দশম শ্রেণির ছাত্র বানিয়েছে অ্যাপ
১৩ আগস্ট ১৭ বছর পূর্ণ করেছে সে। ঢাকার ধানমন্ডি টিউটোরিয়ালে দশম শ্রেণিতে পড়ার সময়ই বানিয়ে ফেলে স্মার্টফোনের অ্যাপ্লিকেশন (অ্যাপ)। কিছুদিন আগে এই কিশোর ইশফার হাসান পরিবারের সঙ্গে পাড়ি জমিয়েছে যুক্তরাষ্ট্রে। সেখানেও দ্য উডল্যান্ড কলেজ পার্ক হাইস্কুলে দশম শ্রেণিতেই পড়ছে। হতে চায় সফটওয়্যার প্রকৌশলী, বানাতে চায় জনপ্রিয় অ্যাপস। মার্কিন মুলুকে ফোন করে জানা গেল, ইশফারের স্কুলে এখন ছুটি চলছে। হাসতে হাসতে বলল, ‘প্রোগ্রামিং শিখছি। অ্যান্ড্রয়েড ফোনের জন্য একটি গেম অ্যাপ তৈরির চেষ্টা করছি। গেমটি হবে ত্রিমাত্রিক (থ্রিডি) রেসিং ধাঁচের। সারা দিনই তো ছোটখাটো অ্যাপ তৈরির কাজ করি। এখনো অনেক কিছুই শিখতে হবে আমাকে। নিজেকে প্রস্তুত করার জন্য এ ধরনের অনুশীলনের দরকার আছে, এসব করেই সময় কেটে যায়।’
ইশফারের শুরুটা বাবার স্মার্টফোনে। অ্যাপ দেখা আর গেম খেলা, এই ছিল কাজ। ওদিকে মাথার ভেতরে বাজতে থাকে, কীভাবে অ্যাপ বানানো যায়। ধীরে ধীরে শিখে নেয় জাভা প্রোগ্রামিং ভাষা। মোবাইল ফোনেই গেম নির্মাণ করার চেষ্টা করতে থাকে সে।
গত বছরের শেষ দিকে জানতে পারে, জাতীয় পর্যায়ে মোবাইল অ্যাপ তৈরির প্রশিক্ষণ দেওয়া হচ্ছে। কিন্তু সেখানে স্কুলশিক্ষার্থীদের অংশগ্রহণের নিয়ম ছিল না। পরে ঢাকার একটি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় আয়োজিত প্রশিক্ষণ কর্মসূচিতে অংশ নেওয়ার সুযোগ পায়। সেখানে পাঁচ দিনের কর্মশালা শেষে বানিয়ে ফেলে ‘তসবিহ’ নামের অ্যাপ। এই অ্যাপ দিয়ে তসবিহর মতোই দোয়া কিংবা জিকির গণনা করে পড়া যাবে। জিকিররত অবস্থায় অ্যাপটি চালু রাখলে গণনার কাজটি হয়ে যাবে সহজেই। অ্যাপটি পাওয়া যাবে গুগল প্লে স্টোরে। ব্যবহার করা যাবে অ্যান্ড্রয়েড অপারেটিং সিস্টেমের স্মার্টফোনে।
দেশব্যাপী ওই প্রশিক্ষণ কর্মসূচি পরিচালনা করে এমসিসি লিমিটেড। প্রতিষ্ঠানটির প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা আশ্রাফ আবীর বললেন, ইশফার খুবই মেধাবী। অনলাইনের মাধ্যমে মেধা যাচাই পরীক্ষা দিয়ে কর্মশালায় অংশগ্রহণ করে। কর্মশালা শেষে ‘তসবিহ’ অ্যাপটি বানায়। ওর চর্চা দেখেই বলা যায়, ও বিশ্বমানের অ্যাপ বানাতে পারবে।
যুক্তরাষ্ট্রে গিয়েও অ্যাপ তৈরি করেছে ইশফার। ‘টেম্পারেচার ক্যালকুলেটর’ নামের অ্যাপটি ছোট কিন্তু কাজের। এতে দুটি বিষয় আছে—তাপমাত্রা পরিমাপক ও কনভার্টার। অ্যাপটি দিয়ে যেকোনো জায়গার স্থানের তাপমাত্রা জানা যাবে এবং তাপমাত্রার পরিমাণকে বিভিন্ন এককে রূপান্তর করা যাবে। এ ছাড়া সাধারণ গাণিতিক হিসাবও করা যাবে অ্যাপটির মাধ্যমে।
ইশফার এখন অনলাইনে বসেই প্রশিক্ষণ নিচ্ছে মোবাইল গেম ডেভেলপমেন্টের ওপর। অবসর সময়টুকুও কাটে বন্ধু ল্যাপটপের সঙ্গে।