শিক্ষার্থীরা আজ ফুটপাতে বসে পরীক্ষা দিল
রাজধানীর বেইলি রোডে বাংলাদেশ গার্ল গাইড অ্যাসোসিয়েশন সংলগ্ন সামাজিক শিক্ষাকেন্দ্র সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা আজ মঙ্গলবার ফুটপাতে বসে পরীক্ষা দিল। কারণ, বিদ্যালয়টি ভেঙে গুঁড়িয়ে দেওয়া হয়েছে। এই এলাকায় এটিই একমাত্র সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়।
৭ আগস্ট থেকে বিদ্যালয়ের শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা এই করুণ অবস্থায় আছে। গতকাল সোমবার থেকে প্রাথমিক বিদ্যালয়ে দ্বিতীয় সাময়িক পরীক্ষা শুরু হয়। বাধ্য হয়ে বিদ্যালয়টির শিশু শিক্ষার্থীদের খোলা আকাশের নিচে বসে পরীক্ষা দিতে হচ্ছে।
স্কুলটির প্রধান শিক্ষক রওশন আরা বেগম অভিযোগ করে বলেন, আজ সকালে পরীক্ষা নেওয়ার জন্য শিক্ষার্থীদের নিয়ে ভেঙে দেওয়া স্কুলের জায়গায় যাওয়ার চেষ্টা করলে গার্ল গাইড অ্যাসোসিয়েশনের দারোয়ানেরা বাধা দেয়। তাই ফুটপাতেই শিক্ষার্থীদের পরীক্ষা নিতে হয়েছে।
কিছুক্ষণ এ অবস্থা চলার পর রমনা থানার পুলিশের উপপরিদর্শক সাঈদ ইবনে সিদ্দিকের নেতৃত্বে কয়েকজন পুলিশ এসে শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের ভাঙা স্কুলের ভেতরে প্রবেশের ব্যবস্থা করেন।
সরেজমিনে গিয়ে যায়, স্কুলের ভাঙা জায়গায় কয়েকটি বেঞ্চে শিক্ষার্থীরা বসে আছে।
এদিকে আজ ঢাকার বিভাগীয় কমিশনার জিল্লার রহমান খবর পেয়ে বিদ্যালয়টি পরিদর্শন করেন। এ বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, সব কিছু দেখেশুনে আমি সরকারের কাছে প্রতিবেদন দেব। এ বিষয়ে সরকারই সিদ্ধান্ত নেবে।
এদিকে বাধা দেওয়া অভিযোগর বিষয়ে জানার জন্য গার্ল গাইড অ্যাসোসিয়েশন কার্যালয়ে গিয়ে কর্মকর্তাদের সঙ্গে কথা বলতে চাইলে কর্মচারীরা জানান, কর্মকর্তা পর্যায়ের কেউ কার্যালয়ে নেই। মোবাইল নম্বর চাইলেও তাঁরা দেননি।
পরে একজন কর্মকর্তার মোবাইল নম্বর সংগ্রহ করে ফোন দিলেও নম্বরটি বন্ধ পাওয়া যায়।
মন্ত্রণালয় ও বাংলাদেশ গার্ল গাইডস অ্যাসোসিয়েশন সূত্রে জানা যায়, ১৯৬২ সালে গাইড হাউস বিদ্যালয়টি প্রতিষ্ঠা করলেও ১৯৭৩ সালে অন্যান্য প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সঙ্গে এই বিদ্যালয়টিও সরকারি করা হয়। তখন বিদ্যালয়টি অধিগ্রহণ করা হয়। তখন থেকেই সেটি প্রাথমিক শিক্ষা বিভাগের অধীনে পরিচালিত হয়ে আসছে। কিন্তু এক পর্যায়ে গার্ল গাইডস অ্যাসোসিয়েশন এখানে বিদ্যালয়টি যেন না থাকে তার চেষ্টা চালায়। শেষ পর্যন্ত বিষয়টি আদালত পর্যন্ত গড়ায়। দীর্ঘদিন এই অবস্থায় চলায় বিদ্যালয়টি ভঙ্গুর অবস্থায় পৌঁছায়। তবে মামলার রায় অ্যাসোসিয়েশনের পক্ষে যায়।
রমনা থানা শিক্ষা কর্মকর্তা মমতাজ বেগম গতকাল সোমবার জানান, এ বিষয়ে গতকাল (রোববার) উচ্চ আদালতে আপিল আবেদন করা হয়েছে।