ব্রাজিলের নতুন তারকারক চিনে নিন
বাবা ফুটবলপাগল হলে ছেলের নাম কোনো ফুটবলারের নামে রাখাটাই স্বাভাবিক। আর বাবা যদি হন ব্রাজিলের, তাহলে তো কথাই নেই। ব্রাজিলে তো আর ফুটবল হিরোর কমতি নেই। মজার ব্যাপার হলো, পিতা তাঁর পুত্রের নাম ফুটবলারের নামে রাখলেন ঠিকই, কিন্তু ব্রাজিলের কারও নামে নয়, ইতালির এক ফুটবলারের নামে! ১৯৮২ বিশ্বকাপে খেলেই অনেকের মন জিতে নেওয়া মার্কো তারদেল্লির নামে নাম রাখা ডিয়েগো তারদেল্লিও আজ মন জিতে নিলেন ব্রাজিল সমর্থকদের। তাঁর জোড়া গোলেই আর্জেন্টিনাকে …
মার্কো তারদেল্লি বিশ্বকাপ একটাই খেলেছেন। তাতেই তাঁকে মনে রেখেছে মানুষ, ফাইনালে জার্মানির বিপক্ষে গোল করার পর তাঁর সেই বিখ্যাত উদযাপনের জন্য। গোলের পরই দুহাত মুঠোবন্দী করে ‘গল’ ‘গল’ চিৎকার করতে করতে ছুটে গিয়েছিলেন ইতালিয়ান বেঞ্চে। সজোরে ঝাঁকাচ্ছিলেন মাথা। তাঁর এই উদযাপন ‘তারদেল্লি ক্রাই’ নামে বিখ্যাত হয়ে আছে।
ডিয়েগো তারদেল্লিও এমন স্মরণীয় কিছু ব্রাজিলকে এনে দিতে পারবেন কি না, সে তো বলে দেবে সময়ই। তবে এই ‘সময়’টাই তাঁর বড় শত্রু। ব্রাজিলের হয়ে আজ মাত্র সপ্তম ম্যাচ খেলছেন। অথচ বয়স হয়ে গেছে ২৯।
আসলে তারদেল্লির প্রতিভা যেন কার্লোস দুঙ্গা ছাড়া আর কোনো কোচের নজরে পড়ে না। দুঙ্গাই প্রথম দফায় কোচ থাকার সময় দলে ডেকেছিলেন। দুঙ্গা চলে যাওয়ার পর যেন বাকিরাও ভুলে যান তাঁকে। ২০১৩ সালে অ্যাটলেটিকো মিনেইরোর হয়ে দুর্দান্ত ফর্মে থাকলেও লুইস ফেলিপে স্কলারির মন ভেজাতে পারেননি।
সাও পাওলোর যুবদলের আবিষ্কার এই স্ট্রাইকার ক্যারিয়ারের সেরা সময় মিনেইরোর হয়েই কাটিয়েছেন। ২০০৯ সালে এই ক্লাবের জার্সি গায়ে ৫৬ ম্যাচে ৪২ গোলও করেছিলেন। তিন মৌসুম এই ক্লাবে কাটিয়ে ১১৪ ম্যাচে লিগে ৭৩ গোল করেছিলেন। মিনেইরো ছাড়তেই আবার হারিয়ে ফেলেন ফর্ম। তাঁর সেরাটা মিনেইরোই বের করে আনে বুঝতে পেরে গত বছর আবারও ক্লাবটিতে ফিরেছেন।
স্প্যানিশ ক্লাব রিয়াল বেতিস আর ডাচ ক্লাব পিএসভিতে ধারে খেলেছেন কিছুদিন। যদিও ইউরোপের ফুটবলে জায়গা করে নিতে পারেননি। অবশ্য টাকার বস্তা নিয়ে হুট করে ইউরোপের ফুটবলে হাজির হওয়া আনঝি মাখাচকালা তাঁকে ৭৫ লাখ ডলারে কিনেছিল বলে গুঞ্জন ছিল।
‘লাকি সেভেন’! সপ্তম ম্যাচে হলুদ জার্সি গায়ে গোল পেলেন। সেটিও জোড়া গোল। মেসি-নেইমার-আগুয়েরো-ডি মারিয়াদের মতো তারকার মিছিলে সবাইকে নিষ্প্রভ করে দিয়ে তিনিই আজ নায়ক। ম্যাচ শেষেও ক্যামেরা ধরে রাখল তাঁকেই। তারদেল্লি নিশ্চয়ই চাইবেন এভাবে আলোর মঞ্চে নিজেকে বারবার আলোকিত করতে!