মোটাতাজা ৩০টি গরুর মৃত্যু
রংপুরের বদরগঞ্জ ও তারাগঞ্জ উপজেলায় পাঁচ দিনে ৩০টি গরু মারা গেছে। কোরবানির পশুর হাট ও বাড়িতে থাকাকালে এবং হাটে নেওয়ার পথে এসব গরুর মৃত্যু হয়। দ্রুত মোটাতাজা করতে এসব গরুকে হরমোন ও স্টেরয়েডজাতীয় ইনজেকশন দেওয়া হয়েছিল বলে জানা গেছে।
প্রত্যক্ষদর্শী ও হাটের ইজারাদারেরা জানান, গত সোমবার থেকে শুক্রবার পর্যন্ত বদরগঞ্জ উপজেলার কোরবানির পশুর হাট বদরগঞ্জ হাট, লালদিঘীর হাট, নাগের হাট, শেখের হাট ও ট্যাক্সের হাটে বিক্রির জন্য আনার পর ব্যবসায়ী ও কৃষকের ১১টি গরু মারা গেছে। এ ছাড়া উপজেলার আমরুলবাড়ি গ্রামের তছির উদ্দিন, লোহানীপাড়ার আবু তালেব, বিষ্ণুপুরের আবদুল করিম, সোলায়মান আলী, রামনাথপুরের জামসেদ আলীসহ ১০ কৃষকের আরও ১০টি গরু মারা গেছে।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, সোমবার রামনাথপুরের কৃষক আবু তালেবের একটি গরু বদরগঞ্জ হাটে বিক্রির জন্য নেওয়ার পথে মারা যায়। তিনি মোটাতাজা করতে গরুটিকে ইনজেকশন দিয়েছিলেন বলে জানান।
অপরদিকে তারাগঞ্জ উপজেলার তারাগঞ্জ হাট, ইকরচালি, বালাবাড়িতে কোরবানির পশুর হাটে তিনটি এবং হাড়িয়ারকুঠি, সয়ার ও ইকরচালি এলাকায় আরও ছয়টি গরু মারা গেছে বলে স্থানীয় লোকজন জানিয়েছেন।
তারাগঞ্জ উপজেলার পরামানিকপাড়া গ্রামের রানী বেগম জানান, তিনি পাঁচ মাস আগে একটি গরু কিনে লাভের আশায় মোটাতাজা করতে ভারতীয় ওষুধ খাওয়ান। গরুটি বেশ মোটাতাজাও হয়েছিল। কিন্তু গত বৃহস্পতিবার গরুটি হঠাৎ মারা যায়।
বালাবাড়ি গ্রামের সাইদুর রহমান বলেন, ‘কোরবানির জন্য ৩৮ হাজার টাকায় শুক্রবার তারাগঞ্জ হাট থেকে মোটাতাজা দেখে একটি গরু কিনেছিলাম। বিকেলে বাড়িতে নেওয়ার পথে গরুটি মাটিতে পড়ে যায়। এর পরপরই মারা যায়।’ তারাগঞ্জ হাটের ইজারাদার সহিদার রহমান ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করেছেন।
তারাগঞ্জের প্রািণসম্পদ কার্যালয়ের ভেটেরিনারি সার্জন নুরে আলম সিদ্দিকী বলেন, ‘গরু মারা যাওয়ার খবর আমাদের জানা নেই। ঠিক কী কারণে গরুগুলো মারা গেছে তা পরীক্ষা-নিরীক্ষা না করে বলা মুশকিল। তবে হরমোন ও স্টেরয়েডজাতীয় ওষুধ প্রয়োগ করা হলে গরুর যকৃত ও কিডনি মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়। এতে দ্রুত গরুর শরীরে পানি জমে ফুলে-ফেঁপে ওঠে। ফলে তা মোটাতাজা দেখায়। অস্বাভাবিকভাবে মোটাতাজা করা গরু যেকোনো সময় মারা যেতে পারে।’