সীমান্তে হত্যা শূন্যে আনা হবে, বিজিবি’কে প্রশিক্ষণ দেবে বিএসএফ
বাংলাদেশ ও ভারতীয় সীমান্তে মানুষ হত্যা শূন্যের কোটায় আনা হবে বলে জানিয়েছেন বর্ডার গার্ড বাংলাদেশের (বিজিবি) মহাপরিচালক মেজর জেনারেল আজিজ আহমেদ। সীমান্ত ব্যবস্থাপনা প্রশিক্ষণ বিষয়ে ভারতের সীমান্তরক্ষী বাহিনীর (বিএসএফ)দেওয়া প্রস্তাবে রাজি হয়েছে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি)।
মঙ্গলবার রাজধানীর পিলখানায় নিজের দপ্তরে সংবাদ সম্মেলনে বিজিবির মহাপরিচালক (ডিজি) মেজর জেনারেল আজিজ আহমেদ এ কথা জানান। সম্মেলনে সদ্য সমাপ্ত বিজিবি-বিএসএফ সীমান্ত সম্মেলনের বিষয়বস্তু তুলে ধরা হয়। ২০-২৫ আগস্ট ভারতের দিল্লিতে ওই সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়।
বিজিবির মহাপরিচালক (ডিজি) মেজর জেনারেল আজিজ আহমেদ বলেন, গত ২১ আগস্ট থেকে পাঁচ দিনব্যাপী বিজিবি ও বিএসএফ’র মহাপরিচালক পর্যায়ে সম্মেলন হয়েছে। সেখানে বাংলাদেশ ও ভারতের অনেক বিষয় নিয়ে আলোচনা হয়েছে। তবে মূল এজেন্ডা ছিল সীমান্তে মানুষ হত্যা শূন্যে নিয়ে আসা।
বিজিবির ডিজি জানান, বিজিবিকে সীমান্ত ব্যবস্থাপনা নিয়ে প্রশিক্ষণ দেওয়ার প্রস্তাব করেছিল বিএসএফ। বিজিবি সেটিতে সম্মত হয়েছে। বিএসএফ চার ধরনের বিষয়ে প্রশিক্ষণ দেবে। এগুলো হলো জুনিয়র ও সিনিয়র কর্মকর্তাদের সীমান্ত ব্যবস্থাপনা প্রশিক্ষণ, বোমা শনাক্ত ও নিষ্ক্রিয়করণ প্রশিক্ষণ, শিকারি কুকুরের ব্যবস্থাপনা প্রশিক্ষণ। নভেম্বর নাগাদ প্রশিক্ষণের জন্য বিজিবির কর্মকর্তাদের ভারতে পাঠানো হতে পারে। এ ব্যাপারে বিজিবির ডিজি বলেন, আগামী ডিসেম্বরে যে সীমান্ত সম্মেলন হবে, তার আগেই প্রশিক্ষণ শুরু হবে।
সংবাদ সম্মেলনে মেজর জেনারেল আজিজ আহমেদ জানান, বিএসএফ ৭১টি বিচ্ছিন্নতাবাদী ঘাঁটির তালিকা বিজিবিকে দিয়েছে। এর আগেও তারা বিভিন্ন তালিকা দিয়েছিল। কিন্তু অনুসন্ধান করে কিছু পাওয়া যায়নি।তবে এবার দুই পক্ষ সম্মত হয়েছে, যেসব স্থান দিয়ে চোরাচালান হয়, দুই পক্ষই সেগুলো শনাক্ত করবে। একই সঙ্গে প্রতিবছর তা হালনাগাদ করা হবে।
সীমান্তে বাংলাদেশের ফেলানী হত্যাকাণ্ড প্রসঙ্গে বিএসএফ বিষয়টি পুনঃতদন্ত করার কথা বিজিবিকে জানিয়েছে।ফেলানীর বাবা ও মামাকে আবার আদালতের সামনে যেতে হবে। বিজিবির মহাপরিচালক বলেন, সীমান্তে যতগুলো অঘটন ঘটে, তার সব পশু চোরাচালানকে কেন্দ্র করে ঘটে।
বিএসএফ দ্বিপক্ষীয় সম্মেলনে বিজিবিকে জানিয়েছে, ভারত এখন সীমান্তে প্রাণঘাতী অস্ত্র ব্যবহার করে না। প্রাণঘাতী নয় এমন অস্ত্র ব্যবহার করে। এই অস্ত্র ব্যবহার করতে গিয়ে বিএসএফের সদস্যরা চোরাচালানকারীদের হাতে আহত হচ্ছে। সেই তালিকাও দেওয়া হয়েছে বলে বিজিবিপ্রধান জানান। আর বাংলাদেশের পক্ষ থেকে ফেনসিডিল তৈরির কারখানার তালিকা বিএসএফকে দেওয়া হয়েছে। জবাবে বিএসএফ বলেছে, ভারতে ফেনসিডিল ওষুধ হিসেবে ব্যবহৃত হয়। এটি চোরাচালান বন্ধে বিএসএফ পদক্ষেপ নেবে।
বিজিবি প্রধান বলেন, সীমান্তে বেশির ভাগ হত্যাকাণ্ড হয় রাতের বেলা। তাই রাতের বেলায় সীমান্তে না যেতে বিজিবির ডিজি আহ্বান জানান। তিনি বলেন, ভারতে সন্ধ্যার পর সীমান্ত এলাকায় কারফিউ থাকে।