ইমরান খানের নেতৃত্বে ইসলামাবাদে পিটিআই-এর অবস্থান কর্মসূচি শুরু
তাদের সঙ্গে মিল রেখে নিজস্ব কর্মসূচি পালন করছে ধর্মীয় নেতা তাহিরুল কাদরির দল পাকিস্তান আওয়ামী তেহরিক (পিএটি)।
গত বৃহস্পতিবার পাঞ্জাব প্রদেশের রাজধানী লাহোর থেকে দল দুটির হাজার হাজার কর্মী রাজধানী ইসলামাবাদের উদ্দেশে যাত্রা শুরু করে। তাদের ঠেকাতে পাকিস্তান সরকার রাজধানীজুড়ে ব্যাপক নিরাপত্তা ব্যবস্থা গ্রহণ করে। গত বছর অনুষ্ঠিত সাধারণ নির্বাচন বাতিল এবং ওই নির্বাচনে জালিয়াতিতে জড়িত ব্যক্তিদের শাস্তির দাবিতে লংমার্চের ঘোষণা দেন ক্রিকেটার থেকে রাজনীতিক হওয়া ইমরান খান। এ জন্য তারা পাকিস্তানের স্বাধীনতা দিবসকেই বেছে নেন। তার সঙ্গে একাত্মতা প্রকাশ করে একই দিনে নিজস্ব কর্মসূচি দেয় ড. তাহিরুল কাদরির পিএটি। লংমার্চ শুরুর আগে ইমরান খান তার দলের সমর্থকদের উদ্দেশে বলেন, নয়া পাকিস্তান গড়ার উদ্দেশ্যেই তারা এ কর্মসূচি পালন করছেন। তিনি বলেন, আপনারা যদি সফল হন, তাহলে পাকিস্তানে ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠিত হবে। বিশ্বজুড়ে লোকজন সবুজ পাসপোর্টকে সম্মান করবে। অন্যদিকে,তাহিরুল কাদরি তার সমর্থকদের উদ্দেশে বলেন, আমরা গরিবদের দারিদ্র্য থেকে বের করে আনতে চাই। আমাদের বিপ্লব সত্যিকারের গণতান্ত্রিক ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠা করবে। দলটির সমর্থকরা মুখোশ ও হেলমেট পরে লংমার্চে অংশ নিয়েছে। পাকিস্তানের সেনাবাহিনীর সঙ্গে ঘনিষ্ঠ যোগাযোগ থাকা উভয় নেতার সমর্থকরা লাহোরে পৃথক স্থানে জড়ো হয়ে ইসলামাবাদের উদ্দেশে রওনা হয়। লংমার্চের গাড়িবহরকে রাজধানীতে পৌঁছাতে প্রায় ৩০০ কিলোমিটার পথ পাড়ি দিতে হবে। কার, ট্রাক, মোটরসাইকেল ও জিপ নিয়ে রওনা হয়েছে দুদলের সমর্থকরা। উভয় নেতার দাবি, গত বছর অনুষ্ঠিত নির্বাচনে জালিয়াতি করা হয়েছে। এ জন্য প্রধানমন্ত্রী নওয়াজ শরিফের পদত্যাগ দাবি করে মাঠে নেমেছেন। তবে আন্তর্জাতিক পর্যবেক্ষকরা নির্বাচনকে সুষ্ঠু বলেই তখন মত দিয়েছিলেন। গত মঙ্গলবার প্রধানমন্ত্রী নওয়াজ শরিফ ভোটের অনিয়ম তদন্তে বিচার বিভাগীয় কমিশন গঠনের ঘোষণা দেন। তা সত্ত্বেও নওয়াজের পদত্যাগের দাবিতে অনড় দল দুটি। তাদের এ আন্দোলন পাকিস্তানের ভঙ্গুর গণতন্ত্রকে হুমকির মুখে ফেলার আশঙ্কা করছে বিশ্লেষকরা। বর্তমান পার্লামেন্টে তৃতীয় অবস্থানে থাকা পিটিআইকে লংমার্চের অনুমতি দেওয়া হলেও পিএটির ক্ষেত্রে শর্ত জুড়ে দেওয়া হয়েছে। লাহোরের একজন পুলিশ কর্মকর্তা জানান, পিএটিকে বলা হয়েছে তারা শান্তিপূর্ণ থাকলে, কোনো অস্ত্রধারী ব্যক্তিকে সঙ্গে না নিলে এবং কোনো আইন ভঙ্গ না করলেই কেবল লংমার্চের অনুমতি দেওয়া হবে। এ দলটির কর্মসূচিকে ঘিরে সহিংসতার আশঙ্কা রয়েছে। তবে কোনো দলকেই রাজধানীতে শেষ পর্যন্ত প্রবেশ করতে দেওয়া হবে কি-না তা নিয়ে সন্দেহ রয়েছে। এদিকে লংমার্চ ঠেকাতে রাজধানীর প্রবেশপথগুলো কাঁটাতার ও বড় বড় কার্গো ফেলে অবরুদ্ধ করা হয়েছে। শহরজুড়ে ২০ হাজারের বেশি পুলিশ সদস্য মোতায়েন করা হয়েছে। রাজধানীতে ১৪৪ ধারা জারির পাশাপাশি সেনাবাহিনীকে তলব করার প্রস্তুতিও নিয়ে রেখেছে নওয়াজ শরিফ সরকার।
এএফপি, ডন নিউজ, বিবিসি অনলাইন।
– See more at: http://www.dailyinqilab.com/2014/08/16/199014.php#sthash.Kq7eVyt8.dpuf