আমি কখনই তাজউদ্দীন আহমদ হবো না: আবদুল লতিফ সিদ্দিকী
পবিত্র হজ ও তাবলীগ জামায়াত সম্পর্কে আপত্তিকর মন্তব্য করে বিতর্কে জড়িয়ে পড়া বর্তমান সরকারের মন্ত্রিসভা থেকে সদ্য অপসারিত আবদুল লতিফ সিদ্দিকী বলেছেন, আমি কখনই তাজউদ্দীন আহমদ হবো না।
দেশে ফেরার লক্ষ্যে গতকাল রোববার কলকাতায় আসা সাবেক এই ডাক টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রী টেলিফোনে দৈনিক সমকালকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে এ মন্তব্য করেন।
প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে কথা হয়েছে কি না- এমন এক প্রশ্নের জবাবে লতিফ সিদ্দিকী বলেন, কোন মুখে তার সঙ্গে কথা বলব? আমি তাকে কম কষ্ট দিয়েছি? তার সঙ্গে কথা বলতে আমার লজ্জা লাগে না? তবে আমি কখনই তাজউদ্দীন আহমদ হবো না। শেখ হাসিনার সঙ্গে থাকব। প্রয়োজনে তার জন্য জীবন দেব। জীবনে-মরণে শেখ হাসিনার সঙ্গে থাকব। তিনি যখন ডাকবেন, তখনই তার পেছনে থাকব। তাকে অনুসরণ করব। আমাকে কিনতে হবে না।
প্রধানমন্ত্রীর বিষয়ে এমন মন্তব্য করলেও নিজ বক্তব্যের জন্য মোটেও অনুতপ্ত নন আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলির এই সদস্য। এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, আমি আমার জায়গা থেকে সরছি না। আমি আমার বিশ্বাসে অটল রয়েছি। আগামীতে আরও শক্ত কথা বলব। এ জন্য যে শাস্তিই দেওয়া হোক না কেন, আমি তা মাথা পেতে নেব। আমার রাষ্ট্রপতি কিংবা প্রধানমন্ত্রী হওয়ার সুযোগ নেই। তবে সক্রেটিস হওয়ার সুযোগ আছে।
তার বক্তব্যের পুরো অংশ প্রচার না করে খণ্ডিত অংশ প্রচার করা হয়েছে দাবি করে লতিফ সিদ্দিকী বলেন, দেশে কি একজন লোকও নেই যে তিনি প্রশ্ন করে জানতে চাইবেন, আমার বক্তব্যের খণ্ডিত অংশ কেন প্রকাশ করা হলো? কেন পুরো বক্তব্য প্রকাশ করা হলো না? তা ছাড়া ওই অনুষ্ঠানে আমি রাজনৈতিক বক্তৃতা দিইনি। আর সেখানে যে এত কালো বিড়াল আছে, তা কি আমি জানতাম। ওটা ছিল একটা সামাজিক অনুষ্ঠান। সেখানে আমি গল্প করেছি। আমি তো কাউকে আঘাত দিয়ে কোনো কথা বলিনি।
এদিকে গত ১১ অক্টোবর বড়ভাইয়ের হয়ে ছোটভাই বঙ্গবীর কাদের সিদ্দিকী বীর উত্তম সংবাদ সম্মেলন করে ক্ষমা চাইলেও তাকে ধর্মব্যবসায়ী বলে সমকালকে দেওয়া ওই সাক্ষাৎকারে উল্লেখ করেছেন লতিফ সিদ্দিকী। তিনি বলেন, আমি ধর্ম ব্যবসায়ী কাদের সিদ্দিকীর মতো ভণ্ড নই। আমি ব্যক্তিগত আলাপচারিতায় ব্যক্তিগত মতামত দিয়ে অন্যায় কিংবা অপরাধ করিনি। এ জন্য আমার কোনো দুঃখ কিংবা অনুতাপ নেই।
তিনি বলেন, কাদের সিদ্দিকী আমার পরিবারের কেউ নন। সুতরাং তার মতামত আমার মতামত নয়। আমি ইহজাগতিক অসাম্প্রদায়িক মানুষ। আমার নেতা ও দল আমার বিরুদ্ধে যে কোনো সিদ্ধান্ত নিতেই পারে। কিন্তু ভ্রান্ত পথের পথিক কাদের সিদ্দিকী আমাকে নিয়ে বলার কে?
কবে দেশে ফিরছেন- এমন এক প্রশ্নের জবাবে সাবেক এই মন্ত্রী বলেন, আগামী দু-একদিনের মধ্যেই দেশে ফেরার প্রস্তুতি রয়েছে। পরিণতি যা-ই হোক না কেন, সবুজ সংকেত পেলে আমি দেশে ফিরবই।
তথ্যসূত্র: দৈনিক সমকাল