লতিফ সিদ্দিকীর বক্তব্যে ফেসবুকে ঝড়
ইসলামের অন্যতম স্তম্ভ হজ ও সজীব ওয়াজেদ জয়কে নিয়ে বিরূপ মন্তব্য করেছেন ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তিমন্ত্রী লতিফ সিদ্দিকী। ওই মন্তব্যের পরে দেশের ধর্মপ্রাণ মুসলমান এবং ধর্মীয় বিভিন্ন সংগঠন ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেছে। সেই সাথে সামাজিক গণমাধ্যম ফেসবুকেও বিষয়টি আলোচিত-সমালোচিত হয়েছে।
ক্ষমতায় আসার পর থেকেই একের পর এক বিতর্ক সৃষ্টি করে ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তিমন্ত্রী লতিফ সিদ্দিকী এবার ইসলামের অন্যতম স্তম্ভ পবিত্র হজ ও তাবলিগ নিয়ে বিরূপ মন্তব্য করেছেন। অনুষ্ঠানে তিনি প্রধানমন্ত্রীপুত্র জয়কে নিয়েও বিরূপ মন্তব্য করেন। তাতেই ক্ষান্ত হননি তিনি। এক পর্যায়ে সাংবাদিকদের সাথেও অসৌজন্যমূলক আচরণ করেন তিনি।
রোববার বিকেলে নিউ ইয়র্কে জ্যাকসন হাইটসের একটি হোটেলে নিউ ইয়র্কস্থ টাঙ্গাইলবাসীদের সঙ্গে এক মতবিনিময়কালে মন্ত্রী এসব মন্তব্য করেন।
লতিফ সিদ্দিকীর বক্তব্য নিয়ে ফেসবুকের কিছু মন্তব্য খবর বাংলা২৪.কম পাঠকদের জন্য প্রকাশিত হলো।
Probhash Amin
লতিফ সিদ্দিকীকে বদ্ধ উন্মাদ বলায় কাল অনেকেই ক্ষুব্ধ হয়েছেন। কেউ কেউ বলছেন, আপনি কি ডাক্তার, যে মানুষের মানসিক সুস্থতার সার্টিফিকেট দিচ্ছেন। প্রতিক্রিয়ায় আমি একটু কনফিউজড হয়ে গিয়েছিলাম। সকালে উঠে পত্রিকা পড়ে আমার সকল দ্বিধা কেটে গেছে। প্রথম আলো এ ব্যাপারে ক্যাবিনেটে লতিফ সিদ্দিকীর সহকর্মী আসাদুজ্জামান নূরের প্রতিক্রিয়া নিয়েছে। নূর বলেছেন, ‘টেলিভিশন চ্যানেলে আমি তাঁর বক্তব্য শুনেছি। এ ধরনের বক্তব্য অত্যন্ত নিন্দনীয়। এটা কোনোভাবেই সমর্থনযোগ্য নয়। সুস্থ মস্তিষ্কের কোনো মানুষের পক্ষে এ ধরনের মন্তব্য করা সম্ভব নয়।’
যাক নিশ্চিন্ত হলাম। যার মস্তিষ্ক সুস্থ নয়, তাকে মনে হয় উন্মাদ বলাই যায়। অনেকে সাইবার আইনের কথা মনে করিয়ে আমাকে সতর্ক করেছেন। মন্ত্রী যেটা বলতে পারেন, আশা করি আমিও সেটা বলতে পারি।
Supriti Dhar
