গরুর মাংস মিস করছেন নির্বাসিত লেখিকা তসলিমা নাসরিন
নির্বাসিত লেখিকা তসলিমা নাসরিন মায়ের হাতের রান্না খাবার মিস করার পরের এবার গরুর মাংস মিস করছেন বলে জানিয়েছেন। লেখিকা তার ফেসবুক স্ট্যাটাসে তার এই অনুভূতি জানিয়েছেন। স্ট্যাটাসে তিনি ভারতীয় গরুর ভূমিকা এবং দেশের কোরবানির ঈদ নিয়ে নানা কথা বলেছেন। এছাড়া তিনি আবারও তার মায়ের হাতের রান্না করা গরুর মাংসের শুটকি খাওয়া নিয়েও দিয়েছেন নানা বর্ণনা।
খবর বাংলা২৪.কম পাঠকদের জন্য তসলিমা নাসরিনের ফেসবুক স্ট্যাটাস হুবহু তুলে ধরা হল-
“ভারত থেকে গরু না গেলে বাংলাদেশের লোকেরা কী কোরবানি দিত সেটাই ভাবি। কোরবানির ঈদের নিশ্চই বারোটা বাজত. ভারতের গরু চলে যায় ভারতের বাইরে। আর ভারতে বসে গরুর মাংস জোটে না আমাদের। দিল্লিতে গরু জবাই নিষিদ্ধ, গরুর মাংসের নামে যা পাওয়া যায়, তা মোষের মাংস। মোষের দুধ, মোষের মাংস কোনটাই আমার ভালো লাগে না। ইউরোপ আমেরিকায় গেলে প্রচুর গরু খাই, দীর্ঘদিন গরু না খেতে পাওয়ার হা পিত্যেস গুলো যেন ঝরে যায়।
আজ খুব গরুর শুঁটকি খেতে ইচ্ছে করছে। মা চমৎকার রাঁধতো শুঁটকি, ঈদের কিছু মাংস দড়িতে গেঁথে রোদে দিত. অনেকদিন রোদ পেয়ে মাংসগুলো শুকিয়ে শক্ত হয়ে থাকত। পরে কোনো একদিন ওগুলোকে শিলপাটায় নরম করে পেয়াঁজ, রসুন, আদা, হলুদ, ধনে, জিরে, লঙ্কা, লবণ মিশিয়ে ভাজত। সেই গরুর শুঁটকির ঝুরি আর পাতলা চালের রুটি মা আমাদের খেতে দিত সকালে। এর চেয়ে ভালো সকালের নাস্তা, আমি সত্যি বলছি, কোনওদিন খাইনি।
কেউ যদি দেশ থেকে দিল্লি আসো আমাকে দেখতে, পাতলা চালের রুটি আর গরুর শুঁটকি নিয়ে এসো। খেতে খেতে ভেবে নেবো মা রেঁধে পাঠিয়েছে।”
উল্লেখ্য, তসলিমা নাসরিনের দেশ ত্যাগের ২০ বছর পূর্ণ হয়েছে। ১৯৯৪-র মাঝামাঝি তসলিমা নাসরিনকে বাংলাদেশ ছাড়তে হয়েছিল, তারপর সুইডেন-আমেরিকা-ফ্রান্স-কলকাতা – নানা দেশ, নানা শহর ঘুরে প্রায় বছর-তিনেক হল তিনি ভারতের দিল্লিতে বাস করছেন।