যারা এ্যানেসথেশিয়ার ওপর ডিগ্রি নেবেন তাদের প্রণোদনা দেওয়া হবে : স্বাস্থ্যমন্ত্রী
স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রী মোহাম্মদ নাসিম বলেছেন, যারা অ্যানেসথেশিয়ার ওপর ডিগ্রি নেবেন তাদের প্রণোদনা দেওয়া হবে।
তিনি বলেন, দেশের অনেক জায়গায় আধুনিক হাসপাতাল গড়ে তোলা হয়েছে। সেখানে ডাক্তার নার্স সবই আছে কিন্তু এ্যানেস্থেশিস্টের অভাবে সেখানে অস্ত্রোপচার সম্ভব হচ্ছে না। তাই যারা এ বিষয়ে ট্রেনিং নিবেন তাদের বিশেষ সুযোগ সুবিধা দেওয়া হবে।
স্বাস্থ্যমন্ত্রী আজ বৃহষ্পতিবার ১৬৮তম এ্যানেসথেসিয়া দিবস উপলক্ষে আয়োজিত আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে এ কথা বলেন। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ের শহীদ ডা. মিলন হলে বাংলাদেশ সোসাইটি অব এ্যানেসথেসিওলজিষ্টস এ আলোচনা সভার আয়োজন করে।
বাংলাদেশ সোসাইটি অব এ্যানেসথেসিওলজিষ্টস অধ্যাপক এ বি এম মাকসুদুল আলমের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন বিএসএমএমইউয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ডা. প্রাণগোপাল দত্ত, স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. দীন মোহাম্মদ নূরুল হক, বিএসএমএমইউ’র বেসিক মেডিকেল সায়েন্স বিভাগের ডীন অধ্যাপক ডা. এম ইকবাল আর্সালান, সার্জারি বিভাগের ডীন অধ্যাপক ডা. কণককান্তি বড়ুয়া প্রমুখ।
দরিদ্র জনগোষ্ঠীর মাঝে সঠিক ভাবে স্বাস্থ্য সেবা পৌঁছে দেবার লক্ষ্যে সকল ডাক্তারদের সহযোগিতা করার আহবান জানিয়েন মোহাম্মদ নাসিম বলেন, সবাই আমাকে সহযোগিতা করুন যাতে করে আমরা সারা দেশের মানুষের মাঝে সঠিক ভাবে স্বাস্থ্য সেবা পৌছে দিতে পারি।
সকল ডাক্তারদের নিয়ে এক সাথে কাজ করার প্রতিশ্রুতি ব্যক্ত করে তিনি বলেন, আমি একজন রাজনীতিবিদ, রাজনীতিবিদ হিসাবে আমি একটা আদর্শ বিশ্বাস করি। কিন্তু স্বাস্থ্যমন্ত্রী হিসাবে আমার কোন দল নেই। যারা ভালো ডাক্তার আমি তাদের সবাইকে একসাথে নিয়ে কাজ করতে চাই। তিনি আশা প্রকাশ করেন সঠিক ভাবে সবার মাঝে আমি যাতে স্বাস্থ্য সেবা পৌঁছে দিতে পারি তার জন্য সবাই সহযোগিতা করবেন।
তিনি বলেন, দুর্নীতিবাজ, ভেজাল ওষুধ উৎপাদনকারী, ভুয়া ক্লিনিক স্থাপনকারী এবং হরতাল ডেকে যারা রোগীদের ভোগান্তি বাড়ায়, বাসে আগুন দিয়ে যারা মানুষ হত্যা করে তাদের চিরদিনের জন্য ঘুম পাড়িয়ে দিতে চাই।
জঙ্গিদমনে বাংলাদেশ বিশ্বের কাছে রোল মডেল উল্লেখ করে মোহাম্মদ নাসিম বলেন, ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিও এই কথা স্বীকার করেছেন। তিনি বলেছেন, জঙ্গি দমন করতে হলে বাংলাদেশকে অনুসরন করতে হবে।
ইবোলা নিয়ে বাংলাদেশ সতর্ক অবস্থানে রয়েছে জানিয়ে স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণমন্ত্রী বলেন, স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে সম্পূর্ণ সতর্কতা জারি করা হয়েছে। তবে ইবোলা নিয়ে আতঙ্কিত হওয়ার কিছু নেই। উন্নত দেশে ইবোলার সংক্রমণ ঘটলেও বাংলাদেশের চিকিৎসকেরা ইবোলা সংক্রমণ রোধে সফল হবেন। বিমান বন্দরে বিদেশ থেকে আগত সকল যাত্রীর জ্বর পরীক্ষার জন্য শিগ্রই থার্মস্ক্যানার আনা হবে বলেও জানান তিনি।
অনুষ্ঠানের শুরুতে মোহাম্মদ নাসিম কেক কেটে ১৬৮তম এ্যানেসথেসিয়া দিবসের শুভ উদ্বোধন করেন।
এর আগে সকালে দিবসটি উপলক্ষে বাংলাদেশ সোসাইটি অব এ্যানেসথেসিওলজিষ্টস এর পক্ষ থেকে একটি র্যালী বের করা হয়। র্যালীটি কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার থেকে শুরু হয়ে ঢাকা বিশ্বিবিদ্যালয়ের বিভিন্ন সড়ক প্রদক্ষিণ শেষে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ে এসে শেষ হয়।
উপচার্য অধ্যাপক ডা. প্রাণ গোপাল দত্ত পায়রা ও বেলুন উড়িয়ে এ বনার্ঢ্য র্যালীর উদ্বোধন করেন।
এর আগে স্বাস্থ্যমন্ত্রী মোহাম্মদ নাসিম মহাখালির আইসিডিডিআরবি মিলনায়তনে ‘দি লেপ্রসি মিশন ইন্টারন্যাশনাল’ কর্তৃক আয়োজিত আন্তর্জাতিক কুষ্ঠ রোগ গবেষণা বিষয়ক কর্মশালার উদ্বোধন করেন।
কুষ্ঠ রোগ নিরাময়ে সরকারের পক্ষ থেকে সব ধরনের সহযোগিতা প্রদানের আশ্বাস দিয়ে মোহাম্মদ নাসিম বলেন, কুষ্ঠ রোগকে পুরো পুরি ভাবে জয় করতে হলে জনগণের মাঝে সচেতনা সৃষ্টি করতে হবে।
সেমিনারে সমাজ কল্যাণ প্রতিমন্ত্রী প্রমাদ মানকিন উপস্থিত ছিলেন।