…..এইদেশে হজ নিয়ে কোনো মতামত দেয়া যাবে না, ওর উপকারিতা-অপকারিতা সম্পর্কে কেউ কিছু বলতে পারবে না। কিন্তু প্রতিমা ভাঙা যাবে অনায়াসে। শালার ধর্ম……
Akm Wahiduzzaman
তিনি বলেছেন তিনি না কী হজ্ব এবং তাবলীগ জামাতের ঘোরতর বিরোধী! তিনি জামায়াতে ইসলামীর যত বিরোধী, তার চাইতে হজ্বের এবং তাবলীগের বিরোধী! তার মতে এতে অনেক ম্যান-পাওয়ার নষ্ট হয়। হজ্বের জন্য যে ২০ লক্ষ লোক সৌদিতে গিয়েছে তাঁদের কোন কাজ নেই, তাঁরা কোন প্রোডাকশন দিচ্ছে না, এটা তার বিরাট আক্ষেপ! উনার তো অজানা থাকার কথা নয় যে, উনার দুই সহকর্মী ইনু-মেনন এবং উনার দলনেতার মতই ঐ বিশ লক্ষ মানুষ কাজ থেকে ছুটি নিয়ে হজ্বে গেছে যেমন উনি কাজ থেকে ছুটি নিয়ে নিউইয়র্কে টাঙ্গাইল সমিতির সংবর্ধনায় গেছেন।
ঐ মানুষগুলো নিজের টাকা দিয়ে হজ্বে গিয়েছেন, উনার এবং উনার কলিগ ইনু-মেননের মত সরকারী টাকায় বা চাঁদাবাজির টাকায় হজ্বে বা নিউইয়র্কে যান নাই।
উনার মত মূর্খের তো আর জানার কথা নয় যে হজ্ব সেই হযরত ইব্রাহীম আলাইহিস সালাম সময় হতেই চলে আসছে, যেমন চলে আসছে কুরবানী। নিজে ডাকাত হলে, সবাইকেই ডাকাত মনে হয় আর তাদের নিয়ে কল্প-কাহিনী তৈরী করতে ইচ্ছা জাগে।
উনি তাবলীগ জামাতেও ম্যানপাওয়ার নষ্ট হতে দেখেন, যানজট হতে দেখেন! শুধু দেখেন না যে উনার নেতা সরকারী প্রটোকলে সেই তাবলীগ জামাতের আখেরী মোনাজাতে অংশ নিতে গিয়ে যানজটকে আরো অসহনীয় করে তোলেন।
জনাব লতিফ সিদ্দিকী, চ্যারিটি বিগিনস এ্যাট হোম। আগে নিজের পরিবারে হজ্ব-তাবলীগ বিরোধী বয়ান করুন, তারপর নিজের দল ও সরকারে এই বয়ান করুন। তারপর আম বয়ান শুরু করুন। নিজের মন্ত্রীসভার সদস্যদের সরকারী খরচে হজ্বে পাঠিয়ে অন্যদের নিজ খরচে হজ্বে যাওয়ার সমালোচনা করা নেহায়েতই তৃতীয় শ্রেনীর ভণ্ডামী।
নিউজ ফিডে দেখলাম কোন কোন ইসলামী সংগঠন না কী ২৪ ঘন্টার মধ্যে উনার পদত্যাগ চেয়েছেন। ইসলাম ধর্ম নিয়ে কটুক্তি করার কারণে উনাকে পদত্যাগ করতে হবে না এটা নিশ্চিত থাকুন। নিতান্তই যদি পদত্যাগ করতে হয় তাহলে ‘…ভাই’কে নিয়ে করা মন্তব্যের কারণে। অবশ্য সেক্ষেত্রে হয়তো ইসলামের বিরুদ্ধে মন্তব্যের বিষয়টাকেই হাইলাইট করা হবে। ব্যাস! সবাই খুশ!
