গর্ভপাতের ঝুঁকি এড়াতে যে কাজগুলো করা উচিত আপনার
দুটি মানুষ ভালোবাসা বুনে একটি ঘর তৈরি করে। আর সেই ঘরে আনন্দ আর খুশি নিয়ে আসে একটি সন্তান। সন্তানের প্রতি বাবা-মায়ের অকৃত্রিম ভালোবাসা তৈরি হয়ে যায় পৃথিবীর আলো দেখার আগেই। আর তাই সন্তানকে সুস্থ ভাবে ভূমিষ্ট করার জন্য গর্ভাবস্থাতেই মায়ের যত্নের কোনো ত্রুটি থাকেনা। কিন্তু এতো কিছুর পরেও যদি হঠাৎ গর্ভপাতের মতো দূর্ঘটনা ঘটে তাহলে মায়ের মন পুরোপুরি ভেঙে যায়। সেই সঙ্গে মায়ের স্বাস্থ্যের ঝুঁকিও থাকে অনেক। তাই গর্ভপাত এড়ানোর জন্য গর্ভধারণের সময়ে প্রয়োজন বিশেষ কিছু সতর্কতার। জেনে নিন গর্ভপাতের ঝুঁকি এড়াতে যে কাজগুলো করা উচিত।
অ্যালকোহল ও নিকোটিন এড়িয়ে চলা
গর্ভাবস্থায় অ্যালকোহোল ও নিকোটিন পুরোপুরি এড়িয়ে চলা উচিত। এমনকি সন্তান গ্রহণের পরিকল্পনা শুরুর সময় থেকেই ক্ষতিকর এই দুটি নেশাদ্রব্য এড়িয়ে চলতে পারলে গর্ভপাতের ঝুঁকি কমে যায়।
প্রেসক্রিপশন ছাড়া ওষুধ না খাওয়া
গর্ভাবস্থায় কোনক্রমেই ডাক্তারের পরামর্শ ছাড়া ওষুধ খাওয়া ঠিক হবে না। মাথা ব্যাথা, পেটের সমস্যা, দূর্বলতা ইত্যাদির জন্য অনেকেই ডাক্তারের পরামর্শ ছাড়াই ওষুধ খেয়ে ফেলেন যা একেবারেই ঠিক না। ডাক্তারের প্রেসক্রিপশন ছাড়া ওষুধ খেলে গর্ভপাতের ঝুঁকি বেড়ে যেতে পারে।
ডাক্তারের পরামর্শ ছাড়া শারীরিক মিলন এড়ানো
গর্ভাবস্থায় ডাক্তারের পরামর্শ ছাড়া শারীরিক মিলন না করাই ভালো। ডাক্তার যেই সময়টাকে আপনার জন্য নিরাপদ বলবে এবং শারীরিক মিলনের অনুমতি দিবে সেই সময়টা ছাড়া অন্য সময়ে শারীরিক মিলনে গর্ভপাতের ঝুঁকি সৃষ্টি হতে পারে।
ফাস্টফুড ও কোমল পানীয় পরিহার
গর্ভকালীন সময়ে ওজন নিয়ন্ত্রণে না থাকলে গর্ভপাতের ঝুঁকি অনেক বেড়ে যায়। তাই গর্ভকালীন সময়ে অতিরিক্ত ফাস্ট ফুড, কোমল পানীয় ও অন্যান্য উচ্চ মাত্রার ক্যালরি যুক্ত খাবার পরিহার করাই অনাগত সন্তানের নিরাপত্তার জন্য ভালো।
হরমোন স্বাভাবিক আছে কিনা পরীক্ষা করা
গর্ভকালীন সময়ে শরীরে হরমোন ব্যালেন্স ঠিক থাকা উচিত। হরমোন ব্যালেন্সের গড়মিল হলে অনেক সময় গর্ভপাতের ঝুঁকি বেড়ে যায়। তাই গর্ভাবস্থায় নিয়মিত হরমোন চেকআপ করিয়ে নেয়া উচিত।
প্রচুর তাজা শাকসবজি ও মাছ খাওয়া
গর্ভাবস্থায় প্রচুর ভিটামিনের প্রয়োজন হয় শরীরে। অনেক সময় প্রয়োজনীয় ভিটামিনের অভাবেও গর্ভপাত হওয়ার ঝুঁকি থাকে। তাই এই সময়ে প্রচুর তাজা শাকসবজি ও মাছ খাওয়া উচিত।
কেমিক্যাল স্প্রে ও প্লাস্টিক এড়িয়ে চলা
কেমিক্যাল জাতীয় যে কোনো কিছুই গর্ভকালীন সময়ে পরিহার করা উচিৎ। মশার ওষুধ, এয়ার ফ্রেশনার, বডি স্প্রে ইত্যাদি একদমই ব্যবহার করা উচিত না এই সময়ে। সেই সঙ্গে অতিরিক্ত কসমেটিক্স ব্যবহার, প্লাস্টিকের বাক্সে খাবার গরম করা, প্লাস্টিকের বোতলে পানি খাওয়ার অভ্যাসও ত্যাগ করা উচিত গর্ভপাতের ঝুঁকি এড়াতে।
ক্যাফেইন পরিহার করা
গর্ভাবস্থায় ক্যাফেইন গ্রহণ নিয়ে নানান জনের নানান মত আছে। কিন্তু অধিকাংশ চিকিৎসকরাই গর্ভাবস্থায় ক্যাফেইন গ্রহণ না করার পরামর্শ দিয়ে থাকেন গর্ভবতীদেরকে। চা বা কফি পরিহার করে খুব সামান্য পরিমাণে হার্বাল চা খেতে পারেন গর্ভাবস্থায়।