লতিফ সিদ্দিকীকে দল থেকেও বহিষ্কারের সিদ্ধান্ত
ইসলামের অন্যতম স্তম্ভ হজ ও সজীব ওয়াজেদ জয়কে নিয়ে বিরূপ মন্তব্য করায় সদ্যসাবেক ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তিমন্ত্রী লতিফ সিদ্দিকীকে দল থেকেও বহিষ্কারের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
এই বহিষ্কারের খবর নিশ্চিত করেছেন সিলেটের সাবেক মেয়র বদরউদ্দিন কামরান। তিনি জানান, আবদুল লতিফ সিদ্দিকীর এমন বক্তব্যে প্রধানমন্ত্রী মর্মাহত। তাকে দলে রাখার প্রশ্নই আসে না।
এদিকে এনটিভি তাদের এক সংবাদে জানায়, যুক্তরাষ্ট্র ও যুক্তরাজ্য সফর শেষে ঢাকা ফেরার পথে বৃহস্পতিবার সকালে সিলেটে এক ঘণ্টার যাত্রাবিরতি করেন প্রধানমন্ত্রী। এসময় সেখানে অবস্থানরত নেতাকর্মীদের নিজ অসন্তুষ্টির কথা জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী। এসময় তিনি লতিফ সিদ্দিকীকে দল থেকে বহিষ্কারেরও ইঙ্গিত দেন।
প্রধানমন্ত্রীকে বহনকারী ফ্লাইট ঢাকার উদ্দেশ্যে যাত্রা করার পর আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক মিসবাহ উদ্দিন সিরাজ সাংবাদিকদের বলেন, হজ নিয়ে অবমাননাকর মন্তব্যের জন্য লন্ডনে অবস্থানকালেই লতিফ সিদ্দিকীকে মন্ত্রিসভা থেকে অব্যাহতির নির্দেশ দিয়েছেন বলে প্রধানমন্ত্রী জানিয়েছেন। এখন দল থেকেও তাকে অব্যাহতি দেয়া হবে বলে তিনি বলেছেন।
এর আগে গতকাল বুধবার বিকেলে আবদুল লতিফ সিদ্দিকীকে মন্ত্রিপরিষদ থেকে অব্যাহতি দেয়ার সিদ্ধান্ত হয়েছে বলে জানান আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহববুল আলম হানিফ জানান।
মাহববুল আলম হানিফ জানান, প্রধানমন্ত্রী, মন্ত্রিপরিষদের সদস্য এবং ক্যাবিনেট সচিবসহ অনেকেই দেশের বাইরে থাকায় তাঁর অব্যাহতি পত্র এখনো দেয়া হয়নি। তবে তাকে অব্যাহতির সিদ্ধান্ত জানিয়ে দেয়া হয়েছে। বুধবার প্রধানমন্ত্রী দেশে ফেরার পরই তাকে আনুষ্ঠানিকভাবে অব্যাহতি দেয়া হবে।
তিনি জানান, লতিফ সিদ্দিকী হজ্ব নিয়ে যে মন্তব্য করেছেন তার দায় সরকার বা দল নেয়নি। নিতে পারেনা। তাই এর দায়দায়িত্ব তাকেই নিতে হবে। তিনি মুসলমানদের ধর্মীয় অনুভূতিতে চরম আঘাত করেছেন। তাকে মন্ত্রিসভা থেকে বিদায় করার শুধু আনুষ্ঠানিকতা বাকি আছে।
প্রসঙ্গত, প্রধানমন্ত্রীর সাথে জাতিসংঘ অধিবেশনে যোগ দিতে নিউইর্য়ক সফরকালে গত ২৮ সেপ্টেম্বর একটি অনুষ্ঠানে অংশ নিয়ে ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তিমন্ত্রী লতিফ সিদ্দিকী বলেন, আমি কিন্তু হজ্ব আর তাবলিগ জামাতের ঘোরতর বিরোধী। আমি জামায়াতে ইসলামীরও বিরোধী। তবে তার চেয়েও হজ্ব ও তাবলিগ জামাতের বেশি বিরোধী। এ হজ্বে যে কত ম্যানপাওয়ার নষ্ট হয়। হজ্বের জন্য ২০ লাখ লোক আজ সৌদি আরবে গিয়েছে। এদের কোনও কাম নাই। এদের কোনও প্রডাকশন নাই। শুধু রিডাকশন দিচ্ছে।
তিনি আরো বলেন, তাবলিগ জামাত প্রতি বছর ২০ লাখ লোকের জমায়েত করে। নিজেদেরতো কোনও কাজ নেই। সারা দেশের গাড়িঘোড়া তারা বন্ধ করে দেয়।
তিনি তার বক্তৃতায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার তনয় সজীব ওয়াজেদ জয়ের বিষয়েও বিরূপ মন্তব্য করেন। তিনি প্রবাসী বাংলাদেশীদের উদ্দেশ্যে বলেন, কথায় কথায় আপনারা জয়কে টানেন কেন। ‘জয় ভাই’ কে। জয় বাংলাদেশ সরকারের কেউ নয়। তিনি কোন সিদ্ধান্ত নেয়ারও কেউ নন।
প্রবাসীদের সম্পর্কে এসময় তিনি মন্তব্য করেন, বিদেশে এসেছেন কামলা দিতে। রাজনীতি করার দরকার কী?
মঞ্চে বসা টাঙ্গাইলের মুক্তিযোদ্ধা ও যুক্তরাষ্ট্র প্রবাসী ড. নুরুন্নবীকে উদ্দেশ করে মন্ত্রী বলেন, নির্বাচনের জন্য একবার তাঁর (নুরুন্নবী) কাছে চাঁদা চেয়েছিলাম। তিনি ৫০ হাজার টাকা দিয়েছিলেন। আবদুল লতিফ সিদ্দিকী এক লাখের কম কারও কাছ থেকে চাঁদা নেয় না।