প্রধানমন্ত্রীর জাতিসংঘ অধিবেশনে যোগদান ফলপ্রসূ: পররাষ্ট্রমন্ত্রী
জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদের ৬৯তম অধিবেশনে প্রধানমন্ত্রীর যোগদান অত্যন্ত ফলপ্রসূ হয়েছে। এ অধিবেশনে যোগ দিয়ে প্রধানমন্ত্রী জাতিসংঘের শীর্ষ পর্যায়ের বিভিন্ন বৈঠকে অংশ নিয়েছেন। যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামাসহ বিশ্বের বিভিন্ন নেতৃবৃন্দের সঙ্গে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সাক্ষাৎ, সাইড লাইনে বৈঠকসহ ব্যস্ত সময় কাটিয়েছেন।
নিউইয়র্কে অনুষ্ঠিত জাতিসংঘের ৬৯তম সাধারণ পরিষদের অধিবেশন শেষে দেশে ফিরে এসে এক প্রেস ব্রিফিংয়ে পররাষ্ট্রমন্ত্রী আবুল হাসান মাহমুদ আলী মঙ্গলবার সকালে সাংবাদিকদের এ তথ্য জানিয়েছেন।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী জানান, জাতিসংঘ অধিবেশনের ফাঁকে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এবং ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সঙ্গে সাক্ষাৎ হয়েছে। দুই দেশের সরকার প্রধানের মধ্যে এটাই প্রথম সাক্ষাৎ। প্রথম সাক্ষাতে দুই প্রধানমন্ত্রী একটি বৈঠকও করেন। বৈঠকে দুই দেশের পারস্পরিক সম্পর্ক অব্যাহত রাখার ঘোষণা দেন উভয় দেশের প্রধানমন্ত্রী।
দুই দেশের প্রধানমন্ত্রীর বৈঠকে স্থলসীমানা চুক্তি দ্রুত বাস্তবায়ন ও তিস্তা চুক্তিসহ বাংলাদেশের সঙ্গে অমীমাংসিত সমস্যাগুলো সমাধানের আশ্বাস দিয়েছেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। এ সময় ভারতবিরোধী কোনো জঙ্গিগোষ্ঠী বাংলাদেশের ভূমি ব্যবহার করতে পারবে না বলে নরেন্দ্র মোদিকে আশ্বস্ত করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এ ছাড়া জঙ্গিবাদ নির্মূলে তারা একসঙ্গে কাজ করতে সম্মত হয়েছেন।
তিনি আরও জানান, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা নিউইয়র্কে জাতিসংঘের ৬৯তম সাধারণ পরিষদের অধিবেশনে ‘২০১৫ উত্তর উন্নয়ন এজেন্ডা কার্যকরকরণ ও বাস্তবায়ন’ শীর্ষক ভাষণ দেন। ভাষণটি তিনি বাংলায় দেন। প্রধানমন্ত্রী তার ভাষণে বিশ্ববাসীর কাছে যুদ্ধাপরাধীদের বিচারে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের সমর্থন চান। বাংলাকে জাতিসংঘের দাফতরিক ভাষা হিসেবে স্বীকৃতি দেওয়ারও আহ্বান জানান শেখ হাসিনা। ভাষণে তিনি আন্তর্জাতিক নিরাপত্তার প্রশ্নে বাংলাদেশ জিরো টলারেন্স ভূমিকার ওপর গুরুত্বারোপ করেন। বিশ্বব্যাপী যুদ্ধ ও সংঘাত বন্ধে কার্যকর পদক্ষেপ নিতে বিশ্ব নেতৃবৃন্দের প্রতি আহ্বান জানান প্রধানমন্ত্রী।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী জানান, প্রধানমন্ত্রী তার সফরে আমেরিকার ব্যবসায়ীদের সঙ্গে এক মধ্যাহ্নভোজে অংশ নেন। এ সময়ে তিনি ওই দেশের ব্যবসায়ীদের কাছে দেশটিতে বাংলাদেশের তৈরি পোশাকের শুল্কমুক্ত অবাধ প্রবেশাধিকার দাবি করেন। এ ছাড়াও প্রধানমন্ত্রী জাতিসংঘ সদর দফতরে জলবায়ু পরিবর্তন শীর্ষ সম্মেলন এর অধিবেশনে ‘ন্যাশনাল এ্যাকশন অ্যান্ড এম্বিশন অ্যানাউন্সমেন্ট’ শীর্ষক অধিবেশনে অংশ নেন।
প্রসঙ্গত, নিউইয়র্কে জাতিসংঘ সদর দফতরে জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের ৬৯তম অধিবেশনে প্রতিবারের মতো এবারও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বাংলাদেশ প্রতিনিধি দলের নেতৃত্ব দেন। অর্থমন্ত্রী, স্বাস্থ্যমন্ত্রী, প্রবাসীকল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থানমন্ত্রী, পরিবেশ ও বনমন্ত্রী, খাদ্যমন্ত্রী ও পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রীসহ ৫০ জন সরকারি প্রতিনিধি হিসেবে প্রধানমন্ত্রীর সফরসঙ্গী হিসেবে এই অধিবেশনে যোগ দেন।