অবসান হোক।
সরকার যখন বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াকে সভা-সমাবেশে যেতে বাধা দেয়, তখন তা সহিংস আন্দোলনকে উসকে দেয় কি না, প্রশ্ন করা হলে সরাসরি মন্তব্য করা থেকে বিরত থেকেছেন হিদার ক্রুডেন। তবে তিনি বলেন, সরকার যদি নিরাপত্তা ব্যাহত হওয়ার আশঙ্কায় কোনো পদক্ষেপ নেওয়ার কথা ভাবে, সেটি করার অধিকার তার রয়েছে।
বঙ্গবন্ধুর আত্মস্বীকৃত খুনি ও মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত সাবেক সেনা কর্মকর্তা নুর চৌধুরীকে বাংলাদেশে ফেরত পাঠানোর ব্যাপারে অগ্রগতি আছে কি না, জানতে চাইলে হিদার ক্রুডেন বলেন, ‘বাংলাদেশের আইন অনুযায়ী নুর চৌধুরীকে এ দেশে ফেরত পাঠানোর গুরুত্বের বিষয়টি কানাডা বুঝতে পারে। তবে তাঁর বিষয়টি কানাডার আইনে বিচারাধীন থাকায় ব্যক্তিগত আইনের পরিপ্রেক্ষিতে তাঁর বিষয়টি নিয়ে মন্তব্য করতে পারছি না।