Maskwaith Ahsan
একজন মন্ত্রীর প্রতিটি বক্তব্যই তার দলীয় বক্তব্য নয়। ব্যক্তি মানুষ হিসেবে প্রত্যেকের ব্যক্তিগত মতামত প্রকাশের অধিকার রয়েছে। সৃষ্টিকর্তা ও ধর্ম-দর্শন সম্পর্কে প্রশ্ন উত্থাপনের বিষয়টি পবিত্র কুরানে উতসাহিত করা হয়েছে। বার বার বলা হয়েছে প্রশ্ন করো। হজ সম্পর্কে, তাবলীগ সম্পর্কে ব্যক্তি লতিফ সিদ্দিকীর ভিন্ন দৃষ্টিভঙ্গী থাকতেই পারে। সে বোঝাপড়া লতিফ সিদ্দিকী এবং সৃষ্টিকর্তার মধ্যে। আমরা তৃতীয় পক্ষ এর মধ্যে নাক গলানোর অধিকার রাখিনা। আর লতিফ সিদ্দিকীর মত একজন বর্ষীয়ান নেতা আওয়ামী লীগে ‘যুবরাজ’ সংস্কৃতির চর্চা নিরুতসাহিত করতেই পারেন। অতিউতসাহীদের সম্পর্কে প্রধানমন্ত্রীর তথ্য প্রযুক্তি উপদেষ্টা জয় নিজেই আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসার পর স্পষ্ট জানিয়ে দিয়েছেন, তার নাম ব্যবহার করে সুযোগ-সুবিধা চাইলে তা নাকচ করে দিতে। তাই লতিফ সিদ্দিকীর ব্যক্তিগত অনুভূতি প্রকাশের অধিকার খর্ব করার আমাদের অতিভক্ত ফ্যাসিবাদী চর্চা বন্ধ করা উচিত।
Shaugat Ali Sagor
১.টরন্টোর পাবলিক লাইব্রেরীগুলোতে ঢুকলেই ধর্ম নিয়ে অসংখ্য বই চোখে পড়ে।বাইবেলের নানা গল্প নানাভাবে ছোটোদের জন্য করে লিখে বই দিয়ে ভাসিয়ে দেওয়া হয়েছে লাইব্রেরীর তাকগুলো।কেবল যে খ্রীষ্টান ধর্মাবলম্বরীরাই পড়ে এই বই গুলো তা কিন্তু নয়। বহু সংস্কৃতি আর অভিবাসীর দেশ কানাডার হিন্দু-মুসলমান জাতি ধর্ম নির্বিশেষে বাচ্চাদের হাতে উঠে যায় এই বইগুলো।এইসব বাচ্চারা ধর্ম নাকি অধর্ম সেই বাছবিচার করে না এই বইগুলো নিয়ে। তারা খুজেঁ ফিকশন না নন- ফিকশন।সহজপাঠ আর সহজলভ্যতার কারনে বাইবেলের চরিত্রগুলো হয়ে ওঠে বাচ্চাদের অনেক চেনা কিছু।
২. ছোটোবেলায় মসজিদের বারান্দায় পরিচালিত মক্তবে আরবি পড়তে যাননি- এমন মুসলমান খুজেঁ পাওয়া কঠিন। গিলাপে আবৃত কোরান শরিফ বুকের কাছে চেপে ধরে মসজিদের বারান্দায় গিয়ে হুজুরের সামনে বসে সুর করে কোরান পড়া প্রত্যেকেরই বেড়ে ওঠার সঙ্গী।সেই কোরান শরিফকে পড়তে হতো- একটু উঁচু রিয়েল বা বালিশের উপর রেখে, ঘরের ভেতরও কোনো উঁচু স্থানেই রাখতে হতো কোরান শরিফ।ভয় আর অতংক তাড়া করতো কোনো কারনে হাত থেকে পড়ে গেলে কিংবা কোনো অসম্মান হলে কি ভয়াবহ শাস্তিই না পেতে হবে।
এভাবেই কোরান শরিফ নিয়ে সম্মান আর ভয়ের যুগপৎ অনুভূতি নিয়ে বেড়ে ওঠে বাংলাদেশের মুসলমান ছেলেমেয়েরা। সেই ভয় আর সম্মান কোরান শরীফের জায়গা করে দেয় উঁচু রিয়েল কিংবা ঘরের উঁচু কোনো নিরাপদ স্থানে। ছেলে মেয়েদের বয়স বাড়ে, কোরান শরীফও থেকে যায় সেই উঁচুস্থানেই। জীবনের অনুসঙ্গ আর হয়ে উঠতে পারে না। ছেলে বেলায় ধর্ম আর ধর্মগ্রন্থ সম্পর্কে সম্মানমিশ্রিত যে আতংক আর দুরত্ব তৈরি করে দেওয়া হয় বড় বেলায় প্রায়শঃই সেটা আর কাটিয়ে উঠা সম্ভব হয় না।
৩.মুসলমানের ধর্ম, ধর্মগ্রন্থ কি এতো ঠুনকো জিনিস, যে কেউ কিছু বললেই তার জাত চলে যায়?দর্শন নিয়ে ধর্মের বিধান নিয়ে যুক্তিনির্ভর কোনো বিতর্কই কি হতে পারে না? মুসলমানের ধর্ম কি এতোটাই সরলরৈখিক? তাহলে মুসলমানদের মধ্যে এতো মত আর পথের মানুষ কেন? তার মানে তো তো ধর্মের ব্যাখ্যা নিয়ে, ধর্মের বিধানের পথ নিয়ে ধর্মের অনুসারীদের মধ্যেও মতভিন্নতা আছে।তাতে কি ধর্মের অবমাননা হচ্ছে?এই যে এক পীর আরেক পীরকে মুসলমান হিসেবেই স্বীকার করতে চায় না,তাতে কি ধর্মের কিছু যায় আসে? কিংবা ধর্মপ্রেমিকদের?
