আজ ‘প্রতিবাদী রোমান্টিক’ কবি রুদ্র মুহম্মদ শহিদুল্লাহর ৫৮তম জন্মবার্ষিকী
আজ অকাল প্রয়াত ‘প্রতিবাদী রোমান্টিক’ কবি ও গীতিকার রুদ্র মুহম্মদ শহিদুল্লাহর ৫৮তম জন্মবার্ষিকী। ১৯৫৬ সালের এই দিনে তিনি পিতার কর্মস্থল বরিশাল জেলায় জন্মগ্রহণ করেন।
কবি রুদ্র মুহম্মদ শহিদুল্লাহর মূল বাড়ি বাগেরহাট জেলার মংলা উপজেলার মিঠেখালি গ্রামে। ঢাকা ওয়েস্ট এ্যান্ড হাইস্কুল থেকে তিনি ১৯৭৪ সালে এসএসসি এবং ঢাকা কলেজ থেকে ১৯৭৬ সালে এইচএসসি পাস করেন। এরপর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বাংলা বিভাগে ১৯৮০ সালে সম্মানসহ বিএ এবং ১৯৮৩ সালে এমএ ডিগ্রি লাভ করেন।
রুদ্র মুহম্মদ শহিদুল্লাহ ছিলেন সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোট ও জাতীয় কবিতা পরিষদ গঠনের অন্যতম উদ্যোক্তা। জাতীয় কবিতা পরিষদের প্রতিষ্ঠাতা যুগ্ম সম্পাদক। ১৯৭৫ সালের পরের সবকটি সরকারবিরোধী ও স্বৈরাচারবিরোধী সংগ্রামে সক্রিয়ভাবে অংশগ্রহণ করেন।
বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধ, দেশাত্মবোধ, গণআন্দোলন, ধর্মনিরপেক্ষতা, ও অসাম্প্রদায়িকতা তাঁর কবিতায় বলিষ্ঠভাবে উপস্থিত। এছাড়া স্বৈরতন্ত্র ও ধর্মের ধ্বজাধারীদের বিরুদ্ধে তাঁর কণ্ঠ ছিল উচ্চকিত। কবিকন্ঠে কবিতা পাঠে যে ক’জন কবি কবিতাকে শ্রোতাপ্রিয় করে তোলেন, তিনি তাঁদের অন্যতম। তারুণ্য ও সংগ্রামের দীপ্ত প্রতীক কবি রুদ্র মুহম্মদ শহিদুল্লাহ সাতটি কাব্যগ্রন্থ ছাড়াও গল্প, কাব্যনাট্য এবং ভালো আছি ভালো থেকো সহ অর্ধশতাধিক গান রচনা ও সুরারোপ করেছেন।
১৯৮১ সালের ২৯ জানুয়ারি ভালোবেসে বিয়ে করেন বহুল আলোচিত নারীবাদী লেখিকা তসলিমা নাসরিনকে। কিন্তু খুব বেশিদিন এই দম্পতির জীবনে সুখ সহ্য হয়নি। ১৯৮৮ সালে তাদের দাম্পত্য জীবনের অবসান ঘটে।
১৯৯১ সালের ২১ জুন কবি রুদ্র মুহম্মদ শহিদুল্লাহ মাত্র ৩৪ বছর বয়সে পৃথিবীর মায়া কাটিয়ে পরপারে পাড়ি জমান।
রুদ্র মুহম্মদ শহিদুল্লাহ রচিত কাব্যগ্রন্থগুলো হল- উপদ্রুত উপকূল (১৯৭৯), ফিরে পাই স্বর্ণগ্রাম (১৯৮২), মানুষের মানচিত্র (১৯৮৪), ছোবল (১৯৮৬), গল্প (১৯৮৭), দিয়েছিলে সকল আকাশ (১৯৮৮), মৌলিক মুখোশ (১৯৯০)।
তাঁর রচিত ছোটগল্প- সোনালি শিশির। এছাড়া নাট্যকাব্য- বিষ বিরিক্ষের বীজ। ১৯৮০ সালে কবি রুদ্র মুহম্মদ শহিদুল্লাহ ‘মুনীর চৌধুরী স্মৃতি পুরস্কার’-এ ভূষিত হন।