বাকির নাম ফাঁকি: টাকার কারনে লাশ দিচ্ছে না ইউনাইটেড হাসপাতাল

United_Hospital_102032405_0চিকিৎসার সম্পূর্ণ টাকা না মেটানোয় স্বজনদের কাছে মৃতের লাশ হস্তান্তর করছে না ইউনাইটেড হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। মৃত ব্যক্তির নাম মো. আসলাম (৫৪)। গতকাল শুক্রবার দিবাগত রাত তিনটার দিকে তিনি ওই হাসপাতালে মারা যান। মৃত আসলামের চিকিৎসায় বেসরকারি ইউনাইটেড হসপিটালে মোট বিল হয়েছে ৩২ লক্ষ টাকা। লাইফ সাপোর্টে থাকা অবস্থায় শুক্রবার বিকেল ৩টায় শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন তিনি। এ পর্যন্ত বিল শোধ করা হয়েছে প্রায় ১২ লক্ষ টাকা। স্বজনেরা বাকি টাকা পরে দেওয়ার লিখিত প্রতিশ্রুতির কথা বললেও হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের একটাই কথা ‘বাকির নাম ফাঁকি’।

এদিকে মৃতদেহ দাফন করতে বাড়িতে নিয়ে যেতে চায় পরিবার। তবে স্বজনদের বুকফাটা কান্নায়ও মন গলে না ইউনাইটেড হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের।

পরিবার ও হাসপাতাল সূত্রে জানা যায়, আসলাম রাজধানীর মগবাজারের দিলু রোডের বাসিন্দা। আগে তিনি শেয়ারব্যবসার সঙ্গে সম্পৃক্ত ছিলেন। তিনি দুই সন্তানের জনক। ফুসফুসে সমস্যাজনিত কারণে গত ৩ জুলাই তাঁকে ইউনাইটেড হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। তখন থেকেই তিনি হাসপাতালের করোনারি কেয়ার ইউনিটে (সিসিইউ) চিকিৎসাধীন ছিলেন।

আসলামের মেয়ে সাদিয়া ইসলাম বলেন, বাবা মারা যাওয়ার পর হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ চিকিৎসা বাবদ আমাদের হাতে বিলের একটি কাগজ দেয়। প্রায় ৩১ লাখ টাকা বিল এসেছে। আমরা তাত্ক্ষণিকভাবে প্রায় ১২ লাখ টাকা পরিশোধ করি। বাকি প্রায় ১৯ লাখ টাকা পরে দেওয়া হবে বলে লিখিত প্রতিশ্রুতি দেওয়ার কথাও বলি। কিন্তু হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ সাফ জানিয়ে দেয়, বাকি টাকা না দেওয়া পর্যন্ত লাশ দেওয়া হবে না।

সাদিয়া ইসলাম আরও জানান, তাঁর বাবার চিকিৎসার জন্য অনেক খরচ হয়েছে। এ মুহূর্তে তাঁদের কাছে কোনো টাকা নেই। সাহায্যের জন্য পত্রিকাতেও বিজ্ঞপ্তি দিয়েছেন। বিজ্ঞপ্তিটি হাসপাতাল কর্তৃপক্ষকে দেখিয়েও মন তো গলাতে পারেননি, বরং উল্টো তাঁদের সঙ্গে কয়েকজন কর্মকর্তা দুর্ব্যবহার করেছেন বলে অভিযোগ করেন সাদিয়া।

যোগাযোগ করা হলে হাসপাতালের অর্থ বিভাগের তত্ত্বাবধায়ক কাজী মো. সেলিম বলেন, তাঁদের আগেই বলা হয়েছিল, আসলামের শারীরিক অনেক সমস্যা আছে। তাঁর দীর্ঘস্থায়ী চিকিৎসা দরকার। খরচও অনেক হবে। আসলামের স্বজনেরা এতে রাজি হওয়ায় আসলামকে ভর্তি করা হয়।

সেলিম আরও বলেন, স্বাস্থ্যমন্ত্রীর ছেলেও আমাদের ফোন করেছিলেন। আসলে আমরা বাকি টাকা না দিলে লাশ দেব না। তবে আলোচনার মাধ্যমে কিছু ডিসকাউন্ট করাতে পারব। লাশ আমাদের হিমঘরে ভালোভাবেই আছে।

এ ব্যাপারে জানতে চাইলে গুলশান থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) রফিকুল ইসলাম বলেন, এ রকম খবর পাওয়ার পর একজন পুলিশ কর্মকর্তাকে হাসপাতালে পাঠিয়েছি। আশা করি সমস্যার সমাধান হয়ে যাবে।

WP2Social Auto Publish Powered By : XYZScripts.com
Send this to a friend