৪. বাংলাদেশের বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে ইসলামের ইতিহাস ও সংস্কৃতি বলে একটা বিভাগ আছে। সেখানে নিশ্চয়ই ইসলামের ইতিহাস পড়ানো হয়। ইতিহাস পাঠ কি বিতর্কছাড়া হতে পারে? বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর ইসলামের ইতিহাস বিভাগে নিশ্চয়ই মসুলমানদের, ইসলামের ইতিহাসের বিভিন্ন পর্যায়ের ঘটনাপ্রবাহ নিয়ে বিতর্কও পড়ানো হয়।তাতে কি ইসলামের অবমাননা হয়?
৫. লতিফ সিদ্দিকী হজ্জের অর্থনীতি নিয়ে কথা বলেছেন।হজ্জটা যেমন বিশ্বাসীদের ধর্মীয় বিধান, তার সাথে অর্থনীতির সম্পর্কও তো আছে।হজ্জ মৌসুমে সৌদি অর্থনীতির যোগফলটা তো বাস্তব সত্য।বাংলাদেশ থেকে যে বিপুল পরিমান বৈদেশিক মুদ্রা চলে যায়, সেগুলোতো সত্য।তাহলে? বিশ্বাসীরা যেহেতু ধর্মীয় অনুশাসন মানবেন,তারা অর্থনীতির যোগ বিয়োগ মেনে নিয়েই ধর্মাচার করবেন।কিন্তু কেউ সেই অর্থনীতির হিসাবটা সামনে আনলেই তাতে ধর্মের অবমাননা খুঁজতে হবে কেন?
লতিফ সিদ্দিকী হজ্জের শুরুর ইতিহাসের বয়ান দিয়েছেন। সেই বয়ান ভুলও হতে পারে।সেটা ভুল কী না সেটা কেউ বলছেন না, সবাই ধর্মের অবমাননার জিগির তুলছেন।তাবলিগ জামাত নিয়ে তো খোদ বিশ্বাসী মুসলমানদের মধ্যেও ভিন্নমত আছে। লতিফ সিদ্দিকীর থাকতে পারবে না কেন? হ্যাঁ, লতিফ সিদ্দিকী তার বক্তব্য প্রকাশে কিছু কিছু ক্ষেত্রে রুচিহীনতার পরিচয় দিয়েছেন। একজন মন্ত্রীর রুচির সংকট থাকলে সেটি আতংকজনক।সেটা নিয়ে আমরা তার সমালোচনা করবো।
৬.বাংলাদেশে ধর্মটা আচারের চেয়েও রাজনীতির হাতিয়ার অনেক বেশি।শাহবাগের উত্তাল গণজোয়ারের সময় গণজাগরন মঞ্চে ধর্মের অবমাননা খুজেঁ পেয়েছিলো মাহমুদুর রহমান। দিনের পর দিন মাহমুদুর রহমানরা উসকে দিয়েছে ধর্মীয় উন্মাদনা।লতিফ বিশ্বাসকে নিয়েও সেরকম একটা পরিস্থিতি হতে যাচ্ছে- সেটা ধারনা করা যায়।
৭. কিন্তু শান্তির ধর্ম বলে আমরা যে ইসলামকে নিয়ে অহংকার করি, সেই ধর্ম কি তাহলে এতোটাই অসহিষ্ণু?এতোটাই ভঙ্গুর? কোথাকার কে কি বললো, তাতেই নড়বড়ে হয়ে যায় ভিত্তিমূল? আমি কিন্তু তা মনে করি না।বরং ধর্মকে আতংক মিশ্রিত সম্মানের মোড়কে আবদ্ধ করে ঘরের উঁচু কোনো জায়গা থেকে নামিয়ে এনে দৈনন্দিন অনুসঙ্গের সঙ্গী করার পক্ষে আমি।জীবনের ঘাতপ্রতিঘাতের সঙ্গে সঙ্গে ধর্ম, ধর্মবিশ্বাস ঘাত প্রতিঘাতের ভেতর দিয়েই খাটি সোনা হয়ে উঠুক না।ইসলামের বিধান নিয়ে ধর্মীয় নেতারা যদি বাহাস করতে পারেন, লতিফ সিদ্দিকীর বক্তব্য নিয়েও বাহাস হউক। ইসলামের ইতিহাসের, ইসলামের অর্থনীতির যুক্তি নির্ভর বিতর্ক হউক। ইসলাম নিয়ে কথা উঠলেই ‘ধরোরে মারো রে’ বলে হুংকার দিয়ে ‘ইসলামকে শান্তির ধর্ম বলা হয়’ তার থেকে ভিন্নচিত্র তুলে ধরে কি লাভ?
