শেরপুরে ব্রহ্মপুত্র নদের পানি বৃদ্ধিতে আরও ১০ গ্রাম প্লাবিত : বন্যার পানিতে ডুবে ৩ জনের মৃত্যু
শেরপুরের পুরাতন ব্রহ্মপুত্র নদের পানি আরও বৃদ্ধি পেযেছে। এতে নতুন করে আরও ১০টি গ্রামে প্লাবিত হয়ে পড়েছে। এনিয়ে গত এক সপ্তাহে শেরপুর সদর উপজেলায় প্লাবিত গ্রামের সংখ্যা দাড়ালো ৩০ টি। নতুন করে প্লাবিত গ্রামগুলো হচ্ছে কামারেরচর ইউনিয়নের পয়েস্তির চর, গোয়ালপাড়া, ৬ নং চর, নিচ কামারেরচর, চরমুচারিয়া ইউনিয়নের হরিণধরা, টালিয়াপাড়া এবং চরপক্ষীমারি ইউনিয়নের জঙ্গলদী, টাকিমারি, ডাকপাড়া ও খাসপাড়া।
এদিকে শেরপুরে বন্যার পানিতে ডুবে এক স্কুলছাত্রসহ তিনজনের মৃত্যু হয়েছে। নিহত সকলেরা শনিবার ও রবিবার পানিতে ডুবে মারা যান। তারা হলেন- চরশ্রীপুর উচ্চ বিধ্যালয়ের সপ্তম শ্রেণীর ছাত্র ও কান্দাপাড়া গ্রামের জানিক মিয়ার ছেলে আব্দুর রশিদ (১৪), চরমোচারিয়া ইউনিয়নের চরবাববনা গ্রামের কিতাব উদ্দিনে ছেলে সমেজ উদ্দিন (৪০), চরশেরপুর ইউনিয়নের যোগিনীমুড়া খড়িয়া গ্রামের জমসেদ আলী (৬৫)। জানা গেছে, শনিবার বিকেলে শেরপুর-জামালপুর মহাসড়কের সদর উপজেলার পোড়ার দোকান ডাইভারশনে বানের পানিতে সাঁতার কাটতে গিয়ে আব্দুর রশিদ (১৪) নামে এক স্কুলছাত্র নিখোঁজ হয়। এরপর রবিবার সকাল ১০টার দিকে ফায়ার সার্ভিসের ডুবুরিয়াসহ স্থানীয় লোকজন প্রায় ১৮ ঘন্টা চেষ্টা চালিয়ে ডাইভারশনের পাশের একটি খাঁদ থেকে নিখোঁজ রশিদের লাশ উদ্ধার করে। সে চরশ্রীপুর উচ্চ বিধ্যালয়ের সপ্তম শ্রেণীর ছাত্র এবং কান্দাপাড়া গ্রামের জানিক মিয়ার ছেলে। অপরদিকে শনিবার বিকেলে কামারের চর এলাকায় বন্যার পানিতে ডুবন্ত ক্ষেতের আউশ ধান কাটতে গিয়ে সমেজ উদ্দিন (৪০) নামে এক কৃষক পানিতে ডুবে মারা যায়। নিহত সমেজ চরমোচারিয়া ইউনিয়নের চরবাববনা গ্রামের কিতাব উদ্দিনের ছেলে বলে জানিয়েছেন ইউপি চেয়ারম্যান আমিনুল ইসলাম শিপন। এছাড়া ওই দিন সন্ধ্যায় বাড়ির পাশের বন্যার পানিতে ডুবে জমসেদ আলী (৬৫) নামে এক ব্যক্তি মারা যায়। নিহত জমসেদ আলী চরশেরপুর ইউনিয়নের যোগিনীমুড়া খড়িয়া গ্রামের বাসিন্দা। বন্যার পানিতে এসব এলাকার গ্রামীণ রাস্তাঘাট ডুবে যাওয়ায় পানিবন্দি লোকজনকে নৌকা এবং কলার ভেলায় যাতায়াত করতে দেখা গিয়েছে।
পানি উন্নয়ন বোর্ড সূত্রে জানা গেছে, রবিবার দুপুর পর্যন্ত ২৪ ঘন্টায় শেরপুর ফেরিঘাট পয়েন্টে ব্রহ্মপুত্রের পানি ১৯ সেন্টিমিটার বেড়েছে। এতে চরাঞ্চলের পাঁচটি ইউনিয়নের নতুন নতুন এলাকা প্লাবিত হওয়ায় ৩০টি গ্রাম বন্যাকবলিত হয়ে পড়েছে। ব্রহ্মপুত্রের পানি বৃদ্ধির প্রভাবে মৃগী ও দশানি নদীর পানি বাড়ায় শেরপুর পৌর এলাকার নিন্মাঞ্চল প্লাবিত হতে শুরু করেছে।
জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক সুভাষ চন্দ্র দেবনাথ জানান, বন্যায় চরাঞ্চলের প্রায় ৪শ হেক্টর জমির আমন ক্ষেত পানিতে তলিয়ে গেছে।