ভেষজ উদ্ভিদ বিক্রি করে সংসার চালায় ঝিনাইগাতীর শেফালী
মুহাম্মদ আবু হেলাল, ঝিনাইগাতী ঃজীবন যুদ্ধে সংগ্রাম করে বেঁচে থাকার জন্য ভেষজ উদ্ভিদ চাষ ও তা বিক্রি করে জীবন ধারণের পথ বেছে নিয়েছেন শেরপুরের সীমান্তবর্তী ঝিনাইগাতী উপজেলার গারো অধ্যুষিত নকসী কালীস্থান নামক গ্রামের মৃত ইছাহাক আলীর স্ত্রী শেফালী বেগম (৩৫)। শেফালী বেগমের সাথে দেখা মেলে উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর ও উপজেলা প্রশাসনের আয়োজনে এডিপি ওয়াল্ডভিশনের সহযোগীতায় ৩ দিন ব্যাপি ফলদ বৃক্ষ মেলা-২০১৪ এর এক ষ্টলে। ১০ টি ষ্টলের মধ্যে মাত্র ১টি ভেষজ উদ্ভিদের, আর সেটা শেফালীর। শেফালীর সাথে কথা বলে জানা যায়, ভেষজ উদ্ভিদ চাষের সকল কথা। শেফালী জানায়, তার স্বামীর নিজস্ব্য কোন জায়গা জমি নেই। সরকারী ফরেষ্ট খাস জমিতে বাড়ী ঘর নির্মাণ করে স্ত্রী সন্তানদের নিয়ে খুব কষ্টে তাদের দিন কাটতো। অনেক কষ্টে দিনাতিপাতের এক পর্যায়ে ইছাহাক আলী ৮/১০ বছর পূর্বে দেশের বিভিন্ন এলাকা ও পাহাড় থেকে ভেষজ উদ্ভিদ সংগ্রহ ও বিক্রির কাজ শুরু করে। সেই সব ভেষজ উদ্ভিদ বিক্রি করে যে আয় আসে, তা দিয়ে কোন রকম ভাবে সংসার চালিয়ে আসলেও বিধাতা স্ত্রী শেফালী ও তার সন্তানদের কপালের সুখ কেড়ে নেয়। মাত্র ২/৩ দিনের অসুস্থ্যতায় গত বছর স্বামী ইছাহাক আলী মারা যায়। শাহাজামাল ও সজিব নামে দুই ছেলে স্থানীয় রাংটিয়া সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ৩য় ও ৪র্থ শ্রেনীতে পড়াশুনা করছে। সংসারে আয়ের একমাত্র পথ ওই ভেষজ উদ্ভিদ চাষ। স্বামীর রেখে যাওয়া প্রায় ৪ শতাধিক বিভিন্ন প্রজাতির ভেষজ উদ্ভিদ রয়েছে। দূর-দুরান্ত থেকে লোকজনও আসে তাদের প্রয়োজনীয় উদ্ভিদ ক্রয়ের জন্য। এ থেকে যে আয় হয় তা দিয়েই কোন মতে শেফালী ও তার দুই ছেলের খাওয়া দাওয়া ও পড়াশুনার খরচ চলে। শেফালী এ প্রতিনিধিকে জানায়, পিতৃ হারা আমার দুই ছেলেকে নিয়ে দুশ্চিন্তায় দিন কাটে , কিভাবে তাদের আমি মানুষ করব ? সরকারী ভাবে পৃষ্ট পোষকতা পেলে স্বামীর রেখে যাওয়া ভেষজ উদ্ভিদের সমাহার আরোও বাড়ানো যেত এবং সেই থেকে হয়তোবা আয়ের পরিমানটাও বাড়তো। তাই তিনি তার দুই ছেলেকে মানুষ করার জন্য সরকারের পাশাপাশি সমাজের বিত্তবাণদের নিকট সহযোগীতা চেয়েছেন, জীবন যুদ্ধে টিকে থাকার জন্য।