নালিতাবাড়ীতে বণ্যহাতির হামলায় ১০টি পরিবার গৃহহীন # খোলা আকাশের নিচে বাস করছে পরিবারগুলো
মো: মঞ্জুরুল আহসান:শেরপুরের নালিতাবাড়ী কাটাবাড়ী এলাকায় বণ্যহাতির দল ১৮টি বসতঘর ভেংগে ঘরের আসবাবপত্র পা দিয়ে পিষিয়ে দিয়েছে। হাতির হামলায় ঘরবাড়ি হারিয়ে ১০টি পরিবার খোলা আকাশের নিচে অবস্থান করছে। ঘটনাটি ঘটেছে শুক্রবার রাতে।
এলাকাবাসী জানায়, প্রায় ৭০/৮০টি বণ্য হাতি রাতের আধারে হঠাৎ কাটাবাড়ী এলাকায় হামলা চালায়। হাতির দল চারদিক থেকে গ্রামটিকে ঘিরে ফেলে। গ্রামের মানুষের ডাক চিৎকারে আশপাশের লোকজন ছুটে আসলেও ভেতরে ঢুকতে পারে না। আগুনের মশাল, বিভিন্ন শব্দ,হৈ হুল্লুর করেও কোন লাভ হয় নি। কারণ এখন তারা ভয় পায় না। বরং উল্টো হামলা করে। সন্ধ্যার পর থেকে টানা ৬ ঘন্টা ধ্বংস যজ্ঞ চালায় হাতির দল। গোলাভরা ধান, ঘরের আসবাবপত্র, বাসন-কোসন, আদা, হলুদ, আলু সহ বিভিন্ন গাছপালা খাওয়ার পর রাত ৩টায় চলে যায়।
কাটাবাড়ি এলাকার অরুন ¤্রং, কার্টিনা সাংমা, রাশিয়া মানখীন, সুজয় ¤্রং, অঞ্জন চিসিম, প্রবাত চিসিম, বিন্দু খাতুন, শামছুল হক, অজয় চিসিম, আবু মিয়ার বসতের ঘর ভেংগে গৃহহীন করেছে হাতির দল। এই পরিবারগুলো ঘরবাড়ি হারিয়ে এখন খোলা আকাশের নিচে বসবাস করছে।
অজয় চিসিম জানায়, হাতির দল যখন আমার বাড়িতে হামলা করে তখন আমি বাঁশ বেয়ে উপরে ওঠে থাকি। আমার চোখের সামনে আমার ঘর ভাংলেও আমি ফিরাতে পারিনি। ভয়ে নিজেকে লুকিয়ে রেখে দেখি প্রায় ৮০/৯০টি হাতি আক্রমন শুরু করেছে।
সুরঞ্জিতা জানায়, আমরা আদিবাসী সকল পরিবার ভয়ে একটি ঘরে সারারাত কাটিয়েছি। হাতির তীব্র আক্রমণে আমাদের বের হওয়ার কোন উপায় ছিল না।
ট্রাইবাল ওয়েল ফেয়ার এ্যাসোসিয়েশনের চেয়ারম্যান লুইস নেংমিনজা বলেন, পাহাড়ে হাতির কোন খাবার নেই। তাই তারা লোকালয়ে হামলা করছে। এ্যাসোসিয়েশনের পক্ষ থেকে ক্ষতিগ্রস্তদের মাঝে ১০ লিটার কেরোসিন তেল বিতরণ করা হয়েছে।
বারোমারী ক্যাথলিক মিশনের পাল পুরোহিত ফাদার মনীন্দ্র এম চিরান জানান, মিশনের পক্ষ থেকে আমরা প্রতিটি পরিবারকে ১০ কেজি করে চাল দিয়েছি। পাহাড়ি পল্লীগুলোতে বর্তমানে হাতি আতংক তীব্র আকার ধারণ করেছে। নির্ঘুম রাত কাটছে মানুষের। তবুও রেহাই নেই। সুযোগ বুঝে হাতি হামলা করছে লোকালয়ে। গাছপালা, গাছের ফল, ক্ষেতের ফসল, বাড়িঘর যেন হাতির প্রধান খাবার। আতংকিত গ্রামবাসী সরকারের কাছে এর প্রতিকার চায়।