শ্রীবরদীতে অতি বর্ষন ও পাহাড়ি ঢলে দুই কোটি টাকার মাছ ভেসে গেছে
রোম্মান আরা পারভীন রুমী:গত কয়েক দিনের অতি বর্ষন ও উজান থেকে বয়ে আসা পাহাড়ি ঢলে শ্রীবরদী সীমান্তবর্তী সিংগাবরুনা ইউনিয়নে বাণিজ্যিকভাবে চাষকৃত প্রায় অর্ধশতাধিক মৎস্য খামার ও হ্যাচারী তলিয়ে গেছে। এতে প্রায় ২ কোটি টাকা ক্ষতি হয়েছে।জানা গেছে, গত কয়েক দিনের অনবরত ভারি বর্ষন ও উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলে শ্রীবরদীর সিংগাবরুনা ইউনিয়নের মুরগীচোরা গ্রামের অর্ধশতাধিক মৎস্য খামার প্লাবিত হয়েছে। বন্যার পর হঠাৎ বৃষ্টি ও পাহাড়ি ঢলে মৎস্য খামারগুলো প্লাবিত হওয়ায় নিঃস্ব হয়ে পড়েছে খামারগুলোর সাথে সংশ্লিষ্ট পরিবারগুলো। সরজমিনে ওই গ্রামে গিয়ে দেখা গেছে, চারদিকে শুধু পানি আর পানি। মৎস্য খামারগুলো আলাদাভাবে চেনার কোন উপায় নাই। এলাকাবাসীরা জানায়, পাহাড়ি এলাকা ও কুড়ি বিলের তীরে এ গ্রামটির জমিগুলোয় সবসময় পানি থাকায় থাকায় এক ফসল ছাড়া কোন ফসল হতো না। এ ফসল দিয়ে তাদের সংসার চলতো না। তাই সাত আট বছর আগে জমিগুলোতে বাণিজ্যিক ভাবে মৎস্যচাষ শুরু করে গ্রাম বাসী। লাভবান হওয়ায় একে একে সবাই এ পেশায় জড়িয়ে পড়ে। গড়ে উঠে প্রায় অর্ধশতাধিক মৎস্য খামার। ব্যাংক, এনজিও ও স্থানীয়ভাবে ঋণ দিয়ে বিনিয়োগ করে। কিন্তু হঠাৎ প্রকৃতির বিরুপতায় তাদের মাথায় হাত পড়েছে। ব্যাংক, এনজিও ও স্থানীয় ঋণের চাপ সহ পরিবার পরিজন নিয়ে কিভাবে দিনাতিপাত করবে তা নিয়ে দু‘চোখে অন্ধকার দেখছে বিনিয়োগ ও এ পেশার সাথে জড়িতরা। ক্ষতিগ্রস্ত উমর ফারুক, আঃ মজিদ, রবিজল, রাজিব, উরফ আলী, আলতাফ, শওকত আলী, আলহাজ্ব রজব আলী, ফজলুল হক নিলু, আঃ মোতালেব, গোলাম রব্বানী, আঃ হামিদ, আলা উদ্দিন, জালাল, দয়েছ আলী, শফিকুল, শহিদুল্লাহ, সাদা, আলম, মিঠুন, মোক্তার, নেহাল, জাকির হোসেন, সবুজ, মানিকা, বাচ্চু, হানিফ, কুহুল, আনোয়ার, জোব্বাত আলী, আনিছ, কছর উদ্দিন, ছামিজল হাজী, জয়নাল, ফারুক, জাকির, মোস্তাফিজুর সহ ক্ষতিগ্রস্ত মৎস্যচাষীরা জানান, ব্যাংকসহ বিভিন্ন মাধ্যম থেকে ঋণ নিয়ে এবার মৎস্য চাষ করা হয়েছিল। কিন্তু হঠাৎ করে ভারী বর্ষন ও পাহাড়ি ঢলে আমাদের সব শেষ হয়েছে। তারা জানায় প্রত্যেক খামারে ২ থেকে ৭/৮ লাখ টাকা করে বিনিয়োগ করা হয়েছিল। ঋণ পরিশোধ করতে না পারা ও পেটের তাগিদে এলাকা ছেড়ে অনেককে ঢাকায় গিয়ে শ্রমিক হিসাবে কাজ করতে হবে।সিংগাবরুনা ইউপি চেয়ারম্যান আবু রায়হান বাবুল জানান, অতিবৃষ্টি ও পাহাড়ি ঢলে অর্ধশতাধিক মৎস্য খামার তলিয়ে যাওয়ায় এর সঙ্গে জড়িতরা যে ক্ষতির সম্মুখিত হয়েছে তা সরকারি সাহায্য ছাড়া পুষিয়ে উঠা কঠিন হয়ে পড়বে। তাছাড়া এর সঙ্গে জড়িতরা সবাই ঋণ করে মৎস্যচাষ করেছিল। বিষয়টি উর্দ্ধতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে।