প্রবল ঘুর্ণিঝড়ে পরিণত ‘হুদহুদ’, উপকূলে ৩ নম্বর সতর্কতা
‘হুদহুদ’ ঘনীভূত হয়ে এক ভয়াবহ ঘূর্ণিঝড়ে রূপ নিয়েছে। ঘূর্ণিঝড়টি ভারতের অন্ধ্রপ্রদেশ ও উড়িষ্যা উপকূলের দিকে অগ্রসর হচ্ছে। এটি বর্তমানে অবস্থান করছে পশ্চিম মধ্যবঙ্গোপসাগর ও তৎসংলগ্ন পূর্ব মধ্যবঙ্গোপসাগর এলাকায়। এদিকে বাংলাদেশের উপকূলীয় এলাকায় ৩ নম্বর সতর্কতা সংকেত দেখাতে বলা হয়েছে।
ভারতীয় আবহাওয়া অধিদপ্তরের (আইএমডি) প্রধান এল এস রাথোরি শুক্রবার বলেছেন, হুদহুদ প্রচণ্ড সাইক্লোনিক ঝড়ে রূপ নিয়েছে। এটি আর শুধু ঝড় নয় বরং ভয়াবহ ঘূর্ণিঝড়ে রূপান্তরিত হয়েছে। হুদহুদের প্রভাবে ব্যাপক বৃষ্টিপাত ও প্রবল বাতাস প্রবাহিত হতে পারে। ঘূর্ণিঝড়টি আস্তে আস্তে অন্ধ্রপ্রদেশ ও উড়িষ্যা উপকূলের দিকে অগ্রসর হচ্ছে।
ঘূর্ণিঝড়ের প্রভাবে সাগর উত্তাল থাকায় চট্টগ্রাম, কক্সবাজার, মংলা ও পায়রা সমুদ্রবন্দরকে ৩ নম্বর স্থানীয় সর্তকতা সংকেত দেখিয়ে যেতে বলেছে আবহাওয়া অধিদপ্তর।
এছাড়াও উত্তর বঙ্গোপসাগর ও গভীর সাগরে অবস্থানরত মাছ ধরার নৌকা ও ট্রলারসমূহকে পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত উপকূলের কাছাকাছি থেকে সাবধানে চলাচল করতে বলা হয়েছে। সেইসঙ্গে তাদেরকে গভীর সাগরে বিচরণ না করার জন্য বলা হয়েছে।
আবহাওয়া অধিদপ্তর শুক্রবার সন্ধ্যা ৬টার বুলেটিনে আরও বলা হয়, ঘূর্ণিঝড়টি শুক্রবার সন্ধ্যা ৬টায় চট্টগ্রাম সমুদ্রবন্দর থেকে ৯৭৫ কি.মি. দক্ষিণ-পশ্চিমে, কক্সবাজার সমুদ্রবন্দর থেকে ৯১০ কি. মি. দক্ষিণপশ্চিমে, মংলা সমুদ্রবন্দর থেকে ৮৮০ কি. মি. দক্ষিণ-দক্ষিণপশ্চিমে এবং পায়রা সমুদ্র বন্দর থেকে ৮৭০ কি. মি. দক্ষিণ-দক্ষিণপশ্চিমে অবস্থান করছিল।
ঘূর্ণিঝড় কেন্দ্রের ৭৪ কি. মি. এর মধ্যে বাতাসের একটানা সর্বোচ্চ গতিবেগ ঘণ্টায় ১২০ কি. মি.। যা দমকা অথবা ঝড়ো হাওয়ার আকারে ১৪০ কি. মি. পর্যন্ত বৃদ্ধি পাচ্ছে। ঘূর্ণিঝড়টি ক্যাটাগরি-৫ ঘূর্ণিঝড়ে রূপান্তরিত হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে বলে জানিয়েছে ভারতীয় আবহাওয়া অধিদফতর। আঘাতের সময় বাতাসের গতিবেগ হবে ঘণ্টায় ১৪০ কিলোমিটার।
এদিকে ঘূর্ণিঝড় মোকাবেলায় অন্ধ্রপ্রদেশ ও উড়িষ্যায় ৩৫টি মোবাইল টিম নিয়োগ করেছে দেশটির দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা কর্তৃপক্ষ।
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী রাজনাথ সিং উড়িষ্যা, তেলেঙ্গানা ও অন্ধ্রপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রীদের সঙ্গে ঘূর্ণিঝড়ের প্রস্তুতির বিষয়ে আলোচনা করেছেন।
এশিয়া-প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলের সাগর তীরের আট দেশের আবহাওয়া দপ্তর ও বিশ্ব আবহাওয়া সংস্থার দায়িত্বপ্রাপ্ত প্যানেলে ‘হুদ হুদ’ নামটি প্রস্তাব করে ওমান। হুদহুদ আরবের একটি পাখি, যার মাধ্যমে নবী সুলাইমান (আ.) সেবার রানী বিলকিসকে পত্র পাঠাতেন।
হুদহুদের প্রভাবে বিশাখাপত্তম, ভুবনেশ্বর, নাগপুরে প্রবল বর্ষণের খবর জানিয়েছে ভারতের আবহাওয়া অধিদপ্তর।