৮. আশ্চর্য ব্যাপার।সমাজকল্যানমন্ত্রী ‘খবিস’ বলায় যারা রাগে ক্ষোভে ফেটে গিয়েছিলেন, তাদের কেউ কেউও দেখি কি অবলীলায় ‘ভন্ড’ ‘উন্মাদ’ বলে ফতোয়া জারি করছেন।আইসিটি আইনের ৫৭ ধারার বিলোপ যারা চাচ্ছেন, তাদের কেউ কেউ আবার লতিফ সিদ্দিকীর শাস্তি চাচ্ছেন।মত প্রকাশের স্বাধীনতার জন্য যারা গলা ফাটান, তাদেরও কেউ কেই আবার লতিফ সিদ্দিকীর শাস্তি চান।সত্যিই বিচিত্র এই বাংলাদেশ!
Golam Mortoza
ব্যঙ্গ করে সাত বছরের জেল হলো তন্ময় মল্লিকের।
হজ্ব নিয়ে কটুক্তি করলেন মন্ত্রী লতিফ সিদ্দিকী। তিনি অসম্মানজনক কথা বললেন সজীব ওয়াজেদ জয়কে নিয়েও। আইসিটি আইনে ধর্মানুভুতিতে আঘাতের সর্বোচ্চ শাস্তি 14 বছরের জেল। হজ্ব নিয়ে কটুক্তি মানে পবিত্র আল কোরআনকে অসম্মান করা। লতিফ সিদ্দিকীর এই কটুক্তি ইউটিউবে দেখা যাচ্ছে।
লতিফ সিদ্দিকীর বিরুদ্ধেও কি ব্যবস্থা নেয়া হবে? নাকি যিনি এই ভিডিও আপলোড করেছেন, শাস্তি তার হবে?
Nayel Rahman
বেরাদানে ইসলাম এবং ফ্যাশনেবলি ইসলামিক টু স্যুডো-ইসলামো-ডেমোক্রেটিক বিপ্লবীরা,
মন্ত্রী মহাশয় বহাল তবিয়তে বাংলাদেশে ফিরে হেলতে দুলতে জাতীয় সংসদে গিয়ে সুললিত ভাষায় আবারও বক্তব্য রাখবেন। বলাই বাহুল্য আপনাদের আবেগের/ক্ষোভের/দুঃখের দুই পয়সাও দাম নেই। এবং আহেম এই পুঞ্জীভূত আক্রোশকে পুঁজি করে ক্ষমতায় যাওয়া যাবেনা। [প্লিজ রেফের টু হেফাজতে ইসলাম ফিয়েস্কো অফ ২০১৩]
আপনাদের কাজ-কারবার আমার কাজিনের প্রয়াত পোষা বিড়াল মিন্টি’র মতন এত্ত কিউট কেন!
