আদেশ না মানায় ৩২ ছাত্রীকে পিটুনি
রাজবাড়ীর বালিয়াকান্দি উপজেলার বহরপুর ইউনিয়নের নতুনচর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ৩২ জন ছাত্রীকে বেত দিয়ে পিটিয়েছেন প্রধান শিক্ষক। বিদ্যালয় পরিষ্কার করার আদেশ অমান্য করায় গতকাল বুধবার সকাল সাড়ে ১০টার দিকে শিক্ষার্থীদের ওই শাস্তি দেওয়া হয়। আহতদের মধ্যে ১৫ জনকে বালিয়াকান্দি উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়েছে।বেশ কয়েকজন শিক্ষার্থী বলে, গতকাল বিদ্যালয়ে শারীরিক শিক্ষা পরীক্ষা ছিল। সকালে বিদ্যালয়ের পরীক্ষা দিতে আসা পঞ্চম শ্রেণির ৫৭ জন ছাত্রছাত্রীকে প্রধান শিক্ষক আক্তার জাহান রিনা বিদ্যালয় পরিষ্কার করতে বলেন। কিন্তু পরীক্ষার দিনে কাজ করলে পোশাক নষ্ট হয়ে যাবে বলে ছাত্রীরা অস্বীকৃতি জানায়। প্রধান শিক্ষক সবাইকে শ্রেণিকক্ষে বসতে বলেন। এরপর তিনি বেত দিয়ে ৩২ জন ছাত্রীকে পিটুনি দেন। এলোপাতাড়ি পিটুনিতে ছাত্রীরা অসুস্থ হয়ে পড়ে। তাদের চিৎকার শুনে স্থানীয়রা মাথায় পানি দেওয়াসহ প্রাথমিক চিকিৎসা দেয়। দুপুরে ১৫ জনকে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়।
বিদ্যালয়ের কয়েকজন অভিভাবক জানান, প্রায় তিন মাস আগে প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগ এনে উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তাসহ সংশ্লিষ্টদের কাছে লিখিত অভিযোগ করেন অভিভাবকেরা। এরপর বিষয়টি স্থানীয়ভাবে মীমাংসা করা হয়। ওই ঘটনার জের ধরে প্রধান শিক্ষক শিক্ষার্থীদের বেধড়ক পিটুনি দেন বলে তাঁরা অভিযোগ করেন।
অভিযোগ অস্বীকার করে প্রধান শিক্ষক আক্তার জাহান রিনা বলেন, ‘ছাত্রীরা আদেশ না মানায় একটি বেতের মার দিয়েছি।’
বিদ্যালয় ব্যবস্থাপনা কমিটির সভাপতি মর্জিনা পারভীন বলেন, কোমলমতি শিক্ষার্থীদের এভাবে পেটানো খুবই অমানবিক কাজ। এমন ঘটনার কথা তিনি কখনো শোনেননি, দেখেননি। এ ঘটনায় প্রধান শিক্ষকের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি হওয়া উচিত বলে তিনি মনে করেন।
উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা (ভারপ্রাপ্ত) সুশান্ত বাড়ৈ বলেন, তিনি হাসপাতালে শিশুদের চিকিৎসার বিষয়টি তদারকি করছেন। বেত্রাঘাতের ঘটনা তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের উপসহকারী স্বাস্থ্য কর্মকর্তা জুয়েল মোল্লা জানান, ১৫ শিক্ষার্থীর শরীরে আঘাতের চিহ্ন রয়েছে। তবে তারা সবাই আশঙ্কামুক্ত।
বালিয়াকান্দি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবু শামা ইকবাল হায়াত জানান, শিক্ষার্থীদের পিটুনির দেওয়ার ঘটনায় কেউ অভিযোগ দেয়নি।