সেপ্টেম্বরে আসছে মানবতাবিরোধী অপরাধের আরও ৫/৬টি নতুন মামলা
চলতি সেপ্টেম্বর মাসেই একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধের সময় মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগে অভিযুক্তদের বিচারে গঠিত ট্রাইব্যুনালে আরও ৫/৬টি নতুন মামলা আসছে বলে বিকাশ দত্তের এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে দৈনিক জনকণ্ঠ।
প্রতিবেদনে জানানো হয়, চট্টগ্রামের সালাউদ্দিন কাদের চৌধুরীর ভাই গিয়াস উদ্দিন কাদের চৌধুরী ও মহেশখালীর সালামত উল্লা খানের বিরুদ্ধে তদন্ত চলছে। পাশাপাশি আরও ডজন খানেক অভিযুক্ত ব্যক্তির বিরুদ্ধে তদন্ত চলছে। ১২ মে ট্রাইব্যুনালের তদন্ত সংস্থা এ ট্রাইব্যুনালে মহেশখালীর যুদ্ধাপরাধী ছালামত উল্লাহ খানের বিরুদ্ধে একটি অভিযোগ দায়ের করেন। ওই অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে তদন্ত দল মহেশখালীতে গিয়েছিল। তদন্তে তারা পৌরসভার দক্ষিণ হিন্দু পাড়া ও ঘোনার পাড়া এলাকা পরিদর্শন করেন। বেশ কয়েকজন সাক্ষী মহেশখালী থানায় হাজির হলে তদন্ত দল তাদের সঙ্গেও কথা বলে। জানা গেছে, অভিযুক্ত সালামত উল্লাহ খান বর্তমানে কক্সবাজার চেম্বার অব কমার্স এ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির সভাপতির দায়িত্বে আছেন। তার বাড়ি বড় মহেশখালীর ফকিরাঘোনা এলাকায়।
পত্রিকাটি জানায়, ২০১০ সালের ২৫ মার্চে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল এবং ২০১২ সালের ২২ মার্চ আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-২ গঠন করার পর তদন্ত সংস্থায় এ পর্যন্ত প্রায় ৬ শতাধিক অভিযোগ পড়েছে। সেগুলো যাচাই বাছাই করেই চূড়ান্ত তালিকা তৈরি করা হবে। পাশাপাশি এই সময়ের মধ্যে দুটি ট্রাইব্যুনাল নয়টি মামলার রায় প্রদান করেছেন। এখন আরও পাঁচটি মামলা রায় ঘোষণার জন্য অপেক্ষমাণ (সিএভি) রাখা হয়েছে। অন্যদিকে আপীল বিভাগে আরও একটি মামলার নিষ্পত্তি শেষে রায় ঘোষণার জন্য অপেক্ষমাণ (সিএভি) রাখা হয়েছে। প্রসিকিউশন পক্ষ আশা করছেন শীঘ্র এ মামলাগুলোর রায় প্রদান করা হবে। বর্তমানে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১ ও ২ এ তিনটি মামলার বিচার চলছে। এর মধ্যে আজ জামায়াতের সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল এটিএম আজাহারুল ইসলামের পক্ষে যুক্তিতর্ক চলছে। অন্যদিকে জামায়াতের নায়েবে আমির আব্দুস সুবহানের বিরুদ্ধে প্রসিকিউশনের সাক্ষ্য গ্রহণ চলছে। মঙ্গলবার তার বিরুদ্ধে প্রসিকিউশনের ২৬ তম সাক্ষীর জবানবন্দীর জন্য দিন নির্ধারণ করা হয়েছে। একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধের সময় মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগে অভিযুক্ত ব্রাহ্মণবাড়িয়ার সৈয়দ মোঃ হাসান আলী ওরফে হাছেন আলীর বিরুদ্ধে আনুষ্ঠানিক অভিযোগ (ফরমাল চার্জ) দাখিল করেছেন প্রসিকিউশন। আসামি পলাতক থাকায় দুটি পত্রিকায় বিজ্ঞাপন দেয়ার নির্দেশ দেয়া হয়েছে। পাশাপাশি ১৭ সেপ্টেম্বর পরবর্তী দিন রয়েছে। একই মামলায় বাগেরহাটের কসাই সিরাজুল হক সিরাজ মাস্টার, আব্দুল লতিফ ও আকরাম হোসেন খানের বিরুদ্ধে মানবতাবিরোধী অপরাধের প্রমাণ পেয়েছে তদন্ত সংস্থা। হত্যা, গণহত্যা, ধর্ষণ, লুণ্ঠন ও ধর্মান্তরের ৮টি মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগ আনা হয়েছে তাদের বিরুদ্ধে। চূড়ান্ত প্রতিবেদন ট্রাইব্যুনালে দাখিল করা হয়েছে।
জনকণ্ঠ জানায়, ইঞ্জিনিয়ার আব্দুল জব্বারের বিরুদ্ধে সূচনা বক্তব্য শুরু হবে ৭ সেপ্টেম্বর থেকে। পটুয়াখালীর ফোরকান মল্লিক, বাগেরহাটের কসাই রাজাকার সিরাজুল হক ওরফে সিরাজ মাস্টার, খান আকরাম হোসেন, আব্দুল লতিফ তালুকদার, বিএনপি নেতা গিয়াস উদ্দিন কাদের চৌধুরী, রুস্তম আলি, আমজাদ মিনা, যশোরের মাওলানা সাখাওয়াত হোসেন, আল্ বদর বাহিনীর উদ্যোক্তা মোহাম্মদ আশরাফ হোসেন, কিশোরগঞ্জের মোঃ নাসির, আতাউর রহমান এদের বিরুদ্ধে তদন্ত চলছে। অন্যদিকে নেত্রকোনা জেলার মুসলিম লীগ নেতা আতাউর রহমান ননি, নেজামে ইসলামের ওবায়দুল হক তাহেরকে সেফ হোমে এক দিনের জন্য অধিকতর জিজ্ঞাসাবাদের অনুমতি দিয়েছে ট্রাইব্যুনাল। তদন্ত সংস্থা কর্মকর্তাবৃন্দ সুবিধা জনক সময় তাদের নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করবেন বলে জানা গেছে।
তথ্যসূত্র: দৈনিক জনকণ্ঠ