পাকিস্তান-ভারত সীমান্তে আবারো উত্তেজনা
আবারো উত্তপ্ত হয়ে উঠেছে পাকিস্তান-ভারত সীমান্ত। বুধবার জুম্মুর সীমান্ত লাগোয়া ভারতীয় সেনা ক্যাম্প লক্ষ্য করে গুলি চালিয়েছে পাকিস্তান।
অনুপ্রবেশ নিয়ে ভারতয়ি প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর কড়া মন্তব্যের একদিন পরেই গুলি চলল সীমান্তে।
ভারতীয় সেনাবাহিনীর এক সদস্য সংবাদসংস্থাকে জানায়, আর এস পুরা সেক্টরের আরনিয়ায় পাকিস্তানি রেঞ্জাররা গুলি চালিয়েছে।
মঙ্গলবার রাত ও বুধবার সকালে গুলি চলেছে বলে জানান তিনি।
গত পাঁচ দিনে এই নিয়ে চতুর্থবার শান্তি চুক্তি ভঙ্গ করল পাকিস্থান। পাকিস্তানের নিশানা করেছে বিএসএফের ছাউনিগুলি। গতকাল রাত ১১টা ৫৫ থেকে গুলি চালাতে শুরু করে পাকিস্তান। রাত ১টা নাগাদ গুলি চালানো বন্ধ হলেও, সকাল থেকেই তা আবার শুরু হয়ে গিয়েছে। এখনও গুলির লড়াই চলছে।
পাকিস্তানের হামলার জবাবও দিচ্ছে ভারত। সীমান্ত লাগোয়া অঞ্চলে সেনার সংখ্যা বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে দেশটি।
এদিকে শপথ গ্রহণ অনুষ্ঠানে নওয়াজ শরিফকে ডেকে সুম্পর্কের বার্তা দিলেও দু’মাস পরেই জম্মু ও কাশ্মীরে দাঁড়িয়ে পাকিস্তানকে কড়া হুঁশিয়ারি দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী।
লে ও কার্গিলে কয়েকটি অনুষ্ঠানে মোদী পাকিস্তানকে লক্ষ্য করেছেন বলে জানান। উল্লেখ্য, ১৯৯৯ সালে কার্গিল যুদ্ধের পরে এই প্রথম কোনও প্রধানমন্ত্রী সেখানে গেলেন। আর প্রধানমন্ত্রী হওয়ার পর এটা ছিল কাশ্মীরে মোদীর দ্বিতীয় সফর।
বেশ কিছু দিন ধরে পুঞ্চের নিয়ন্ত্রণরেখা বরাবর পাকিস্তান শান্তি চুক্তি লঙ্ঘন করছিল। এর সঙ্গেই চলছিল জঙ্গি কার্যকলাপ। গত কাল রাতেই পুলওয়ামা জেলায় বিএসএফের গাড়ি নিশানা করে আক্রমণ হয়েছে। এঘটনায় সাত জওয়ান সহ- আহত হয়েছেন আট জন।
সেনা ও বায়ুসেনার জওয়ানদের উদ্দেশে মোদী বলেন, আমাদের প্রতিবেশী দেশ প্রচলিত যুদ্ধে লড়ার শক্তি হারিয়েছে। তাই আমাদের বিরুদ্ধে সন্ত্রাসবাদের ছায়াযুদ্ধ চালিয়ে যাচ্ছে তারা।
মোদী ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, ভারতের সেনাবাহিনী যুদ্ধের থেকে সন্ত্রাসবাদের বলি হচ্ছে বেশি। সন্ত্রাসবাদকে আন্তর্জাতিক সমস্যা হিসেবে তুলে ধরে গোটা বিশ্বে এর বিরুদ্ধে প্রচারে যাওয়ার কথাও বলেন তিনি।
কিছু দিন আগে পাকিস্তানকে কড়া হুঁশিয়ারি দিয়ে নতুন সেনাপ্রধান দলবীর সিংহ সুহাগ মন্তব্য করেছিলেন, ভারতীয় সেনার মুণ্ডচ্ছেদের মতো কোনও ঘটনা যদি আর কখনও ঘটে, তা হলে পাকিস্তানকে যোগ্য জবাব দেওয়া হবে। মোদীর কথাতেও ছিল একই চড়া সুর। এ মাসের শেষ সপ্তাহে ইসলামাবাদে ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে সচিব পর্যায়ের বৈঠক নির্ধারিত রয়েছে। তার আগে মোদীর এই বক্তব্য যদিও শান্তি প্রক্রিয়াকে কোনোভাবেই প্রভাবিত করবে না বলেই দিল্লির কূটনৈতিক শিবিরের মত। তাঁদের অনেকেরই ব্যাখ্যা, নিয়ন্ত্রণরেখায় এবং কাশ্মীরের ভিতরে একের পর এক ঘটনায় প্রধানমন্ত্রী প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন ঠিকই, তবে জম্মু ও কাশ্মীরের সঙ্গে জুড়ে থাকা অন্যান্য দিকগুলিও চড়া বার্তার পিছনে অতিরিক্ত কারণ। কাশ্মীরের মাটিতে দাঁড়িয়ে শক্তিশালী কেন্দ্রীয় সরকারের বার্তা দিতে চেয়েছেন মোদী।
তথ্যসূত্র: জিনিউজ, আনন্দবাজার