Sezan Mahmud
ভারতের বিহারের মুখ্যমন্ত্রী জিতেন রাম মাঝি একজন হরিজন, বা দলিত শ্রেণীর মানুষ। তিনি যখন মধুবনি জেলার পরেমেশ্বরিস্থান মন্দির-এ একটি অনুষ্ঠানে যান তখন সবাই মুখ্যমন্ত্রীর জন্যে উদ্বেলিত থাকলেও তিনি মন্দির থেকে প্রস্থান করার সঙ্গে সঙ্গে মন্দির প্রাঙ্গণ ধুয়ে-মুছে পবিত্র করা হয়, মন্দিরের বিগ্রহদের স্নান করিয়ে শুদ্ধ করা হয়, কারণ এই অস্পৃশ্য দলিত শ্রেণীর পদার্পন হয়েছিল মন্দিরে।
আমার শহরের ফিল্ম ফেস্টিভালে যখন ‘লাশকাটা ঘর’ দেখানো হয় তখন কোলকাতার একদল বাংগালি আমাকে আক্রমণাত্নকভাবে ঘিরে ধরে প্রশ্নবিদ্ধ করেছিলেন। তাদের বক্তব্য ছিল ইন্ডিয়ায় দলিত শ্রেণী নিয়ে অস্পৃশ্যতা আর নেই; আইন করে তুলে দেয়া হয়েছে, আমার ডকুমেন্টারিতে একটু বেশি বলেছি এই জাতভেদ নিয়ে ইত্যাদি ইত্যাদি। এই ঘটনার পরে তারা কি আর বলতে পারবেন ইন্ডিয়ায় জাতভেদ নেই?
অন্যদিকে, হজ্জ এবং তবলীগ নিয়ে উচিত কথা বলাতে আওয়ামীলীগের মন্ত্রী আব্দুল লতিফ বিশ্বাসের ওপরে ঝাঁপিয়ে পড়েছে মৌলবাদীরা। ধর্ম কে রাষ্ট্র থেকে পৃথক করা যে কতটা জরুরী তা বোঝার জন্যে এই দুটি ঘটনাই যথেষ্ঠ; একথা বোঝার মতো মানুষের খুব অভাব। সেই অভাব ইন্ডিয়াতে যেমন তেমনি বাংলাদেশেও। ইউরোপ বা আমেরিকা ধর্ম কে রাষ্ট্র থেকে অনেকাংশে আলাদা করেছে বলেই এদের গণতান্ত্রিক পদ্ধতি এগিয়েছে অনেক খানি। কিন্তু ইন্ডিয়া এবং বাংলাদেশের অনেক দূর যেতে হবে এই বিষয়ে। বিশেষ করে নতুন করে ধর্মভিত্তিক দলগুলোকে ঘুঁটির মতো ব্যবহারের পশ্চিমা কৌশল এর জন্যে এরা আবার মাথা চাড়া দিয়ে উঠবে বলে মনে হয়; এভাবেই থমকে যাবে প্রাচ্যের প্রগতির চাকা আর এই সুযোগে নিজেদের অর্থনৈতিক মন্দা কাটিয়ে নেবে পশ্চিমারা। বিশ্ব রাজনীতির খেলা বড়ই নির্মম; মাঝাখানে বলির পাঠা নির্বোধ ধর্মবাদীরা !!!!
Asif Mohiuddin
সরকারে যারা থাকেন, যেমন প্রধানমন্ত্রী, মন্ত্রী, প্রতিমন্ত্রী, এমপি, এদের সকলের পবিত্র দায়িত্ব হচ্ছে মাথায় টুপি দিয়ে, হিজাব পড়ে চোখের পলক না ফেলে মিথ্যা বলা। যে যত ভাল মিথ্যা বলতে পারবে, সে তত ভাল মন্ত্রী, এমপি, সর্বোপরি রাজনীতিবিদ হিসেবে বিবেচিত হবেন। মুখ ফসকেই হোক আর যেভাবেই হোক, মন্ত্রী লতিফ সিদ্দিকী কিছু সত্য কথা বলে ফেলেছেন। এই জন্যে তাকে সাধুবাদ জানাই। তবে যেহেতু তিনি আর সরকারের পবিত্র মিথ্যাচারের দায়িত্ব পালন করতে পারছেন না, তাই হয়তো তাকে পদত্যাগ করতে বাধ্য হতে হবে। এই দেশে খুন ধর্ষণ গণহত্যার শাস্তি না হতে পারে, গণহত্যার পুরষ্কার হিসেবে মন্ত্রিত্ব পাওয়া যেতে পারে, কিন্তু আপনি যদি শুধু প্রশ্ন করেন মুহাম্মদের কতজন স্ত্রী এবং দাসী ছিল, তাহলেই কাম সাড়া! যদি শুধু প্রশ্ন করেন মুহাম্মদের পালক পুত্র জায়েদের স্ত্রী জয়নবের সাথে মুহাম্মদের সম্পর্ক কি ছিল, তাহলেই কেয়ামত হয়ে যাবে। যদি জিজ্ঞেস করেন মক্কায় কালো পাথরকে শ্রদ্ধাভরে চুম্বন করার সাথে মূর্তিপূজার পার্থক্য কী, তাহলেই সর্বনাশ!
