এবার ঈদযাত্রার ভোগান্তির নাম ঢাকা-টাঙ্গাইল মহাসড়ক

janjot-tangailঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে যানজট সারা বছরই থাকে, এটা জানা থাকায় প্রশাসনের বিশেষ ব্যবস্থায় ঈদযাত্রায় ওপথে সহনীয় যানজট থাকে। কিন্তু সারাবছর মোটামুটি চলমান এবং ঝামেলামুক্ত হিসেবে পরিচিত ঢাকা-টাঙ্গাইল মহাসড়ক এবার আক্রান্ত হয়েছে স্মরণকালের ভয়াবহ যানজটে। রাজধানীর মহাখালি এবং গাবতলী বাস টার্মিনাল থেকে যমুনা সেতুর স্বাভাবিক দুরত্ব প্রায় ১২৫ কিলোমিটার, যা স্বাভাবিক গতিতে সাড়ে ৩ ঘন্টা থেকে ৪ ঘন্টা লাগলেও এখন লাগছে প্রায় ১২ থেকে ১৪ ঘন্টা।

বন্যায় মহাসড়ক ক্ষতিগ্রস্ত হওয়া, রাস্তার পাশে গরু-ছাগলের হাট এবং ট্রাফিক অব্যবস্থার কারণে ওই যানজট বলে অভিযোগ করেছেন ভুক্তভোগীরা।

ঢাকা-টাঙ্গাইল মহাসড়কে গাজীপুরের চন্দ্রা ও এর আশেপাশের ৩০ কিলোমিটার এলাকাব্যাপী থেমে থেমে চলছে যানজট। এতে বিড়ম্বনায় পড়েছেন উত্তরবঙ্গের ঘরমুখো যাত্রীরা। এ ছাড়া ঢাকামুখী গরুবোঝাই শত শত ট্রাক ও সাধারণ যাত্রীরাও রয়েছেন ভোগান্তিতে।

রাত ১২টায় কল্যাণপুর থেকে রংপুরের উদ্দেশ্যে রওয়ানা দেওয়া হানিফ পরিবহনের যাত্রী মেজবাউল আনাম প্রিয়.কম’কে ফোনে জানান, সারা রাস্তাজুড়েই গাড়ি অনেকক্ষণ বন্ধ থাকার পরে একটু একটু করে চলছে। এভাবে সকাল ১১.৪৫ টার সময় বঙ্গবন্ধু যমুনা সেতু পূর্ব পর্যন্ত আসতে পেরেছে তাদের গাড়ি।

বিভিন্ন যানবাহনে থাকা অসংখ্য নারী এবং শিশুরা খাবারের অভাব এবং টয়লেট সমস্যায় বেশি ভোগান্তির শিকার হচ্ছে।

যানজট নিরসনে কালিয়াকৈর চন্দ্রা মোড়ে দায়িত্ব পালনরত গাজীপুরের সহকারী পুলিশ সুপার (এএসপি) সঞ্জিত কুমার রায় জানান, শুক্রবার ভোরে ঢাকা-টাঙ্গাইল মহাসড়কে ‍বাড়তি গাড়ির চাপ দেখা যায়। এ ছাড়া টাঙ্গাইলের কয়েকটি স্থানে গরুবাহী ট্রাক বিকল হওয়ায় এই যানজট শুরু হয়। যার প্রভাব পড়েছে গাজীপুর পর্যন্ত। শনিবার সকালেও ওই মহাসড়কে ৩০ কিলোমিটার যানজট দেখা গেছে।

একই এলাকা থেকে সালনা মহাসড়ক থানার ওসি শাহরিয়ার হাসান জানান, টাঙ্গাইলে সকাল ৬টা থেকে ৭টা পর্যন্ত কালিয়াকৈরের চন্দ্রা ও আশপাশের এলাকায় যানবাহনের লম্বা জট সৃষ্টি হয়। এতে গাড়ি থেমে থেমে চলছে। ওই মহাসড়কের গাজীপুর অংশের কড্ডা থেকে কোনাবাড়ি, সফিপুর, চন্দ্রা হয়ে গোড়াই পর্যন্ত এবং কালিয়াকৈর নবীনগর মহাসড়ক মিলিয়ে ২০ কিলোমিটার এলাকাব্যাপী এ যানজট ছড়িয়ে পড়েছে। ঘণ্টার পর ঘণ্টা গাড়িতে বসে থেকে মারাত্মক দুর্ভোগে পড়েছেন নারী ও শিশুরা। এমন যানজট পরিস্থিতিতে সড়ক ব্যবস্থাপনায় গাফিলতিকে দায়ী করছেন সাধারণ যাত্রী ও পরিবহন চালকরা।

মাওনা মহাসড়ক থানার ওসি সানোয়ার হোসেন জানান, ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কে যানবাহনের সংখ্যা হঠাৎ বেড়ে যাওয়ায় এবং ওই গাজীপুরের অংশে চার লেনের কাজ চলমান থাকায় ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কে যানবাহন ধীরগতিতে চলছে। গাজীপুর ট্রাফিক বিভাগের সহকারী পুলিশ সুপার (এএসপি) সাখাওয়াত হোসেন জানান, যানজট নিরসনে গাজীপুরে ৪২টি পয়েন্টে ৪২টি টিম কাজ করছে। তার মধ্যে ১৯টি মোটরসাইকেল ও ৬টি গাড়ির টিম কাজ করছে।

কালিয়াকৈর, মাওনা, চন্দ্রা, চান্দনা চৌরাস্তায় ১৪টি আইপি ক্যামেরা এবং টঙ্গী, ভোগড়া ও চন্দ্রা এলাকায় তিনটি পর্যবেক্ষণ টাওয়ার স্থাপন করা হয়েছে। এ ছাড়া ৮ শতাধিক পুলিশ দায়িত্ব পালন করছে। এর বাইরে আরো কয়েক শ কমিউনিটি পুলিশও কাজ করছে।

 

WP2Social Auto Publish Powered By : XYZScripts.com
Send this to a friend