ইসলামপুরে বন্যাদুর্গতদের ত্রাণের জন্য হাহাকার

download (6)ইসলামপুরে বন্যা পরিস্থিতি অবনতির দিকে যাচ্ছে। যমুনা ও ব্রহ্মপত্র নদ-নদীর পানি বৃদ্ধি অব্যাহত থাকায় এ অবস্থার সৃষ্টি হচ্ছে। পানির তীব্র স্রোতে হাড়গিলা ক্রস বাঁধ, হরিণধরা বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধ, সদ্য নির্মিত শিংভাঙ্গা-ডেবরাইপেচ বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধ ভেঙে নতুন নতুন এলাকা প্লাবিত হচ্ছে। বাড়ছে দুর্গত মানুষের সংখ্যা। এসব বন্যাদুর্গতের মধ্যে খাদ্য, বিশুদ্ধ পানি, ওষুধ ও গোখাদ্যের সঙ্কট চলছে। প্রায় এক সপ্তাহ ধরে এসব মানুষ পানিবন্দী থাকলেও সরকারি বা বেসরকারিভাবে কোনো ত্রাণসামগ্রী না পাওয়ায় ুব্ধ তারা।
উপজেলোর চিনাডুলী ইউনিয়নের পশ্চিম বামনা গ্রামের বানভাসী মানুষ মোস্তফা মিয়া আপে করে বলেন, ওপরে বৃষ্টি নিচে পানি তবু বেঁচে আছি। গত মঙ্গলবার সরেজমিন বন্যাকবলিত এলাকা পরিদর্শনে গেলে ওই গ্রামের মোস্তফা মিয়া, বুদু, মুনু, অহিবুল্লে, আ: রশিদ ও নাহিদসহ ঘরের ধরনায় মাচা করে অবস্থানরতরা বলেন, সাত দিন ধরে বন্যার পানিতে ঘরবাড়ি তলিয়ে গেছে। ঘরে খাবার নেই, রান্না করার ব্যবস্থা নেই, বিশুদ্ধ পানি নেই, ওষুধ নেই সরকারের প থেকে কোনো খোঁজও নেই, ওপরে বৃষ্টি নিচে বন্যার পানি তবুও বেঁচে আছি।
শিংভাঙ্গা পাকা রাস্তায় আশ্রিত মশর আলী, কোব্বাত ও আ: ছামাদসহ অনেকেই জানান, রাস্তায় আশ্রিত শত শত মানুষ বিশুদ্ধ পানি ও স্যানিটেশন সঙ্কটের মধ্যে রয়েছেন। এখন পর্যন্ত ওই স্থানে কোনো ত্রাণ সামগ্রী পৌঁছেনি।
চিনাডুলী ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আব্দুস ছালাম বলেন, আমার ইউনিয়নের সব গ্রাম বন্যায় আক্রান্ত হয়েছে। ওই সব গ্রামের কয়েক হাজার মানুষ পানিবন্দী হয়ে কেউ উঁচু রাস্তা, বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধ, শিাপ্রতিষ্ঠান ও ঘরের মেজে মাচা করে মানবেতর জীবনযাপন করলেও তাদের জন্য কোনো ত্রাণসামগ্রী পৌঁছতে পারিনি।  তিনি বলেন, জেলা প্রশাসক শাহাবুদিন খান বন্যাকবলিত এলাকা পরিদর্শন করে তার ইউনিয়নের ১০০ পরিবারের জন্য ২০ কেজি চালসহ কিছু জরুরি ত্রাণসামগ্রী বরাদ্দ দিয়েছেন, যা প্রয়োজনের তুলনায় অতি অল্প।
উপজেলা ত্রাণ ও প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা আলাল উদ্দিন জানান, বন্যাকবলিত কুলকান্দি, বেলগাছা, চিনাডুলী, পার্থশী, সাপধরী, নোয়ারপাড়া ও সদর ইউনিয়নের দুর্গত মানুষদের জন্য জেলা প্রশাসনের প থেকে ৬০০ প্যাকেট জরুরি ত্রাণসামগ্রীর ব্যবস্থা করা হয়েছে।
গত বুধবার জেলা প্রশাসক শাহাবুদ্দিন খান, উপজেলার চেয়ারম্যান নবী নেওয়াজ খান লোহানী বিপুল, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মাসুমুর রহমান ও বিভিন্ন দফতরের কর্মকর্তারা বেলগাছা ও সাপধরী ইউনিয়নের জন্য ৩০০ প্যাকেট ত্রাণসামগ্রী নিয়ে প্রথমে সাপধরী ইউনিয়নের সাপধরী উচ্চবিদ্যালয় মাঠে গেলে ওই স্থানে অপেমাণ সহস্রাধিক নারী-পুরুষ ত্রাণের নৌকা দেখে পানিতে ঝাঁপিয়ে পড়তে থাকেন। পরে বাধ্য হয়ে ত্রাণের নৌকা মাঝ নদীতে নোঙর করে দুই ইউনিয়নের ত্রাণ এক ইউনিয়নের বন্যাদুর্গতদের মধ্যে বিতরণ করা হয়। সহস্রাধিক মানুষের মধ্যে মাত্র ৩০০ প্যাকেট ত্রাণ বিতরণ হয়। পরে বঞ্চিত সাত শতাধিক দুর্গত মানুষ নদী সাঁতরে ত্রাণের নৌকার দিকে ছুটে আসতে থাকলে তড়িঘড়ি করে নৌকা ছেড়ে দেয়া হয়।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মাসুমুর রহমান জানান বন্যার্তদের সহায়তা করার জন্য ত্রাণ মন্ত্রণালয়ে আবেদন করা হয়েছে।

 

WP2Social Auto Publish Powered By : XYZScripts.com
Send this to a friend