প্রধানমন্ত্রী আল্লামা শফীর অনুরোধে বাল্যবিবাহের বয়স ১৮ থেকে ১৬ করলেন, সৌদি আরবের ফোনে সাইদীর মৃত্যুদণ্ড কমিয়ে যাবজ্জীবন করলেন, বামপন্থী মন্ত্রীদেরও হজ্বে নিয়ে ছাড়লেন। এবারে নিশ্চিতভাবেই আল্লামা শফীর নির্দেশে লতিফ সিদ্দিকীকেও মন্ত্রীসভা থেকে সরিয়ে দেবেন।
তবে মদিনাতুন্নেসা মন্ত্রীসভায় আরো গোটা বিশেক নাস্তিক থেকেই যাবে।
Hasim Ahmed
মন্ত্রী লতিফ সিদ্দিকী হজ্ব নিয়ে আপত্তিকর মন্তব্য করার পরেও যদি আওয়ামীলীগ সরকারের মন্ত্রী পরিষদে বহাল তবিয়তে থাকেন, তাহলে এই সরকারের ‘ধর্মানুভুতি’ কত ক্যারটের’ তা অনুমান করা কঠিন হবেনা নিশ্চয়ই ।
Mahmood Ali
ফেসবুকে এবং বাংলাদেশে রীতিমত হইচই পড়ে গেছে বঙ্গবীর কাদের সিদ্দিকীর বড় ভাই লতিফ সিদ্দিকীর হজ্ব নিয়ে অহেতুক কটু কথা বলার জন্যে । একজন পাবলিক ফীগারের মুখে এই ধরনের কথা অশোভনীয় । কিন্তু আমার কিছুই করার নেই । আমেরিকার মাটিতে বসে উনি বাক স্বাধীনতা চর্চা করছেন, ব্যক্তিগত ভাবে আমি আপাতত সেটা হজম করে নিচ্ছি । কিন্তু হজ্ব নিয়ে কটু কথা বলেই উনি ক্ষান্ত দেননি । প্রধানমন্ত্রীর ছেলে জয় এবং প্রবাসীদেরকে নিয়েও মন্তব্য করেছেন । অশোভন মন্তব্য ।
আপনারা নিশ্চয় জানেন যে জয় হচ্ছে প্রধানমন্ত্রী হাসিনার তথ্য ও যেগাযোগ-প্রযুক্তি বিষয়ক উপদেষ্টা । অপরদিকে, লতু সিদ্দিকীর পোর্টফোলিও হচ্ছে সে ডাক, টেলি-যোগাযোগ ও তথ্য ও যেগাযোগ-প্রযুক্তি মন্ত্রী। হু, লতু সিদ্দিকী হচ্ছে মন্ত্রী, আর সজীব ওয়াজেদ জয় হচ্ছে উপদেষ্টা । একে তো জয় বিদেশে বড় হয়েছে, বিদেশেই পড়ালেখা করেছে, তার উপর সে প্রধানমন্ত্রীর ছেলে । স্বাভাবিক ভাবেই প্রধানমন্ত্রী তথ্য মন্ত্রীর চাইতে তথ্য উপদেষ্টাকে এক্সেস দিবে বেশী এবং তার কথাও শুনবে বেশী ।
আর তাই আমার এনালাইসিসে বলে , সেদিনের সেই নিউ ইউর্কের আলোচনা সভায় লতিফ সিদ্দিকীর অনেক দিনের পুঞ্জিভূত ক্ষোভটা বের হয়ে এসেছে । তার যতো রাগ, উষ্মা সব উপদেষ্টা সাহেবের উপরই বেশী । তথ্য দিছি, আপনি যাচাই করে নিন ।
সভায় লতু সিদ্দিকী বলেছে – ” জয় ভাই কে? সে [ইন্টারনেট নেটওয়ার্ক কানেকটিভিটি নিয়ে কাজ] করার কে? জয় বাংলাদেশ সরকারের কেউ না । এখানে জয়ের কিছু করার নেই । সরকার সিদ্ধান্ত গ্রহণ করে । কার্যকর করেন মন্ত্রী । কথায় কথায় আপনারা জয়কে টানেন কেন ?” দেখলেন তো, কিভাবে জয়কে তুচ্ছতাচ্ছিল্য করলো লতু সিদ্দিকী ?
