শেরপুর সদর উপজেলা নির্বাচন## বিএনপির প্রার্থী এডভোকেট সিরাজুল ইসলাম ॥ আওয়ামীলীগের বিদ্রোহী প্রার্থী মিনালকে অব্যাহতি
শেরপুর সদর উপজেলা নির্বাচনে বিএনপি সমর্থক চেয়ারম্যান প্রার্থী ছিলেন ৪ জন। এর মধ্যে এডভোকেট সিরাজুল ইসলামকে দলীয় প্রার্থী হিসাবে সমর্থন দিয়েছে শেরপুর জেলা বিএনপি। এদিকে জেলা বিএনপির এই মনোনয়ন নির্ধারণ হবার পর প্রার্থীতা প্রত্যাহার করেছেন বিএনপি সমর্থক প্রার্থী মামুনুর রশিদ পলাশ ও শফিকুল ইসলাম মাসুদ। কিন্তু রয়ে গেছেন বিএনপি সমর্থক আরেক প্রার্থী জহুরুল ইসলাম আবু।আওয়ামীলীগের সমর্থন অনেক আগেই আনুষ্ঠানিক ভাবে দেয়া হয়েছিল জেলা আওয়ামীলীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও শেরপুর বাস কোচ মালিক সমিতির সভাপতি সানোয়ার হোসেন সানুকে। কিন্তু দলের সিদ্ধান্ত অম্যান্য করে মনোনয়ন দাখিল করেন জেলা আওয়ামীলীগের আরেক যুগ্ম সম্পাদক মিনহাজ উদ্দিন মিনাল। সর্বশেষ গত ১৩ আগস্ট দলীয় সভায় দলীয় সিদ্ধান্ত অমান্যের জন্য মিনহাজ উদ্দিন মিনালকে দল থেকে অব্যাহতি দেয়া হয়েছে বলে জানিয়েছে দলীয় সূত্র।
দলীয় সিদ্ধান্ত যাই হোক কিন্তু নির্বাচনে বিএনপি ও শাসক দল আওয়ামীলীগের দুজন করে প্রার্থী রয়ে গেলেন। বিএনপির দলীয় প্রার্থী এডভোকেট সিরাজুল ইসলাম ও বিদ্রোহী প্রার্থী জহুরুল ইসলাম আবু এবং শাসক দল আওয়ামীলীগের দলীয় প্রার্থী সানোয়ার হোসেন সানু এবং আওয়ামীলীগের বিদ্রোহী প্রার্থী মিনহাজ উদ্দিন মিনাল নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন এটাই এখন পর্যন্ত সত্যি।
আর দুটি প্রধান দলেরই দুজন করে প্রার্থী থাকায় বিপাকে পড়তে হবে দুটি দলকেই বলে মনে করছেন নিজ নিজ দলের সমর্থকরা। আর এ সুযোগকে কাজে লাগাতে পারেন বর্তমান উপজেলা চেয়ারম্যান ইলিয়াস উদ্দিন এমন ধারণা অনেকেরই।
তবে উপজেলা চেয়ারম্যান থাকাকালীন অবস্থায় সদর আসনের সংসদ সদস্যের সাথে বিবাদে জড়িয়ে পড়া, বিভিন্ন উন্নয়নমূলক কাজের প্রতিশ্রুতি দিয়ে নির্বাচিত হবার পর সে অনুযায়ী তেমন কিছু করতে না পারার ব্যর্থতা এসব ইস্যু এবার বেশ ভোগাবে বর্তমান চেয়ারম্যান ইলিয়াস উদ্দিনকে। এছাড়াও জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান এরশাদ ও দলের ভোল পাল্টানোর খেলাকেও ভালো চোখে দেখছেনা সাধারণ মানুষ। ফলে জাতীয় পার্টির ইমেজ কে সামনে টেনে এবার ফিনিশিং লাইন পাড় হওয়া সত্যিকার অর্থেই কষ্টকর হয়ে দাঁড়াবে জেলা জাতীয় পার্টির সভাপতির পক্ষে।
অন্যদিকে জনপ্রিয়তার মাপকাঠি বিএনপির অনুকূলে থাকলেও দলের মধ্যে বিভেদ এবং দল সমর্থিত প্রার্থী এডভোকেট সিরাজুল ইসলামের আগের কোন নির্বাচনী অভিজ্ঞতা না থাকার ব্যাপারটি নির্বাচনী বৈতরণী পাড়ের বড় বাঁধা বলে মনে করছেন অনেকেই।
আওয়ামীলীগের দলীয় প্রার্থী সানোয়ার হোসেন সানুর পরিচিতি রয়েছে জেলা জুড়ে। গতবারও উপজেলা নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেছেন তিনি। ফলে স্বাভাবিক ভাবেই তার একটি পরিচিতি গড়ে উঠেছে। তবে দলের আরেক বিদ্রোহী প্রার্থী মিনহাজ উদ্দিন মিনাল চরাঞ্চলের আওয়ামীলীগের ভোটে একটি বড় ভাগ বসাতে পারে। ফলে তিনিও নির্বাচনী দৌড়ে শেষ পর্যন্ত বিজয়ী হতে পারবেন কি না তা ভাবার বিষয় বলে মনে করছেন খোদ দলের অনেকেই।
সব মিলিয়ে এবার অনেকটা অনিশ্চয়তার মধ্যেই শুরু হতে যাচ্ছে শেরপুর সদর উপজেলার নির্বাচনী প্রতিযোগিতা। শেষ দৌড়ে যে কে এগিয়ে যাবে তা পরিষ্কার হতে শেষ মুহূর্ত পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হতে পারে বলে মনে করছেন নির্বাচন বিশ্লেষকরা।