মন্ত্রী লতিফ উপদেষ্টা জয়কে হিংসা করতেই পারে । কিন্তু তাই বলে প্রধানমন্ত্রী হাসিনা কর্তৃক নিযুক্ত একজন উপদেষ্টাকে জনসম্মুখে হেয় করার স্পর্ধা মন্ত্রী দেখায় কিভাবে ? এটা কি সরাসরি প্রধানমন্ত্রীকে অবগ্গা করা না ?
মন্ত্রী কি এখানেই খান্ত দিয়েছেন ? না, দেননি । জয়ের ভক্তরা তথ্য প্রযুক্তি নিয়ে জয়ের কাজ সম্মন্ধে মন্ত্রী লৈত্তা-কে প্রশ্ন করলে উনি ক্রুদ্ধ হন – হয়ে আমেরিকায় প্রবাসীদেরকে “কামলা” বলে আখ্যায়িত করেন । লৈত্তা সিদ্দিকী প্রবাসীদের উদ্দেশ্যে বলেন, “আপনারা বিদেশে এসেছেন কামলা দিতে এবং সবসময় কামলাই দিবেন । রাজনীতি করার দরকার কি ?”
আচ্ছা বলুন তো, জয়ের স্থায়ী ঠিকানা তো আমেরিকাতে, তাই না ? জয় তো তাহলে প্রবাসী, তাই না ? জয় তো রাজনীতিও করছে, তাই না ?
—
এতো উষ্মা ক্যারে, লৈত্তা ?
Sultan Ahmad
হাসিনাকে কটূক্তি করার অপরাধে এক যুবককে ৬ বছরের কারাদন্ড দিয়েছে দেশের এক আদালত। লতিফ সদ্দিকী (মন্ত্রী হয়ে) আমাদের প্রিয় ধর্মের একটি স্তম্ভ সম্পর্কে শুধু অশোভন বক্তব্যই দেয়নি, আমাদের প্রিয় নবীজি সম্পর্কে মিথ্যা প্রচার করেছে। তাই আমি লতিফের আজীবন কারাদন্ড দাবি করছি। যদি তা না হয়, তবে কি মনে করব যে, আমাদের আইনে হাসিনার মর্যাদা আমাদের ধর্ম ও প্রিয় নবীজি হতেও বেশি (নাউজু বিল্লাহি মিন জালেক)।
Asfak Hossain Sweet
মানুষের দুনিয়ার লোভ-লালসা, অহংকার, জৈবিক মোহ সবকিছুকেই পেছনে ফেলে এক টুকরো সাদা কাফনের কাপড় পরে হজ্ব পালনের অর্থ হচ্ছে, হে আল্লাহ আমি হাজির হয়েছি, পৃথিবীর সব মোহ ত্যাগ করে একমাত্র তোমার সন্তুষ্টি ও সান্নিধ্য পাওয়ার আশায়। সৌদি আরবকে বড়লোক করবার জন্য নয়।
Anwar Mollik
মন্ত্রির কথায় একটা মূর্খটার প্রকাশ পেয়েছে ।হজের যে ইতিহাস তিনি বলেছেন ,তা ভ্রান্ত ।আমাদের নবীর জন্মের আগে থেকেইহজ্জ প্রথা চালু ছিল ।এটা তিনি সূচনা করেন নি যেমনটা মন্ত্রি বলেছেন ।যে মন্ত্রি এই কথে বলছেন ,তার নেত্রি ভোটের আগে হজ্জ করে মাথায় হেজাব পরে নির্বাচনী প্রচার শুরু করেন ।এবং বিশ্ব ইস্তেমায় আখেরি মোনাজাতে নেত্রির অংশগ্রহণের দৃশ্য টি ভিতে ফলাও করে প্রচার করা হয় ।আর ইসলামী আচার অনুষ্ঠানের কটাক্ষ করার নৈতিক অধিকার কি তাঁর আছে, যে খানে তাঁর নিজের নৈতিকতাই প্রশ্ন বিদ্ধ্য ?